ছোটবেলায় অন্য শিশুদের মতোই আঁকিবুঁকিতে মেতে থাকত অভিষেক। কিন্তু আর-পাঁচটা শিশুর মতো তার আঁকার খাতায় ফুল-পাতা, পাহাড়, নদীর দেখা মিলত না। জলের পাম্প, লিফ্ট, আবর্জনা এবং রিকশার ছবি বারবার আঁকত অভিষেক। বাড়ির লোক প্রথমটা বুঝতে পারেননি এমন জিনিসে তার এত আগ্রহ কেন। এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সাহায্যে তাঁরা জানতে পারেন, অভিষেকের ‘অটিজম স্পেকট্রাম সিনড্রোম’ রয়েছে। রিকশায় উঠতে ভয় পায় সে, লিফটে উঠলে মনে হয় দম বন্ধ হয়ে আসছে, পাম্পের আওয়াজ তার সংবেদনশীল কানে নিতান্তই অসহ্য ঠেকে। অটিজম থাকায় সরাসরি নিজের অসুবিধার কথাটুকু প্রকাশ করতে পারেনি সে। শিশুমনের বিপন্নতা ঠাঁই পেয়েছিল আঁকার খাতায়।
এখন বছর পঁচিশের যুবক অভিষেক। তার মা সোমা সরকার জানান, ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে কাজ করার পাশাপাশি সপ্তাহে এক দিন তাদের ক্যান্টিনেও কাজ করে সে। আঁকার মাধ্যমেই অভিষেক পেরিয়ে এসেছে অনেক বাধা। তার পৃথিবীটা ঠিক কেমন, তা অন্যদের বোঝাতে সহায় হয়েছে সেই রং-পেনসিল, টুকরো টুকরো কাগজে তৈরি কোলাজ।
অভিষেকের মতোই ‘অটিজম স্পেকট্রাম সিনড্রোম’ রয়েছে এমন ছ’জন শিল্পীর সৃষ্টি নিয়ে আজ, সোমবার, বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবসে এক প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে অটিজম সোসাইটি ওয়েস্ট বেঙ্গল। ‘অ-সাধারণ’ শীর্ষক এই প্রদর্শনী চলবে চার তারিখ পর্যন্ত।