Advertisement
১১ মে ২০২৪

এত অপরাধের কিনারা হয়নি কেন, ক্ষুব্ধ সিপি

কসবায় ইমারতি দ্রব্য সরবরাহকারী দু’টি সিন্ডিকেটের মারামারিতে খুন হয়েছিলেন এক যুবক। ২৩ মে রাতের ঘটনা। ওই ঘটনার মূল অভিযুক্ত, এলাকার দাগি দুষ্কৃতী মুন্না পাণ্ডেকে আজ পর্যন্ত গ্রেফতার করা যায়নি কেন, সে প্রশ্ন উঠেছিল পুলিশের অন্দরেই। আর এ বার খোদ পুলিশ কমিশনার সুরজিৎ করপুরকায়স্থ একই প্রশ্ন তুললেন বলে লালবাজার সূত্রের খবর।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০১৪ ০১:৩৬
Share: Save:

কসবায় ইমারতি দ্রব্য সরবরাহকারী দু’টি সিন্ডিকেটের মারামারিতে খুন হয়েছিলেন এক যুবক। ২৩ মে রাতের ঘটনা। ওই ঘটনার মূল অভিযুক্ত, এলাকার দাগি দুষ্কৃতী মুন্না পাণ্ডেকে আজ পর্যন্ত গ্রেফতার করা যায়নি কেন, সে প্রশ্ন উঠেছিল পুলিশের অন্দরেই। আর এ বার খোদ পুলিশ কমিশনার সুরজিৎ করপুরকায়স্থ একই প্রশ্ন তুললেন বলে লালবাজার সূত্রের খবর।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার সিপি-র ক্রাইম কনফারেন্সে সুরজিৎবাবু নিজেই ওই প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন। এই ব্যাপারে কসবা থানার ওসি-র কাছে সিপি বিস্তারিত জানতে চান, মুন্নাকে গ্রেফতার করতে এখনও পর্যন্ত পুলিশ কী কী পদক্ষেপ করেছে। পুলিশের একাংশের দাবি, দক্ষিণ শহরতলিতে মুন্নার একাধিক ঘাঁটিতে তল্লাশি চালিয়েও লাভ হয়নি।

তবে লালবাজার সূত্রের খবর, মুন্নাকে গ্রেফতার করতে না পারা নিয়ে শুধু থানা নয়, গোয়েন্দা বিভাগের গুন্ডা দমন শাখার ভূমিকাতেও তেমন সন্তুষ্ট নন পুলিশ কমিশনার। কারণ, ২৩ মে রাতে মনোজ সাহু নামে এক যুবককে মুন্না ও তার সাঙ্গোপাঙ্গরা রাস্তায় ফেলে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে খুন করার কয়েক দিন আগে গুন্ডা দমন শাখার অফিসারেরা মুন্নাকে ধরতে যান। কিন্তু তাঁরা সে যাত্রায় মুন্নাকে ধরতে পারেননি। খুনের ঘটনার পরে মুন্নাকে ধরার ক্ষেত্রে থানার পাশাপাশি গুন্ডা দমন শাখাও যে ব্যর্থ, সে কথাও উঠে এসেছে এ দিনের ক্রাইম কনফারেন্সে। কলকাতা পুলিশের এক শীর্ষকর্তার কথায়, “সিপি নির্দেশ দিয়েছেন, শুধু মুন্না নয়, গোটা দলটাই ধরতে হবে।”

এর পাশাপাশি, শহরে ছিনতাইয়ের ঘটনা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাওয়ার ব্যাপারেও এ দিনের ক্রাইম কনফারেন্সে সিপি উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এই প্রসঙ্গে অবসরপ্রাপ্ত পুলিশকর্তা নজরুল ইসলামের মোবাইল ছিনতাই করতে যাওয়া দুষ্কৃতীদের কেন ধরা গেল না, তা নিয়েও সিপি এ দিন রীতিমতো উষ্মা প্রকাশ করেন বলে পুলিশ সূত্রে খবর। মে মাসে পার্ক সার্কাসের কাছে বাসের মধ্যে নজরুল ইসলামের মোবাইল ছিনিয়ে নিতে যায় কয়েক জন দুষ্কৃতী। নজরুল তাদের এক জনকে হাতেনাতে ধরে ফেললেও পরে হাত ছাড়িয়ে পালিয়ে যায় সে। নজরুল ইসলাম এই নিয়ে অভিযোগও দায়ের করেন। কিন্তু দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করা যায়নি। এই ব্যাপারে গোয়েন্দা বিভাগের ডাকাতি ও ছিনতাই দমন শাখা এবং ‘ওয়াচ’ শাখার মধ্যে সমন্বয় রক্ষা করে কাজ করতে নির্দেশ দেন সিপি।

তবে পুলিশ সূত্রে খবর, এ দিনের ক্রাইম কনফারেন্সে যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ দমন) পল্লবকান্তি ঘোষ জানান, মে মাসে শহরে ১৫টি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। তার মধ্যে ১১টিরই কিনারা হয়েছে, ছিনতাই হওয়া জিনিস উদ্ধার করা গিয়েছে। তবে পুলিশের একাংশের দাবি, অনেক সময়েই থানার সঙ্গে গোয়েন্দা বিভাগের সমন্বয় থাকছে না। ইলিয়ট পার্ক ও যাদবপুরের ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গে গোয়েন্দা বিভাগের অফিসারদের জানানো হয়নি।

ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের মতো অপরাধ দমনের ক্ষেত্রে একটি বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ এ দিন সিপি দিয়েছেন বলে লালবাজার সূত্রের খবর। লালবাজারের এক কর্তা জানান, ময়দান ও হেস্টিংসের মতো থানা এলাকায় অনেকটা নির্জন জায়গা আছে। ওই দু’টি থানা তো বটেই, সেই সঙ্গে আর যে সব থানা এলাকায় এই ধরনের নির্জন জায়গা আছে, সেখানে নিয়মিত নজরদারি জোরদার করতে বলেছেন সিপি।

এ দিনের ক্রাইম কনফারেন্সে জানানো হয়, মে মাসে কলকাতায় মোট ১০টি খুন হয়েছে। ওই সব খুনের তদন্ত কী অবস্থায় আছে, সে সম্পর্কেও খোঁজ নেন সুরজিৎবাবু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

syndicate clash cp kasba
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE