Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

কলকাতার কড়চা: ফিরে দেখা ইতিহাস

শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০১৯ ০০:৪২
Share: Save:

আমাদের দেশের সরকার এক দিকে যেমন বল্লভভাই পটেলের বিরাট মূর্তি গড়ছে, তেমনই অন্য দিকে জওহরলাল নেহরুকে কোনও না কোনও ভাবে খাটো করার চেষ্টাও চালাচ্ছে। ভারসাম্যের এই অভাব দেশের মানুষকে কোথাও বিভ্রান্ত করছে, তাই আমাদের নতুন নাটকে ইতিহাসকে ফিরে দেখা।’’ বলছিলেন কৌশিক সেন, ‘স্বপ্নসন্ধানী’র কর্ণধার। ‘‘আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামে পটেল, নেহরু আর মহাত্মা গাঁধী... তিন জনেরই অবদান অসামান্য, তবুও স্বাধীনতার পর হত্যা করা হল গাঁধীজিকে। মহান এই চরিত্রত্রয়ী কিছু না কিছু ভুল তো করেছিলেন নিশ্চয়ই, সেটাই স্বাভাবিক, প্রতিটি ব্যক্তিই তো দোষেগুণে ভরা। তাঁদের ভুলেই ঘটে গিয়েছিল দেশভাগ, যার মাসুল আজও গুনতে হচ্ছে আমাদের। এ যেন গ্রিক ট্র্যাজেডি, নায়কদের ত্রুটিতেই ঘনিয়ে এল এক ভয়াবহ পতন।’’ তাঁর এই ভাবনার আধার হিসেবেই কৌশিকের নির্দেশনায় মঞ্চস্থ হচ্ছে উৎপল দত্ত রচিত ‘একলা চলো রে’, ‘‘দেশভাগ ও ছিন্নমূল মানুষের উদ্বাস্তু জীবনই এ-নাটকের মূল নায়ক, ইতিহাসের এই দিকটিতে দর্শকের দৃষ্টি ফেরাতেই আসন্ন নির্বাচনের আগে নাটকটি মঞ্চস্থ করা জরুরি মনে হয়েছে আমাদের।’’ প্রথম অভিনয় ৫ এপ্রিল জ্ঞানমঞ্চে সন্ধে সাড়ে ৬টায়। গাঁধীজি, পটেল, নেহরু, কস্তুরবার ভূমিকায় অশোক মুখোপাধ্যায়, দেবশঙ্কর হালদার, সুরজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, রেশমী সেন, আর লর্ড মাউন্টব্যাটেন স্বয়ং কৌশিক (সঙ্গে তাঁদের মহড়ার ছবি)। উৎপল দত্তের অভিনয়ে, পিএলটি-র প্রযোজনায় আশির দশকের শেষে নাটকটি প্রথম দেখার স্মৃতিতে ফেরেন কৌশিক, ‘‘ফ্যাসিনেটিং টেক্সট, কতখানি দূরদর্শী ছিলেন উৎপলবাবু বোঝা যায়। সামান্যই রদবদল করেছি মূল নাটকে। বাবার (শ্যামল সেন) শিক্ষক ছিলেন তিনি, সেই অর্থে আমারও শিক্ষক, তাঁকে নিয়ে চর্চাও বড় কম। তাঁর প্রতি এই ট্রিবিউট আদতে নতুন প্রজন্মের কাছে তাঁর ভাবনাকে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা।’’

প্যারীচাঁদের বাংলা

‘‘প্যারীচাঁদ মিত্র আদর্শ বাংলা গদ্যের সৃষ্টিকর্ত্তা নহেন, কিন্তু বাঙ্গালা গদ্য যে উন্নতির পথে যাইতেছে, প্যারীচাঁদ মিত্র তাহার প্রধান ও প্রথম কারণ।’’ এ মন্তব্য বঙ্কিমচন্দ্রের। প্যারীচাঁদ মিত্র (১৮১৪-৮৩) হিন্দু কলেজের ছাত্র ছিলেন, ডিরোজ়িয়ো তখন সেখানে শিক্ষক। সমকালীন বাংলার বহু বিদ্বৎ-প্রতিষ্ঠান এবং যাবতীয় সংস্কার আন্দোলনে সক্রিয় ভাবে যুক্ত থেকেছেন প্যারীচাঁদ, ইংরেজি ও বাংলা দুই ভাষাতেই প্রচুর লিখেছেন। দ্বিশতজন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ইতিমধ্যেই প্রকাশিত হয়েছে তাঁর ইংরেজি ও বাংলা রচনার সম্ভার। উনিশ শতকে যাঁরা বাংলা ভাষার নব-নির্মাণ ঘটিয়েছিলেন, প্যারীচাঁদ তাঁদের অন্যতম। তাঁর রচনার সামাজিকতা ও নান্দনিকতা দু’টি দিকই উঠে আসবে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলার অধ্যাপক বিশ্বজিৎ রায়ের ‘প্যারীচাঁদ মিত্র ও তাঁর চিন্তার উত্তরাধিকার’ শীর্ষক আলোচনায়। ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হলের আয়োজনে, লাইব্রেরি ভবন সভাকক্ষে, ২৫ মার্চ সন্ধে ৬টায়।

নরেশ গুহ স্মরণে

পটনায় গঙ্গাতীরে হাঁটছেন মহাত্মা গাঁধী। তাঁর এক হাত কবি অমিয় চক্রবর্তীর কাঁধে, অন্য হাতটি কাঁধে নিয়েছেন নরেশ গুহ। আলোচনা চলছে বিহার-দাঙ্গার পরিস্থিতি ও ত্রাণকার্য নিয়ে। ১৯৪৭-এর এপ্রিলের দিনলিপিতে নরেশ গুহ লিখছেন, ‘‘শান্ত কণ্ঠস্বর। এই প্রভাতের সকল শান্তি যেন তাঁর কণ্ঠে ক্ষরিত হচ্ছিল।’’ গাঁধীজি দিল্লি ফেরার পরেও নরেশ গুহ কোয়েকার সেবাদলের হয়ে বিহারে থেকে যান ত্রাণকার্যের জন্য। সেই দিনলিপি এ বারে শুভাশিস চক্রবর্তীর সম্পাদনায় গ্রন্থাকারে। দাঙ্গার পরেকার দিনলিপি এবং গান্ধী মহারাজ (উড়োপত্র) বইটিতে এ ছাড়া থাকছে ‘বাপু’ নামের একটি রচনা এবং নরেশকে লেখা বুদ্ধদেব বসুর প্রাসঙ্গিক একটি চিঠি-কবিতা। ২৮ মার্চ জীবনানন্দ সভাঘরে, সন্ধে ৬টায় অহর্নিশ এবং ফণিভূষণ স্মৃতি সংসদ আয়োজিত অনুষ্ঠানে বইটি উদ্বোধন করবেন শঙ্খ ঘোষ, থাকছে সেটি নিয়ে আলোচনা। ধর্মীয় হিংসা, উগ্র দেশপ্রেমের নামে বাক্‌স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়ার চক্রান্ত দেশ জুড়ে যে অগ্নিকুণ্ড তৈরি করে চলেছে, তারই প্রেক্ষিতে ‘সংঘং সরণং গচ্ছামি?’ শীর্ষক নরেশ গুহ স্মারক বক্তৃতা দেবেন সৌরীন ভট্টাচার্য। স্মৃতিচারণ করবেন স্বপনকুমার ঘোষ।

সাম্রাজ্য ও শ্রমিক

১৯২২ সালে ইংল্যান্ডের টিলবেরি থেকে যাত্রা করে এসএস ইজিপ্ট। গন্তব্য ফ্রান্সের মার্সেই হয়ে সে কালের বোম্বাই। যাত্রিসংখ্যা ৪৪, নাবিক ছিলেন ২৯৪ জন। ইংলিশ চ্যানেলে ঘন কুয়াশায় ফরাসি জাহাজ ‘সেইন’ তাকে ধাক্কা মারায় ইজিপ্ট ডুবে যায়, ১২জন যাত্রী ও ৮৪জন নাবিকের সলিলসমাধি হয়। ওই নাবিকদের বেশির ভাগই ছিলেন ‘লস্কর’, অর্থাৎ ভারতীয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইংল্যান্ডে তুমুল বিক্ষোভ ও হইচই হয়। পরাধীন ভারতের মানুষের (এখানে লস্কর) প্রতি ব্রিটিশ শাসকদের বৈষম্যমূলক আচরণের কথাও সামনে এসে যায়। ২৯ মার্চ বিকেল সাড়ে চারটেয় সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যালকাটা রিসার্চ গ্রুপের ‘জয়ন্ত দাশগুপ্ত স্মারক বক্তৃতা’য় ইজিপ্ট জাহাজের দুর্ঘটনার প্রেক্ষিতে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যে ভারতীয় শ্রমিকদের জীবনযাপনের কথা আলোচনা করবেন গ্যোটিংগেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের অধ্যাপক রবি আহুজা। তিনি দীর্ঘ দিন ধরেই ব্রিটিশ ভারতের সামাজিক ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করছেন।

