Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

কলকাতার কড়চা

মুনমুন সেনের বিয়েতে সঞ্জীবকুমারের সঙ্গে খুনসুটি করছেন সুচিত্রা সেন, এমন এক বিরল ছবির পাশাপাশি তাঁর সঙ্গে ‘আঁধি’ করার স্মৃতি লিখেছেন গুলজার, ‘শুটিংয়ে উনি একদম ইউনিটের একজন। অসম্ভব পাংচুয়াল, অসম্ভব ডেডিকেটেড।

শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০০:০০
Share: Save:

রহস্যের আড়াল সরিয়ে সম্পূর্ণ সুচিত্রা

মুনমুন সেনের বিয়েতে সঞ্জীবকুমারের সঙ্গে খুনসুটি করছেন সুচিত্রা সেন, এমন এক বিরল ছবির পাশাপাশি তাঁর সঙ্গে ‘আঁধি’ করার স্মৃতি লিখেছেন গুলজার, ‘শুটিংয়ে উনি একদম ইউনিটের একজন। অসম্ভব পাংচুয়াল, অসম্ভব ডেডিকেটেড। যত ভোরে হোক না কেন, ঠিক সময়ে মেকআপ করে সেটে এসে হাজির। সঞ্জীব বেচারা একটু ঘুমকাতুরে। সকাল-সকাল কল থাকলে ঠিক সময়ে এসে হাজির হতে পারত না।... সকালে উঠে সুচিত্রা সেন নিজের ঘরে মেকআপ করছেন। তারই ফাঁকে ফোন করে সঞ্জীবকুমারের ঘরে তাগাদা দিচ্ছেন ঘুম থেকে ওঠার জন্য। মেকআপ করতে-করতে স্পটবয়দের ডেকে বলছেন, ‘‘মোটুকে লিয়ে চায় লে যাও।’’ সঞ্জীবকুমারকে ‘মোটু’ বলতেন উনি। অত ব্যক্তিত্বময়ী একজন মহিলার পক্ষে যে এত সহজে এত অন্তরঙ্গ ঘনিষ্ঠ হয়ে যাওয়া সম্ভব, ওঁকে না দেখলে বোঝাই যায় না।’ এমনই বহু রকমের ছবি আর লেখায় ‘আনন্দলোক’-এর পাতায় বিভিন্ন সময়ে উঠে এসেছে ‘মহানায়িকা’র জীবনের নানা অজানা কথা, রহস্যাবৃত ‘সুচিত্রা’র আড়াল সরিয়ে বেরিয়ে এসেছেন রক্তমাংসের ‘রমা’।

তাঁর ব্যক্তিজীবন, কর্মজীবন, এমনকী অভিনয়-জীবন থেকে স্বেচ্ছা-অবসর নেওয়ার পর কী ভাবে আধ্যাত্মিক-জীবনের সঙ্গে যুক্ত করে নিয়েছিলেন নিজেকে, তাও। এই আনন্দলোক সংকলনটি, সম্পূর্ণ সুচিত্রা (আনন্দ) বেরল বইমেলায়। বইটির শুরুতেই তাঁকে নিয়ে স্বপ্নপ্রয়াণ-এ লিখেছেন পৌলমী সেনগুপ্ত: ‘সুচিত্রা সেনের কিংবদন্তি হয়ে ওঠা শুধু বাঙালির ভাবমোক্ষণের দ্বারা প্রভাবিত নয়, তার চেয়ে বেশি কিছু তাঁর মধ্যে অবশ্যই বিদ্যমান।... অরুণকুমার চট্টোপাধ্যায় তাঁর উত্তম-অবতারে বাঙালির প্রেমের শ্রেষ্ঠ ভাবসম্প্রসারণ ঘটিয়েছেন বটে, কিন্তু তিনি রমা সেনের সুচিত্রা-অবতারে রহস্যলাঞ্ছিত গরিমার কাছে পৌঁছতে পারেননি। সুচিত্রা অধরা, উত্তমকে যেন চেষ্টা করলে ধরা যায়।’ যে ফিল্মোগ্রাফি সংযোজিত হয়েছে, তাতে সুচিত্রার বর্ণময় অভিনয় জীবনের যাবতীয় ছবির তালিকার সঙ্গে সেগুলি বক্স অফিসে কীরকম ফলাফল করেছিল তারও হিসেব দেওয়া হয়েছে। শুধু সিনেমার নয়, সমাজের নানান চৌহদ্দির বিশিষ্ট জনেরাও লিখেছেন তাঁকে নিয়ে। আর অজস্র দুর্লভ সাদাকালো স্থিরচিত্র, শুধু সে জন্যেই এ বই অবশ্য সংগ্রহযোগ্য। সঙ্গে মাঝে প্রচ্ছদ, বাঁ দিকে সুচিত্রা সেনের ছবি, বই থেকে।

নাগা সংস্কৃতি

সারা বিশ্বে ওঁরা পরিচিত ‘হেড হান্টার’ হিসেবে। কিন্তু ওঁদেরও সমৃদ্ধ সংস্কৃতি রয়েছে। ব্রিটিশ শাসকরা এঁদের বহু অমূল্য শিল্পকর্ম নিয়ে গিয়েছেন নিজ দেশে। এদেশে এখন সেই প্রাচীন শিল্পের আর কোনও অস্তিত্বই নেই! ২০১২-তে নাগাল্যান্ডের ভূমিপুত্র এই নাগাদের শিল্প সংরক্ষণের তাগিদে একটি কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানেই সিদ্ধান্ত হয় নাগা শিল্পসামগ্রী নিয়ে একটি প্রদর্শনী এবং একটি ক্যাটালগ প্রকাশের। সেই মতো ভারতীয় সংগ্রহশালার ২০৩ তম জন্মদিন উপলক্ষে শুরু হল দ্য কালচারাল হেরিটেজ অব দ্য নাগাজ শীর্ষক প্রদর্শনী, চলবে একমাস ধরে, (১০-৪.৩০)। এখানে নাগাদের সাজসজ্জা এবং শিকার বা কৃষিকাজে ব্যবহৃত সামগ্রীর সঙ্গেই তুলে ধরা হয়েছে ওদের বস্ত্র, ধাতুর কাজ প্রভৃতির নমুনা। এ বারের ন্যাথানিয়েল ওয়ালিচ স্মারক বক্তৃতায় পুনের ডেকান কলেজের উপাচার্য বসন্ত শিণ্ডে বললেন জেনেসিস অব দি ইন্ডিয়ান নলেজ সিস্টেম: অ্যান আর্কিয়োলজিকাল অ্যাপ্রোচ শীর্ষকে। সন্ধেয় ছিল পণ্ডিত তন্ময় বসুর পরিবেশনা ‘তালতন্ত্র’। প্রদর্শনী থেকে সঙ্গের ছবি: গোপী দে সরকার।

সাহিত্য বিতর্ক

খুলনায় ছেলেবেলা কেটেছে, সেখানেই ১৯৪৫-এ বন্দি আজাদ হিন্দ সেনাদের মুক্তির দাবিতে প্রথম কারাবরণ ধনঞ্জয় দাশের (১৯২৭-২০০৩)। তার পর কখনও কারাবরণ, কখনও নিরাপত্তা বন্দি। ১৯৪৮-এ কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য। চিন বিপ্লবের ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণ থেকে পূর্ব পাকিস্তানে বাঙালির গণতান্ত্রিক ভাষা আন্দোলন হয়ে লগ্ন ছিলেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধেও। আত্মস্মৃতির গ্রন্থ— আমার জন্মভূমি: স্মৃতিময় বাংলাদেশ। আছে কাব্যগ্রন্থও। সোভিয়েত রাশিয়া ও তার মিত্র দেশগুলির সঙ্গে মৈত্রী বন্ধনে জড়িয়ে থাকার পাশাপাশি যুক্ত ছিলেন মার্কসবাদী সাহিত্য ও প্রগতি সংস্কৃতি আন্দোলনের গবেষণায়। তাঁর তিন খণ্ডে মার্কসবাদী সাহিত্য বিতর্ক আজও বাঙালির মননে অধ্যয়নে। নবতি জন্মবর্ষ উপলক্ষে তাঁর নামাঙ্কিত স্মারক বক্তৃতা দেবেন মালিনী ভট্টাচার্য। বিষয়: ‘মার্কসবাদী সাহিত্য বিতর্ক আজ’। ১০ ফেব্রুয়ারি সন্ধে ৬টায় অবনীন্দ্র সভাঘরে। স্বাগত ভাষণ ও স্মারক গ্রন্থ উদ্বোধনে বিশ্ববন্ধু ভট্টাচার্য।

ত্রিপুরা সন্ধ্যা

তিন বছরে পা রাখল অহর্নিশ পত্রিকা (সম্পা: শুভাশিস চক্রবর্তী) আয়োজিত ‘ত্রিপুরা সাহিত্য সন্ধ্যা’। ‘ত্রিপুরার জন্য অহর্নিশ’ পত্রিকার তৃতীয় সংখ্যাটি এ বার ৭ ফেব্রুয়ারি সাহিত্য সন্ধ্যায় জীবনানন্দ সভাঘরে, বিকেল সাড়ে পাঁচটায় উদ্বোধন করবেন নবনীতা দেব সেন ও সৈয়দ হাসমত জালাল। সংখ্যাটিতে দুই অঞ্চলের ব্যক্তি, প্রকৃতি, সাহিত্য নিয়ে পারস্পরিক অনুভূতি ও অভিজ্ঞতার কথা উঠে এসেছে। অনুষ্ঠানে অহর্নিশ সম্মাননা পাবেন ত্রিপুরার বিশিষ্ট সাহিত্যিক কিশোররঞ্জন দে। ‘কলকাতায় ত্রিপুরা’ বিষয়ে বলবেন অজিত ভৌমিক। জয়া গোয়ালা স্মারক বক্তৃতায় ‘ঊনকোটি: ইতিহাস ও বর্তমান’ বিষয়ে বলবেন রাজীবকুমার ঘোষ। বিশেষ অতিথি বাংলাদেশের কবি শামিম রেজা। এর সঙ্গে আছে ত্রিপুরা সাহিত্য উদ্ভাস: কবিতা ও গল্প পাঠ।

উপমা

আবৃত্তি শিল্পনির্ভর সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘উপমা’র জন্ম আশির দশকের গোড়ায়। শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী শিশুদের পরিচর্যা করেন বা দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত অসহায় নিম্নবিত্তদের পাশে দাঁড়ান যে সব মানুষ বা প্রতিষ্ঠান, ছত্রিশ বছর ধরে তাদের হাতেই সাহায্য-সম্মান তুলে দিয়ে আসছে ‘উপমা’। এ বছর ‘কেয়ার অ্যান্ড কাউন্সেলিং’ নামক এক প্রতিবন্ধী শিশুদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে সাহায্য করতে ১১ ফেব্রুয়ারি সন্ধে ৬টায় শিশির মঞ্চে পার্থ ঘোষ ও গৌরী ঘোষ নিবেদন করবেন রবীন্দ্রনাথ ও রবীন্দ্রোত্তর কবিদের রচনা-আশ্রিত শ্রুতি আলেখ্য ‘অমৃতমন্থন’। আয়োজনে ‘উপমা’।

সাবর্ণ সংগ্রহশালা

পারিবারিক ঐতিহ্য সংরক্ষণের সূত্রেই বড়িশার সপ্তর্ষি ভবন, বড়বাড়িতে গড়ে উঠেছে সাবর্ণ সংগ্রহশালা। সংগৃহীত হয়েছে পরিবারের নানা ঐতিহাসিক উপাদান। ফি বছর আয়োজন করা হয় একটি বার্ষিক উৎসবের, এবারে দ্বাদশ বর্ষ। গতকাল শুরু হয়েছে প্রদর্শনী, চলবে ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত, ১০-৮টা। এ বারের প্রধান আকর্ষণ নেপালের শিল্পকর্ম ‘ন্যাচারালি নেপাল’ শীর্ষকে, সহায়তা করেছে নেপাল সরকারও। থাকছে হেমন্ত মুখোপাধ্যায় এবং জামাইষষ্ঠী ছবির নির্মাতা অমর চৌধুরীর ওপর একটি প্রদর্শনী, সঙ্গে সঙ্গীতকার প্রণব রায় স্মরণ অনুষ্ঠান। এ ছাড়াও নস্টালজিয়া কুইজ, মুদ্রা এবং দেশবিদেশের বাহারি টুপির প্রদর্শন। এখানেই উদ্বোধন হল এদের হাতে লেখা পত্রিকা ‘সপ্তর্ষি’র সাম্প্রতিক সংখ্যার।

আকস্মিক

বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষৎ তাঁর জীবনে ছিল ওতপ্রোত। কর্মজীবন শুরু পরিষৎ গ্রন্থাগারে ১৯৬৮-তে। ১৯৭৯ থেকে ২০১১ পর্যন্ত আনন্দবাজার পত্রিকা গ্রন্থাগারে কাজ করার পর অবসর নিয়ে আবার পরিষদের কার্যনির্বাহক সমিতিতে নানা পদে যুক্ত হন— সদস্য, সহ-সভাপতি, পুথিশালাধ্যক্ষ, সব শেষে পত্রিকাধ্যক্ষ হিসেবে। সুনীল দাসের জন্ম ১৯৫১-য় মুর্শিদাবাদের হাটপাড়া গ্রামে। তাঁর সম্পাদিত গ্রন্থগুলির মধ্যে মনোমোহন বসুর অপ্রকাশিত ডায়েরী, পুরনো কলকাতার কথা বিশেষ উল্লেখযোগ্য। সংকলিত গ্রন্থ ভারতী: ইতিহাস ও রচনাপঞ্জি, জন্মদিনের মুখর তিথি প্রভৃতি। আরও নানা কাজের পরিকল্পনা ছিল, ১ ফেব্রুয়ারি হঠাৎই চলে গেলেন।

অভিনব

বাংলা নাট্যজগতে এই প্রথম নীললোহিতের মঞ্চায়ন। নীললোহিতের অসামান্য সৃষ্টি ‘মুক্তপুরুষ’-এর কাহিনি অবলম্বনে ‘বছর কুড়ি পরে’ নাট্যগোষ্ঠীর প্রযোজনায় ভিন্ন স্বাদের ‘অধরা’ নাটকটির দ্বিতীয় শো উপস্থাপিত হবে ৮ ফেব্রুয়ারি, জ্ঞান মঞ্চে, সন্ধে ৭টায়। নাটকটি মূলত সাধারণ জনজীবনের আড়ালে এক নিষ্পাপ আদিমতা ও এক জনের নিরন্তর প্রচেষ্টার মন ছুঁয়ে যাওয়া গল্প। অন্য দিকে, বাংলাদেশের বরিশালের উপর দিয়ে বয়ে চলেছে ‘কিত্তনখোলা’ নদী। তারই অববাহিকায় ফি বছর অনুষ্ঠিত হয় বাউল-ফকির আখড়া মেলা। সে মেলায় পেশায় মাঝি রফিকুল হাসান সোনাই কখন যেন যাযাবর কন্যা ডালিমনের প্রেমে পড়ে, আবার ওদিকে যাত্রাসম্রাজ্ঞী বনশ্রীবালাকেও মন দিয়ে বসে— এ ভাবেই এগিয়েছে ‘বাঘাযতীন আলাপ’ নাট্য সংস্থার সেলিম আল দীনের রচনা অবলম্বনে নাটক ‘কিত্তনখোলা’। প্রথম অভিনয় আজ সন্ধে তপন থিয়েটারে, সাড়ে ৬টায়। সঙ্গীত, সম্পাদনা ও নির্দেশনায় পার্থপ্রতিম দেব।

জনপ্রিয়

দেবসাহিত্য কুটীর থেকে প্রকাশিত ছোটদের মাসিক পত্রিকা ‘শুকতারা’র যাত্রা শুরু ১৯৪৮-এর ফেব্রুয়ারিতে। শিল্পী নারায়ণ দেবনাথের অমর সৃষ্টি ‘বাঁটুল দি গ্রেট’ ও ‘হাঁদা ভোঁদার কাণ্ডকারখানা’ পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার পর তা জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছয়। পত্রিকার সত্তর বছরে পদার্পণ উপলক্ষে সম্প্রতি বইমেলা প্রাঙ্গণে এক অনুষ্ঠানে নারায়ণ দেবনাথকে সংবর্ধনা জ্ঞাপন ও ‘শুকতারা-৭০’ লাইফ টাইম অ্যাচিভমেন্ট পুরস্কার প্রদান করলেন ব্রাত্য বসু। উপস্থিত ছিলেন শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়, সব্যসাচী চক্রবর্তী, দীপ দাশগুপ্ত প্রমুখ। দেখা গেল, এখনও নবতিপর শিল্পীর জনপ্রিয়তায় এতটুকুও ভাটা পড়েনি। এই বয়সেও তিনি হুইলচেয়ারে বইমেলা চষে বেড়ালেন। আট থেকে আশি সকলেই হাসি মুখে সই সংগ্রহে, করমর্দনে ব্যস্ত রাখলেন তাঁকে! বইমেলা প্রাঙ্গণে সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে নারায়ণ দেবনাথের ছবিটি তুলেছেন স্যমন্তক চট্টোপাধ্যায়।

সুবর্ণজয়ন্তী

রবীন্দ্রনাথের প্রিয় ভাইঝি ইন্দিরা দেবী আজীবন স্বপ্ন দেখেছেন, রবীন্দ্রসঙ্গীত ও ঠাকুরবাড়ির অন্যদের সঙ্গীত চর্চার ধারা অব্যাহত থাকুক। তাঁর সেই স্বপ্নের বাস্তবায়ন ইন্দিরা সঙ্গীত শিক্ষায়তন। শান্তিনিকেতনের তিন প্রাক্তনী সুপূর্ণা ঠাকুর, সুভাষ চৌধুরী ও জয়শ্রী রায় ১৯৬৫-তে উদ্বোধন করেন ইন্দিরা-র। তাদের পঞ্চাশ পূর্তির শেষ অনুষ্ঠানটি শেক্সপিয়ার সরণির শ্রীঅরবিন্দ ভবনে ১১ ফেব্রুয়ারি সন্ধে ৬টায়। ইউরোপে রচিত রবীন্দ্রসঙ্গীত নিয়ে অলোকরঞ্জন দাশগুপ্তের রচনা ও বিন্যাসে: ‘তুমি ঊষার সোনার বিন্দু’। পাঠে অলোকরঞ্জনের সঙ্গে সুবীর মিত্র ও জয়িতা মিত্র। গানে ইন্দিরা শিল্পীগোষ্ঠীর সঙ্গে বাংলাদেশের শীলা মোমেন ও সত্যজিৎ ঘোষ।

অসামান্য

এক মুহূর্তের জন্যেও মনে হয়নি আমি অভিনয় করছি, চরিত্রটা এত বাস্তব ছিল। মনে হত মেয়েটিকে আমি চিনি, জানি, দেখেছি।’ মহানগর-এ (১৯৬৩) সত্যজিতের পরিচালনায় প্রথম অভিনয়ের অভিজ্ঞতা অ্যান্ড্রু রবিনসনকে জানিয়েছিলেন মাধবী মুখোপাধ্যায়। এর পর তাঁর ‘চারুলতা’ বা ‘কাপুরুষ’-এ করুণা হয়ে ওঠার ইতিহাস সকলেরই জানা। মৃণাল সেনের ‘বাইশে শ্রাবণ’-এ (১৯৬০) মাধবীর অভিনয়ের অপরিমেয় শক্তি প্রথম টের পান সত্যজিৎ। ১৯৫৯-এ ছবিটির ব্যাপারে মাধবী যখন আসেন মৃণালবাবুর বাড়িতে, সে অভিজ্ঞতা জানিয়েছেন পরিচালক: ‘তখন ওর নাম মাধুরী... যে ব্যাপারটা আমায় চমকে দিল, তা হল মেয়েটির ব্যক্তিত্ব, ওর উপস্থিতির সম্ভ্রম, ডিগনিটি।... সেদিন আপাতভাবে খুবই সাধারণ সেই মেয়েটি, আর পাঁচজন বাঙালি মেয়ের মতো, বেশি কথা না বলেও বুঝিয়ে দিয়েছিল নীরবতা কত মুখর হতে পারে।’ মৃণালবাবুর কলকাতা ৭১-এর ‘অঙ্গার’-এ অসামান্য মাধবীর অভিনয়। ভোলা যায় না ঋত্বিক ঘটকের ‘সুবর্ণরেখা’, তপন সিংহের ‘আঁধার পেরিয়ে’, তরুণ মজুমদারের ‘গণদেবতা’, বিজয় বসুর ‘সুবর্ণলতা’, বা পূর্ণেন্দু পত্রীর ‘স্ত্রীর পত্র’, ‘মালঞ্চ’-তে তাঁর অভিনয়। ১০ ফেব্রুয়ারি ৭৫ পূর্ণ করবেন তিনি (জ. ১৯৪২), বিকেল সাড়ে ৪টেয় নন্দনে উদ্‌যাপন। ফেডারেশন অব ফিল্ম সোসাইটিজ, শিল্পী সংসদ ও নন্দন-এর যৌথ উদ্যোগে। আলোচনার পর দেখানো হবে ‘বাইশে শ্রাবণ’।

ম্যারাথন

আজ থেকে প্রায় সত্তর বছর আগে এক শিশু বাবা-মা’র সঙ্গে ওপার বাংলা থেকে উৎখাত হয়ে চন্দননগরে আশ্রয় পেল। কিশোর বেলায় নানা সমস্যা পেরিয়ে যৌবনে তিনি কৃতিত্বের সঙ্গে শিবপুর বি ই কলেজ থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে ভাগ্যান্বেষণে আমেরিকা পাড়ি দেন। সেখানেও যথেষ্ট সাফল্য পেয়ে তিনি সরকারি উচ্চপদে আসীন ছিলেন। মধ্য-চল্লিশে তিনি ঘটনাচক্রে এক চিকিৎসা সংক্রান্ত আলোচনাসভায় গিয়েছিলেন। তাঁর বাবা দীর্ঘদিন ডায়াবেটিসে কষ্ট পেয়েছেন বলে তিনি প্রশ্ন করলেন, ‘কী করে এই ব্যাধির হাত এড়ানো যায়?’ সভার পরিচালক প্রসঙ্গত দৌড়নর সুফলের কথা উল্লেখ করেন। সেদিনই বাড়ি ফেরার পথে তিনি একজোড়া দৌড়বার জুতো কিনে ফেলেন এবং নিয়মিত ছোটা শুরু করেন। প্রথম প্রথম ১০০ মিটার ছুটতেই হাঁফ ধরে যেত, কিন্তু নিয়মিত অনুশীলন করে স্টকহলমে প্রথম বার (১৯৯৯) তিনি ম্যারাথন দৌড় সম্পূর্ণ করেন। পরবর্তী এক দশকে তিনি সাতটি মহাদেশেই ম্যারাথন দৌড়েছেন। এর মধ্যে আ্যানটার্কটিকাও আছে। ২০০৮-এ সাত মহাদেশে ম্যারাথন দৌড়বার কৃতিত্ব পৃথিবীতে মাত্র ২১৪ জনের ছিল। তার মধ্যে নীহার রায়-ই একমাত্র বাঙালি। সত্তরেও তিনি ম্যারাথন দৌড়চ্ছেন এবং আজও ডায়াবেটিসমুক্ত। ২০১২ সালে তিনি কিলিমানজারো-র শীর্ষেও চড়েন। সম্প্রতি প্রকাশিত হল তাঁর বিচিত্র অভিজ্ঞতার কথা— সাত মহাদেশের পথে পথে (প্রিয়া বুক হাউস)।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kolkatar Korcha
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE