সাত-আট মাস আটকে ছিল। অবশেষে ট্রাম ও বাসের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য পরিকল্পনা খাতের টাকা পেয়েছে কলকাতা ট্রাম কোম্পানি (সিটিসি)। ওই খাতে প্রায় ছ’কোটি টাকা এসেছে বলে খবর। তবে বর্তমান অর্থবর্ষে বাকি টাকা কবে মিলবে, তা স্পষ্ট নয়।
দফতরের আধিকারিকেরা স্বীকার করে নিচ্ছেন, দীর্ঘদিন বরাদ্দের অভাব এবং নানা জটিলতায় শহরের ট্রাম পরিষেবা প্রায় উঠে যাওয়ার মুখে। শুধু তিনটি রুটে টিকে আছে এই পরিষেবা। অথচ যথেষ্ট জনপ্রিয় হওয়া সত্ত্বেও এসপ্লানেড থেকে ময়দান হয়ে খিদিরপুর রুট ঘূর্ণিঝড় আমপানের পর থেকেই বন্ধ। শহরের বিভিন্ন ট্রামপ্রেমী সংগঠন একাধিক বার এর প্রতিবাদ জানালেও ওভারহেড তার মেরামতি-সহ পরিকাঠামো সংস্কার এতটুকুও হয়নি বলে অভিযোগ। এ বার আর্থিক বরাদ্দ মেলায় ওই রুটের পরিকাঠামো সংস্কার করে ফের পরিষেবা সচল করার দাবি উঠেছে। ট্রামপ্রেমী সংগঠনগুলির দাবি, ২০১৬ সালে শহরে ২৫টি রুটে ট্রাম চলত। এখন এসপ্লানেড-গড়িয়াহাট, এসপ্লানেড-শ্যামবাজার ও টালিগঞ্জ-বালিগঞ্জের মধ্যেই শুধু ট্রাম চালু রয়েছে।
অভিযোগ, টালিগঞ্জ-বালিগঞ্জ রুটে সারা দিন ১৫-২০ মিনিট অন্তর ট্রাম চললেও অন্য দু’টি রুটে ওই ব্যবধান আধ ঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টা। ট্রাম বন্ধ হয়ে গিয়েছে চিৎপুর, গ্যালিফ স্ট্রিট, রাজাবাজার, বিধাননগর, বৌবাজার, খিদিরপুর, কালীঘাট-সহ একাধিক রুটে। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজের জন্য বি বা দী বাগকেন্দ্রিক সব ক’টি রুট বন্ধ। টালা সেতু বন্ধের কারণে যানজটের অজুহাতে ট্রাম বন্ধ আর জি কর সেতুতেও। অভিযোগ, বেলগাছিয়া ডিপোয় পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে অনেক ট্রাম। একই চিত্র নোনাপুকুর ডিপোয়। এই অবস্থায় খিদিরপুর রুটে ট্রাম সচল করার পাশাপাশি সম্ভাব্য রুটগুলি চালু করা নিয়েও দাবি জানিয়েছে ‘ক্যালকাটা ট্রাম ইউজ়ার্স অ্যাসোসিয়েশন’। সংগঠনের অন্যতম উদ্যোক্তা দেবাশিস ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘গণপরিবহণে মানুষকে সুরাহা দিতে ট্রাম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারত। দুর্ভাগ্যের যে, এই শহরে ট্রামের পরিকাঠামো থাকা সত্ত্বেও তার সুষ্ঠু ব্যবহার নেই।’’