আধুনিক নৃত্য

স্কুলে হাজার খানেক ছাত্রের মধ্যে সে-ই একমাত্র ছেলে যে নাচত। ‘‘স্কুল স্পোর্টসের সময় মাইকে ঘোষণা হচ্ছে, যারা ছুটবে তারা মাঠের উত্তর দিকে যাও, যারা লং জাম্প দেবে তারা অমুক দিকে, যারা নাচবে, তারা অমুক দিকে। আমি নাচের দিকে যেতেই এক জন স্যর আমায় আটকে দিলেন। তাঁর দোষ নেই, সে দিকে যে শুধু মেয়েরাই যাবে, এটাই তিনি জানতেন।’’ এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন কস্ট অ্যাকাউন্ট্যাট তথা নৃত্যশিল্পী-অভিনেতা সুদর্শন চক্রবর্তী। আধুনিক নৃত্যে তিনি দেশেবিদেশে সমাদৃত। চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন। তাঁর ভরতনাট্যম শিক্ষা বন্দনা দাশগুপ্তের কাছে, কথাকলি গুরু গোবিন্দন কুট্টির কাছে। আধুনিক নৃত্যের প্রশিক্ষণ নানা গ্লেসন, মিচেল ক্যাসানোভাস আর ক্রিস্টোফার লেখনার-এর কাছে। তাঁর দল ‘স্যাফায়ার ক্রিয়েশন’ ছাব্বিশে পা দিল। সেই উপলক্ষে ৩১ মার্চ সন্ধে ৭টায় মিনার্ভা থিয়েটারে ‘ড্রিমস উইথ উইংস’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন তাঁর দলেরই পঞ্চাশ জন ছাত্রছাত্রী।

মহাজনি পদ

লোকজ সংস্কৃতি আমাদের শিকড়, লোকজ সঙ্গীত সমাজের দর্পণ। এই সঙ্গীতকে সমৃদ্ধ ও জনমুখী করেছেন এমন মহাজনের সংখ্যা বড় কম নয় আমাদের গ্রামীণ সঙ্গীতের পরিমণ্ডলে। লালন ফকিরের পাশাপাশি গগন হরকরা, ফিকিরচাঁদ, রাধারমণ, হাসন রাজা, পাঞ্জু শা, দুরবিন শা, দুদ্দু শা, বিজয় সরকারের মতো মহাজনের সৃষ্টির মাধ্যমেই লোকজ গানের বিস্তার হয়েছে। এই রকম পরিচিত ও স্বল্পপরিচিত লোকজ গানের মহাজনদের কিছু পদ শোনাবেন লোকসঙ্গীত গবেষক ও শিল্পী তপন রায়। সঙ্গে সেই সব মহাজন ও তাঁদের পদ সম্পর্কে বলবেন বিভাস চক্রবর্তী। ৩০ মার্চ সন্ধে ৬টায় গোলপার্ক রামকৃষ্ণ মিশনের বিবেকানন্দ হলে অনুষ্ঠান ‘লোকসঙ্গীতে মহাজনী পদ’।

শতবর্ষ পরে

n নোবেলজয়ী লুইজি পিরানদেল্লো (১৮৬৭-১৯৩৬) ছিলেন ইটালির আধুনিক সাহিত্যের অন্যতম পুরোধা। যদিও তিনি খাস ইটালিয়ান নন, জন্ম তাঁর সিসিলিতে। জীবনে যখনই যেখানে থেকেছেন, সিসিলির নীল আকাশ, উজ্জ্বল রৌদ্র, সেখানকার অজ্ঞ সরল আবেগপ্রবণ মানবপ্রকৃতি তিনি কখনও ভুলতে পারেননি। তিনি সাহিত্যজীবন শুরু করেছিলেন কাব্যকলার প্রাঙ্গণে। তাঁর হাত ধরেই নাটকে রোম্যান্টিক যুগের শেষ হয়ে শুরু হয় ‘গ্রটেস্ক’ যুগ। ‘গ্রটেস্ক’ নাট্যের শ্রেষ্ঠ উদ্গাতা রূপে তিনি জগদ্বিখ্যাত। তাঁর মুনশিয়ানা হল মানুষের একক অস্তিত্বকে এক প্রতিকূল, বিশৃঙ্খল প্রেক্ষিতে রোপণ করে ব্যক্তির মনস্তাত্ত্বিক সঙ্কটকে নাটকীয়তায় তুলে ধরা। পিরানদেল্লোর ১৯২০ সালে লেখা ‘অল ফর দ্য বেস্ট’ নাটকের অনুসরণে চন্দন সেনের বাংলা রূপান্তর ‘ভালো লোক’ এ বার মেঘনাদ ভট্টাচার্যের নির্দেশনায় ‘সায়ক’ নাট্যদল তাদের ২৬তম পূর্ণাঙ্গ প্রযোজনা হিসেবে মঞ্চস্থ করবে অ্যাকাডেমিতে ২৭ মার্চ সন্ধে সাড়ে ৬টায়। পরবর্তী অভিনয় গিরিশ মঞ্চে ৩০ মার্চ সন্ধে সাড়ে ৬টায়। সঙ্গে মহড়ার ছবি।

সুবর্ণজয়ন্তী

দেশভাগের ধাক্কায় যাঁরা এ পারে চলে এসেছিলেন, তাঁদের জীবনে দারিদ্র, অসম্মান, নিরন্তর লড়াইয়ের চাপেও চারুকলার পরিসর কিন্তু একেবারে মুছে যায়নি। সেই পরিসরেই ১৯৬৯ সালে প্রসিদ্ধ তন্ত্রসাধক সর্বানন্দের পঞ্চদশ পুরুষ যদুনাথ শাস্ত্রীর ইচ্ছায় কলকাতার দক্ষিণ শহরতলিতে ‘সর্বানন্দ সংগীতসমাজ’ প্রতিষ্ঠা করেন দিলীপকুমার চৌধুরী। ১৯৭১-৭২-এর ঝঞ্ঝার মধ্যেও পনেরোটি সঙ্গীতের আসর আয়োজিত হয়েছিল! সমাজের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহযোগিতায় ২৯ মার্চ সন্ধে ৬টায় গান্ধী ভবনে অনুষ্ঠান, দ্বিতীয় ‘দিলীপকুমার চৌধুরী স্মারক সংগীত বক্তৃতা’ দেবেন তেজেন্দ্রনারায়ণ মজুমদার (পরিবেশন-সহ)। বক্তৃতামালার প্রথম ভাষণটির (সৌরীন ভট্টাচার্যের আমার সংগীতবোধ-শিক্ষা) সঙ্গে ‘সুবর্ণজয়ন্তী সঙ্কলন’ হিসেবে আশির দশকের শেষে সংগীতসমাজের প্রতিষ্ঠা দিবসে প্রদত্ত জ্ঞানপ্রকাশ ঘোষের দু’টি ভাষণের গ্রন্থরূপও (আমাদের সংগীতসংস্কৃতি। দে’জ) প্রকাশ করবেন শঙ্খ ঘোষ।

পথিক-প্রেমিক

বসন্তের উত্তরী অরুণ আকাশে, তার চরণধ্বনি দখিনা বাতাসে। তবে তার করুণা ক্ষণকাল তরে। এই বসন্তের রূপরসগন্ধ আমরা এই ভাবে অনুভব করতে পারি শুধু সেই মানুষটিরই সৌজন্যে, যাঁকে ছাড়া আমরা অনেক কিছুই পেতাম না। গানে গানে রবীন্দ্রনাথ উন্মোচিত করেছেন কেবল বসন্তের রঙিন প্রকৃতিকেই নয় (কবির চিত্রায়ণে বসন্তে ফুল ফোটে আবার ঝরেও যায়), বা তার প্রেমিক সত্তাকেই নয়, দেখিয়েছেন তার অচেনা পথিকরূপও। রবীন্দ্রনাথের পথিক ও প্রেমিক বসন্ত ‘হৃদয়-পূর্ণ-করা’ আবার ‘সর্বনেশে’ও বটে, বিচ্ছেদে যার খণ্ড মিলন পূর্ণ হয়। এই পথিক-প্রেমিক বসন্তকে নিয়েই ‘বৈতালিক’-এর গীতিআলেখ্য ‘ওগো নবীন রাজা’, ৩ এপ্রিল সন্ধেয় রবীন্দ্রসদনে। গানে দেবারতি সোম, স্বপন সোম ও বৈতালিক গোষ্ঠী। পাঠে জগন্নাথ বসু, ঊর্মিমালা বসু।

বিশ্ব ঐতিহ্য

গোটা ভারত জুড়ে ছড়িয়ে আছে অসংখ্য ঐতিহাসিক স্থাপত্য। তার মধ্যে অল্প কয়েকটিকেই ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসেবে তকমা দিয়েছে। একটা স্থাপত্য ঐতিহ্যবাহী নিদর্শন রূপে নির্দিষ্ট হয় কোন মানদণ্ডে? কী ভাবেই বা তার বিচার হয়? এই নিয়েই ৩ এপ্রিল বিকেল সাড়ে পাঁচটায় রামকৃষ্ণ মিশন ইনস্টিটিউট অব কালচার, গোলপার্ক-এর শিবানন্দ হলে ছবি-সহ বলবেন রূপেন্দ্রকুমার চট্টোপাধ্যায়। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতত্ত্ব বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক, বর্তমানে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাসের অধ্যাপক। প্রধান অতিথি দুর্গা বসু কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতত্ত্ব বিভাগের প্রাক্তন প্রধান। আয়োজক ‘কলকাতা আর্ট লাভার্স অরগানাইজ়েশন’ (আলো)। শিল্পী নন, শিল্পমনস্ক মানুষদের নিয়েই এই সংস্থা, বললেন আলো-র সম্পাদিকা ঋতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আলো-র অধিকাংশ সদস্য ইনস্টিটিউটের আর্ট অ্যাপ্রিসিয়েশন কোর্সের প্রাক্তনী। প্রতি বছর তাদের বার্ষিক সভায় প্রকাশিত হয় সংস্থার বার্ষিক পত্রিকাও।

স্বাধীন ভাবনা

কলকাতার মানুষজন ক্রমশই সড়গড় হয়ে উঠছেন তথ্যচিত্র আর স্বল্পদৈর্ঘ্যের কাহিনিচিত্র দেখার অভ্যেসে। ব্যতিক্রমী যে ক’টি উৎসব অনুষ্ঠিত হয় এ-শহরে, তার একটি এ বার পা দিল দ্বিতীয় বছরে: সাউথ এশিয়ান শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল। দক্ষিণ এশিয়ার নানান দেশ থেকে সেরা ছবির সম্ভারে সেজে উঠেছে উৎসবটি, কোনও রকম সরকারি বা বেসরকারি অর্থানুকূল্য ছাড়াই। গত ১৮ মার্চ শুরু হয়েছে নন্দনে, চলবে ৩১ অবধি, প্রতি দিন ১২-৮টা। যে কোনও রকম নিগড়, ব্যক্তিগত কিংবা সামাজিক, ভেঙে বেরোনোর ছবিই উৎসব জুড়ে। ভারতের বিভিন্ন অঞ্চল বা বাংলাদেশ থেকে স্বাধীন ভাবনার ছবি-করিয়েরা ক্রমাগত আসছেন এ-উৎসবে যোগ দিতে। যেমন এসেছেন কঙ্কণা চক্রবর্তী (সঙ্গের ছবিতে)। এ দেশের আক্রান্ত মেয়েদের সাহসী অথচ দুঃসহ জীবন নিয়ে প্রথম ছবিটি করার পর চলে যান নিউ ইয়র্ক ফিল্ম অ্যাকাডেমিতে অভিনয়ে মাস্টার্স করতে, এখন ঠাঁই লস অ্যাঞ্জেলেস-এ। অভিনয়ের সঙ্গে চলছে স্বাধীন নিরীক্ষামূলক ছবি তৈরির কাজ। তাঁর ‘রিটেন বাই?’ (সব্যসাচী চক্রবর্তী অভিনীত) দেখানো হল গতকাল এ-উৎসবে। ‘‘অভিনেতা হিসেবে ফার্স্ট লাভ থিয়েটার, আর ফিল্মমেকিং-এ ফার্স্ট লাভ ডকুমেন্টারি, এ দু’য়েই অনুভব করি সত্য।’’ বললেন কঙ্কণা। সমাপ্তি অনুষ্ঠানে থাকবেন ব্রাত্য বসু ও কিরণ শান্তারাম। উদ্যোক্তা ফেডারেশন অব ফিল্ম সোসাইটিজ়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kolkatar Korcha Korcha Kolkata
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE