Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

কলকাতার কড়চা

অন্য ফ্লোরে অভিনয় করছিলেন উত্তমকুমার, বিকাশ রায়, সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়রা। স্টুডিয়োতে এডিটিং-এর কাজে ব্যস্ত ছিলেন সত্যজিৎ রায়ও। মারাত্মক খবরটা এসেছিল দুটো শুটিং-এরই মাঝখানে। মুহূর্তে স্তব্ধ সে দিনের টলিউড। ১১ জুন ১৯৬২। তিনি বিদায় নিলেন ৬২ বছর বয়সে।

শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০১৭ ০০:০০
Share: Save:

এক এবং অদ্বিতীয়

সে দিন শুটিং চলছিল নিউ থিয়েটার্সের দুটো ফ্লোরেই। প্রথমটায় অভিনয় করছিলেন জহর গঙ্গোপাধ্যায়, সন্ধ্যা রায়, অনুপকুমার ও অন্যরা। অন্য ফ্লোরে অভিনয় করছিলেন উত্তমকুমার, বিকাশ রায়, সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়রা। স্টুডিয়োতে এডিটিং-এর কাজে ব্যস্ত ছিলেন সত্যজিৎ রায়ও। মারাত্মক খবরটা এসেছিল দুটো শুটিং-এরই মাঝখানে। মুহূর্তে স্তব্ধ সে দিনের টলিউড। ১১ জুন ১৯৬২। তিনি বিদায় নিলেন ৬২ বছর বয়সে। পেরিয়ে গিয়েছে তাঁর প্রয়াণের ৫৫ বছর, আগামী ১২ জুলাই তাঁর জন্মদিন। তাঁর মৃত্যুতে সখেদে বলেছিলেন উত্তমকুমার, ‘আমার ব্যারিস্টারের ছেলের রোলে অভিনয় করা হবে না।’ তাঁর মৃত্যুর খবর পেয়ে এক মুহূর্তে হাসপাতালের দিকে দৌড়েছিলেন জহর গঙ্গোপাধ্যায়। গা়ড়ি অ্যাক্সিডেন্টে তাঁর মৃত্যু হয়েছিল। হাসপাতালে তাঁর রক্তাক্ত মৃতদেহ দেখে মূর্ছিত হয়ে পড়েছিলেন গঙ্গাপদ বসু। বিধানচন্দ্র রায় জানিয়েছিলেন, হতে পারে অপঘাতে মৃত্যু তবু তাঁর শরীরের কোনও পোস্টমর্টেম, কোনও কাটাছেঁড়া হবে না। তাঁকে সসম্মানে বিদায় দেওয়া হবে। তিনি এক এবং অদ্বিতীয় ছবি বিশ্বাস। বাংলা চলচ্চিত্র এই অভিনেতার কাছে কতটা ঋণী তা আজ নতুন করে সবাইকে বোঝাতে যাওয়া কি বাহুল্য নয়? অথচ দেখুন, প্রাণহীন এই শহর কত দ্রুত তাঁকে ভুলে গিয়েছে!

শ্রীম স্মরণ

‘শ্রদ্ধেয় মহেন্দ্রনাথ গুপ্ত ‘‘মাষ্টার মহাশয়’’ নামে সর্ব্বত্র পরিচিত। ...শ্রদ্ধাভক্তি ও কৃতজ্ঞতা প্রদর্শনার্থে সামান্য কয়েক পংক্তি লিপিবদ্ধ করিয়া যাইতেছি।’ মহেন্দ্রনাথ দত্ত তাঁর মাষ্টার মশায়ের অনুধ্যান-এর (সম্পা: সুমন ভৌমিক। সূত্রধর) সূচনা-য় লিখেছেন কথামৃতকার শ্রীম (সঙ্গের ছবি) সম্পর্কে। শ্রীম-র ১৬৪তম জন্মদিবস উপলক্ষে প্রকাশনা-প্রতিষ্ঠান সূত্রধর ১৪ জুলাই সন্ধে ৭টায় রামকৃষ্ণ মঠ, বরানগর-এর ‘নিবেদিতা দেবাঙ্গন’-এ একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে— ‘স্মরণ-সৃজনে শ্রীম’, তাতেই আনুষ্ঠানিক প্রকাশ উল্লেখিত গ্রন্থটির। শ্রীম-র শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণকথামৃত যে রামকৃষ্ণ-ভাবান্দোলনের অনন্য দলিল তা নিয়ে মুখ্য ভাষণ দেবেন স্বামী শাস্ত্রজ্ঞানন্দ। প্রধান অতিথির ভাষণে স্বামী সুবীরানন্দ। ওই দিন সকালে ৮.১৫-য় রামকৃষ্ণ মঠের কথামৃত ভবন সংলগ্ন ভবনের দ্বারোদ্ঘাটন এবং ৮.৪৫-এ কথামৃত ভবনের প্রবেশপথের সম্মুখে শ্রীম-র একটি রিলিফ মূর্তির আবরণ উন্মোচন করবেন স্বামী বাগীশানন্দ।

শতবার্ষিকী

সুদূর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার গ্রামের এক ছাত্র ম্যাট্রিক ও আই এ পরীক্ষায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বর্ণপদক পান। আশুতোষ কলেজ থেকে দর্শনে অনার্স নিয়ে বি এ এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম এ পাশ করেন কাত্যায়নীদাস ভট্টাচার্য। এখানেও রেকর্ড নম্বর-সহ প্রথম শ্রেণিতে প্রথম। ১৯১৭ সালের ১৭ অক্টোবর জন্ম, বাবা ভুবনেশ্বর ভট্টাচার্য ত্রিপুরা রাজপরিবারের চিকিৎসক ছিলেন। আশুতোষ কলেজে অধ্যাপনা শুরু, বিভিন্ন সরকারি কলেজ হয়ে প্রেসিডেন্সিতে আসেন। দার্শনিক সুরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্তের প্রিয় এই ছাত্রটি বহু পত্রপত্রিকায় লিখেছেন। আকস্মিক দুরারোগ্য অসুখে ১৯৬৬ সালে মাত্র ৪৯ বছর বয়সে প্রয়াত হন তিনি। তাঁর জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে অগ্রন্থিত লেখাগুলি সংকলনের পরিকল্পনা আছে, জানালেন পুত্র অমিতাভ ভট্টাচার্য। এ ছাড়া কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে এম এ-তে দর্শনে সর্বোচ্চ নম্বর প্রাপককে দেওয়া হবে পদক। ১৩ জুলাই সাড়ে পাঁচটায় রামকৃষ্ণ মিশন ইনস্টিটিউট অব কালচারের বিবেকানন্দ হলে শতবার্ষিকী বক্তৃতা দেবেন দার্শনিক অরিন্দম চক্রবর্তী, বিষয়: ‘ব্যথায় কথা যায় ডুবে: ঈশ্বরের বেদনা, নিরীশ্বর সাংখ্যে দুঃখমুক্তি’। সঙ্গে কাত্যায়নীদাসের প্রতিকৃতিটি বারো বছর বয়সে অরিন্দম চক্রবর্তী অঙ্কিত।

সত্যটা জানতে হবে

চার পাশে আজ বিদ্বেষের আবহ। মৌলবাদীদের অপপ্রচার আর গুজবে উত্তপ্ত চার পাশ। ঝড়ের বেগে ছড়াচ্ছে গুজব। রক্তাক্ত হচ্ছে জনপদ। সাম্প্রদায়িক সেই অবিশ্বাস আর হানাহানি কেবল শহরের চৌহদ্দিতে আটকে থাকছে না। ছড়িয়ে পড়ছে বাংলায় সম্প্রীতির শক্ত ঘাঁটি গ্রামে গ্রামে। অসম্প্রীতি আর সংঘাতের উৎস ‘ধর্মের নামে অপপ্রচার আর গুজব বন্ধ’ করার জন্য নবগঠিত ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি উদ্যোগ’ একটি পুস্তিকা প্রকাশ করেছে। চার বিয়ে, অনুপ্রবেশ, তোষণ, জিহাদ,অপরাধ প্রবণতার মতো বহু কিছু মিথ্যা প্রচার চলতে থাকে মুসলমানদের বিরুদ্ধে। তেমনই উল্টো দিকে হিন্দুদের নিয়েও মিথ্যা প্রচার অনেক। গুজবের বিরুদ্ধে যুক্তি আর তথ্য সাজিয়ে সত্যটাকে সামনে আনা হয়েছে ‘সত্যটা জানতে হবে’ শীর্ষক পুস্তিকায়। দুই পক্ষের মনের মেলামেশা আর সাংস্কৃতিক আদানপ্রদান বাড়ানর নানা কর্মসূচির পাশাপাশি পুস্তিকাটি হাতে হাতে পৌঁছে দিচ্ছে সম্প্রীতি উদ্যোগ। ৯৮৩১১৭২০৬০ নম্বরে যোগাযোগ করে পুস্তিকাটি সংগ্রহ করা যায়।

সাগিনা মাহাতো

সাংবাদিকতা সূত্রে পাওয়া সত্য ঘটনা নির্ভর, তাঁর লেখা গল্প উপন্যাসের উপজীব্য। যশোহর জেলার গোপালপুর গ্রামে ১৯২৩ সালে জন্ম সাংবাদিক ও সাহিত্যিক গৌরকিশোর ঘোষের। তাঁর লেখা ‘সাগিনা মাহাতো’র (রচনাকাল ১৯৬৯) কাহিনি অবলম্বনে ১৯৭০-এ তৈরি হয়েছিল দিলীপকুমার সায়রাবানু অভিনীত তপন সিংহের সিনেমা ‘সাগিনা মাহাতো’। ১৯৭০ সালে নাট্যকার বাদল সরকার একই কাহিনি নিয়ে লেখেন নাটক ‘সাগিনা মাহাতো’। ১৯৭২ সালে প্রথম মঞ্চস্থ হয়। এই নাটকই ২০১২ সালে ‘বাঘাযতীন আলাপ’ পার্থপ্রতিম দেব-এর পরিচালনায় ১৭টি অভিনয়ের পর বন্ধ করে দেয়। এ বার এই নাট্যদলই নাটকটি পুনর্নির্মাণ করেছে। ১৩ জুলাই, সন্ধে সাড়ে ৬টায়, তপন থিয়েটারে মঞ্চস্থ হবে ‘সাগিনা মাহাতো’।

পাঁজরে দাঁড়ের শব্দ

তাঁর লেখনীতে যেমন উঠে এসেছে সুগভীর অনুভূতি: ‘এই তো জানু পেতে বসেছি, পশ্চিম/ আজ বসন্তের শূন্য হাত—/ ধ্বংস করে দাও আমাকে যদি চাও/ আমার সন্ততি স্বপ্নে থাক।’ অন্য দিকে তেমনই কবির আন্তরিক উপলব্ধি বটপাকুড়ের ফেনা গ্রন্থের গদ্যে— ‘বিদেশের সুরম্য এক বিশাল বাগানে বসে আছি একদিন, ভিতরে তার মস্ত এক দিঘি, টলটলে জল। ... হঠাৎ দেখি আমার পাশে বসা গুঞ্জনরত এক দম্পতির বছরতিনেকের শিশুটি প্রজাপতি ধরতে চাইছে জলের দিকে এগিয়ে।... আমার বাঙালি মন বেজায় উশখুশ করে ওঠে। আরো একটু জলের কাছে পৌঁছে যাওয়ায়, ...ব্যস্ত হয়ে বলে উঠি আমি: ‘বাচ্চাটি তো আপনাদের? পড়ে যাবে তো— ধরুন একটু।’ ওঁরা আমার দিকে তাকান। অল্প হেসে বলেন: ‘নজর রাখছি আমরা। কিন্তু এখন ওকে ধরতে গেলে ওর মনের মধ্যে একটা ভয় ঢুকে যাবে। সেটা কি ভালো? জলে যদি পড়ে যায়, ঝাঁপ দিয়ে তুলে নেব ঠিকই। নজর রাখছি আমরা।’ শুনে আমি চমৎকৃত।’’ এ বার শঙ্খ ঘোষেরই কবিতা ও গদ্য পাঠ করবেন জয় গোস্বামী এবং রত্না মিত্র ‘পাঁজরে দাঁড়ের শব্দ’ শীর্ষক আইসিসিআর-এর অনুষ্ঠানে। ১৪ জুলাই, সন্ধ্যা ৬টা ১৫-য়। প্রাক্‌কথনে শ্রীজাত। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন স্বয়ং কবি। আয়োজনে বাচিকশিল্পচর্চা কেন্দ্র ‘বাক’।

তাঁরাই খুঁটি

কোমর বেঁধে পরস্পর টক্করে নেমেছেন মন্ত্রিমশাইরা! শহরের তাবড় ‘খুঁটি’র কেউ কেউ অভিনেতা, অভিনেত্রী এনে ইতিমধ্যেই সেরে ফেলেছেন খুঁটিপুজো। শারদীয়ার বাকি আর মাস আড়াই। খুঁটিপুজোর দিন রক্তদান শিবির করে মানুষের পাশে থাকাই মূল খুঁটি ফিরহাদ হাকিমের ‘চেতলা অগ্রণী’র। দর্শক টানার প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয়াতেই ‘অগ্রণী’ মণ্ডপ দেখবে দিয়েগো মারাদোনা আর সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ‘নাকতলা উদয়ন সঙ্ঘ’ উত্তমকুমারের ছবির প্যাভিলিয়নের চুম্বকে জনস্রোত টানতে চেষ্টা করছে। মন্ত্রিসভার কয়েকজন সতীর্থকে নিয়ে বরাবরের ভিড় টানা সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের একডালিয়া এভারগ্রিনের খুঁটিপুজো হল রবিবার। সুরুচি সঙ্ঘের অরূপ বিশ্বাস আবার আলাদা ভাবে খুঁটিপুজোয় জমক চান না। তাঁর ‘খুঁটি’ শুধু পুজোর দিন-রাতে মানুষের প্লাবন। সেই জনস্রোতে ভরসা রেখেই খুঁটির পুজোয় এখন মজে রয়েছেন শহরের হেভিওয়েট ‘খুঁটি’রা।

অর্থনীতিবিদ

শুধু তাঁর কাছে অর্থনীতির পাঠ নেবেন বলে দিল্লিসহ কলকাতার বাইরে বিভিন্ন নামী প্রতিষ্ঠানে পড়ার হাতছানি এড়িয়েছেন অনেকে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘কাঁটাকল’ ক্যাম্পাসে তাঁর অর্থনীতির ক্লাসের খ্যাতি পৌঁছেছিল এমন স্তরেই। অনাড়ম্বর মানুষটিও কখনও কাঁটাকল ছেড়ে যাননি। তৈরি করেছেন অগণিত ছাত্রছাত্রী। প্রজ্ঞার নীরবতায় বিশ্বাসী ছিলেন। ২৫ মে চলে গিয়েছেন অরূপ মল্লিক। অগণিত ছাত্রছাত্রীর দাবি মেনে ১৪ জুলাই কাঁটাকল ক্যাম্পাসে বিকেল তিনটের সময়ে তাঁর স্মরণসভা। উদ্যোক্তা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগ।

মুর্শিদাবাদি

হিন্দুস্থানি মার্গ সংগীতে হাতেখড়ি আট বছর বয়সে, মুর্শিদাবাদে। সেখানে বেড়ে ওঠাটাই সংগীতের নিজস্ব পথ খুঁজে পেতে সৌম্যদীপ সিকদারকে উৎসাহ জুগিয়েছে। সৌম্যদীপ মুর্শিদাবাদি নামে পরিচিত এই যুবক মুম্বইয়েই ২০১৩-য় শুরু করেন ওঁর যৌথ উদ্যোগ ‘মুর্শিদাবাদি প্রজেক্ট’। গানের স্বাতন্ত্র্য হারিয়ে ফেলা ফিউশন নয়, মূল গানকে আধার করে নতুন সাউন্ডস্কেপ তৈরি করাই যার প্রাথমিক লক্ষ্য। ধীরে ধীরে মুম্বইয়ে শো করতে লাগলেন পৃথ্বী থিয়েটার, এনসিপিএ টাটা থিয়েটার, ব্লু ফ্রগ-এর মতো বড় বড় মঞ্চে। এখন নতুন কাজ সারা দেশ ঘুরে বিভিন্ন ‘কাওয়াল’দের কাছে গিয়ে তাঁদের গানের জগৎটাকে জানা এবং একত্রে সে সব গান রেকর্ড করা (সঙ্গের ছবি)। ইন্টারনেটে প্রাপ্ত সে সব গানের অন্য রূপভেদগুলোর চেয়ে যার মেজাজ অনেক মাটির কাছাকাছি। ফেসবুক এবং ইউটিউবেই প্রকাশ করা হচ্ছে গানগুলো। মোজো ফিল্মসের সুমন মজুমদার ভিডিয়ো রেকর্ড করছেন, রাঘব সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের দায়িত্বে। গেল ইদেই নতুন কাজটি রিলিজ করেছেন সৌম্য। যেটি কাওয়ালি গানের দল কুতুবি ব্রাদার্সের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ‘তাজদার-এ-হারাম’ গানটিকে ঘিরে। সৌম্যর কথায়, ‘মুর্শিদাবাদি প্রজেক্ট একটি একক উদ্যোগ। কনসার্টে গেয়ে কিছু রোজগার করে সেই টাকায় নতুন পরিকল্পনাটির মতো স্বাধীন সৃষ্টিশীল কাজে হাত লাগাই। এ ভাবেই বিশ্বায়িত দর্শকের কাছে পৌঁছতে চাই।’ এমন কনসার্টে সৌম্যদীপকে মাঝে মাঝেই দেখা গিয়েছে কলকাতায়, দেখা যাবে আবারও।

উপেক্ষিত

জন্মশতবর্ষ পেরিয়ে গেল তাঁর, ৭ জুলাই জন্মদিন ছিল রাজেন তরফদারের (১৯১৭-’৮৭)। পঞ্চাশের দশকে বিরাট ঝুঁকি নিয়ে জে ওয়ালটার টমসন-এ চিফ আর্ট ডিরেক্টরের চাকরি ছেড়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন ফিল্মে। শুধুমাত্র অনাদৃত উপেক্ষিত নিষ্পেষিত মানুষগুলির জীবনকাহিনি ছবির ভিতর দিয়ে দর্শকের কাছে পৌঁছবেন বলে। শিল্পের স্বকীয়তা থেকে কখনও সরেননি প্রচারবিমুখ এই পরিচালক। নিজের ছবির বাইরেও তরুণ মজুমদারের ‘সংসার সীমান্তে’ বা ‘গণদেবতা’-র চিত্রনাট্য লিখেছেন, অভিনয় করেছেন মৃণাল সেনের ‘আকালের সন্ধানে’ আর ‘খণ্ডহর’-এ। বাঙালির গর্বের এই মানুষটাকে মনে পড়িয়ে দিতেই নন্দন-এর সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ৭-৮ জুলাই তাঁর অন্তরীক্ষ, গঙ্গা, পালঙ্ক, নাগপাশ দেখানোর আয়োজন করেছিল রাজেন তরফদার জন্মশতবর্ষ কমিটি, সঙ্গে ছিল আলোচনা।

অগ্নিজাতক

এত খারাপ হয়ে গিয়েছে পৃথিবীটা, খেয়োখেয়িতে ভরে গিয়েছে... মনে হয় যেন কেবলই একটা হিংসার বাতাবরণ তৈরি করে যাচ্ছি পরবর্তী প্রজন্মের জন্যে।’ এই বিপন্নতা থেকেই অর্পিতা ঘোষ উষ্ণিক-এর নতুন নাটক ‘অগ্নিজাতক’-এ মায়ের চরিত্রে। একই স্বর নাট্যকার নির্দেশক ঈশিতা মুখোপাধ্যায়ের: ‘গোটা দুনিয়া জুড়ে শিশু, নারী, নিরীহ মানুষজনের ওপর ক্রমাগত ভায়োলেন্স নেমে আসছে, যুদ্ধ-বিভীষিকা পরিবেশ-দূষণে পৃথিবী আর বাসযোগ্য থাকছে না। এক ঝাঁক তরুণ ছেলেমেয়েকে নিয়ে সেই সংকটই মঞ্চস্থ করছি। বাবু দত্তরায় গম্ভীরা ভট্টাচার্য শুভজিৎ বক্সি শুভাশিস মুখোপাধ্যায়ও আছেন অর্পিতার সঙ্গে।’ প্রথম অভিনয় ১৫ জুলাই সন্ধে সাড়ে ৬টায় মিনার্ভায়। সেখানেই প্রতি মাসের তৃতীয় শনিবার মঞ্চস্থ হবে নাটকটি। অনেক দিন বাদে আবার অভিনয়ে ফিরছেন অর্পিতা, ‘বড় চরিত্রে তো বটেই। তবে দুর্ঘটনার পর সেরে উঠে কুড়ি মিনিটের একটা মনোলগ করেছি দেবেশ চট্টোপাধ্যায়ের নির্দেশনায়। নাটক লেখা আর পরিচালনার পাশাপাশি অভিনয় করতেও যে ভীষণ ভালবাসি।’ রাজনৈতিক হত্যা, ঘরে বাইরে, অচলায়তন, আপাতত এই ভাবে দু’জনের দেখা হয়ে থাকে... এই সব নাটকে অভিনীত চরিত্রগুলি তাঁর খুব পছন্দের। ‘সেই শুরু থেকে শিখছি শাঁওলীদির (মিত্র) কাছে, এখনও শিখে চলেছি; আর নাটকের নতুন নতুন কাজ শিখছি দেবেশের কাছে।’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kolkatar Korcha
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE