Advertisement
E-Paper

কলকাতার কড়চা: পঞ্চাশে গুগাবাবা

স্মৃতিতে ফিরছিলেন সন্দীপ রায়। ১৯৬৯-এর মে মাসে মুক্তি পেল এ ছবি, ভেঙে ফেলেছিল আগেকার সমস্ত জনপ্রিয় বাংলা ছবির রেকর্ড, পঞ্চাশ পূর্ণ হবে এ বছর।

শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০১৯ ০০:০০

পথের পাঁচালী-র পর আবার বোড়াল গেলেন সত্যজিৎ, ভাল বাঁশবন ছিল সেখানে। গুপী গাইন বাঘা বাইন-এর শুটিং শেষ হয়ে গেলেও যান্ত্রিক গোলযোগের কারণে ফের বাঘের সঙ্গে গুপী-বাঘার দৃশ্যটা তুলতেই সেখানে যাওয়া। যেই না খাঁচার দরজা খোলা, অমনি সে বাঘ লাফিয়ে একটা হুঙ্কার দিয়ে চার্জ করল গ্রামের দেড়শো দর্শকের দিকে। সত্যজিৎ লিখছেন ‘‘ম্যাজিকের মতো বাঘ এই আছে এই নেই... দেড়শো ছেলেমেয়ে বুড়োবুড়ি এই আছে এই নেই! বাঘ অবিশ্যি কলারে টান পড়ার জন্য গ্রামের লোক অবধি পৌঁছাতে পারেনি; কিন্তু সেটা আর আগে থেকে কে বুঝবে? এরকম পরিত্রাহি পিটটান, আর তারপরে ওই অত লোকের একসঙ্গে ফ্যাকাশে মুখে থরহরি কম্প— এ কোনওদিন ভুলব না।’’ সত্যজিতের গুগাবাবা-ও ভুলতে পারেননি কেউ। ‘‘আসলে ও রকম ছবি বাবাও আগে যেমন করেননি, তেমনই ও রকম ছবি আগে কখনও তৈরিও হয়নি এখানে।’’ স্মৃতিতে ফিরছিলেন সন্দীপ রায়। ১৯৬৯-এর মে মাসে মুক্তি পেল এ ছবি, ভেঙে ফেলেছিল আগেকার সমস্ত জনপ্রিয় বাংলা ছবির রেকর্ড, পঞ্চাশ পূর্ণ হবে এ বছর। ‘‘গুগাবাবা আধুনিক তো বটেই, অসম্ভব সমকালীনও। যে অস্থির সময়টায় আমরা এখন দাঁড়িয়ে, সেখানে কী ভীষণ প্রাসঙ্গিক হাল্লারাজার সেনাদের উদ্দেশে গুপীর গান: তোরা যুদ্ধ করে করবি কী তা বল...।’’ মনে হয়েছে অর্পিতা ঘোষের। অষ্টম কলকাতা আন্তর্জাতিক শিশু কিশোর চলচ্চিত্র উৎসবের অধিকর্তা ও সে উৎসবের আয়োজক শিশু কিশোর আকাদেমির সভাপতি হিসেবে তিনি উদ্যোগী সন্দীপ রায়ের সম্পাদনায় গুগাবাবা স্মারক সঙ্কলন প্রকাশে। সঙ্গের ছবিতে তার প্রচ্ছদ, ১৯৬৩-তে উপেন্দ্রকিশোরের শতবর্ষ-সঙ্কলনে এটি এঁকেছিলেন সত্যজিৎ (সোমনাথ রায়ের সৌজন্যে)। ‘‘এ ছাড়াও বিশ্বের সায়েন্স ফিকশন ফিল্ম নিয়ে প্রদর্শনী গগনেন্দ্র প্রদর্শশালায়। সেখানেও জোর বিজ্ঞান ও বিজ্ঞানীর নৈতিক দায়িত্বের ওপর, যার পুরোধা প্রফেসর শঙ্কু।’’ জানালেন অর্পিতা। নন্দন চত্বর-সহ সারা কলকাতা জুড়ে ২০-২৭ জানুয়ারির এই উৎসবে ত্রিশটিরও বেশি দেশের দু’শোরও বেশি ছবি। উদ্বোধনী ছবি লাদাখের— ‘ওয়াকিং উইথ দ্য উইন্ড’, মুখ্য শিশু অভিনেতা সোনাম উদ্বোধন করবে উৎসবের। বেরোবে ব্রোশিয়োর, নিয়মিত বুলেটিন ও বিশিষ্টদের ভাললাগা ছবি নিয়ে আলোচনার সঙ্কলন।

বিরাশিতে পা

‘‘নবনীতা তার মাথা নুয়ে আছে,/ ত্রেতা যুগ থেকে আমরা ক’জন নেমে এসে দলে দলে/ তাকে ঘিরে আছি আশীর্বাদের ছলে’’— লিখেছেন অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত, তাঁর ‘প্রথম যুগের ছাত্রী’ নবনীতা দেব সেনকে নিয়ে। ১৯৫৯-এ প্রথম বই প্রথম প্রত্যয় কাব্যগ্রন্থ দিয়ে বাংলা সাহিত্যে প্রত্যয়ী যাত্রা শুরু নবনীতার, ১৯৭৬-এ শারদীয় আনন্দবাজারে লিখলেন আমি অনুপম। এটিই নকশাল আন্দোলন নিয়ে লেখা প্রথম বাংলা উপন্যাস। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে বুদ্ধদেব বসু প্রতিষ্ঠিত তুলনামূলক সাহিত্য বিভাগের প্রথম বর্ষের এই ছাত্রীটির গবেষণার বিষয় ছিল সীতার বিভিন্ন আখ্যান। পড়িয়েছেন সেখানেই, সেই সঙ্গে বিশ্বের অসংখ্য বিশ্ববিদ্যালয়ে। প্রবন্ধ কবিতা গল্প উপন্যাস-সহ বাংলা ও ইংরেজিতে শতাধিক বইয়ের লেখিকা নবনীতা অকাদেমি, পদ্মশ্রী পুরস্কারে সম্মানিত। জন্ম ১৯৩৮-এর ১৩ জানুয়ারি, এ বার পা রাখলেন বিরাশিতে। সঙ্গে তাঁর আঠেরো বছরের জন্মদিনের ছবি, ‘অহর্নিশ’-এর সৌজন্যে।

শ্রদ্ধার্ঘ্য

‘‘ছবির পর্দায়... জীবনের প্রতিচ্ছবি। আর তাই আমি চাই। চাই নতুন মতাদর্শের সুস্থ ইঙ্গিত।’’ লিখেছেন মৃণাল সেন তাঁর ‘দর্শক সমাচার’ প্রবন্ধে, ১৯৫৩-র ফেব্রুয়ারিতে, সলিল চৌধুরী সম্পাদিত প্রথম বছরের ‘গণনাট্য’ পত্রিকায়। অগ্রন্থিত এই রচনাটি আর তাঁর পরিচালিত ‘প্রতিনিধি’ ছবির বুকলেটের প্রতিলিপি নিয়ে একটি পুস্তিকা প্রকাশ করছে উত্তরপাড়া জীবনস্মৃতি ডিজিটাল আর্কাইভ (বিন্যাস ও আলোকচিত্র অরিন্দম সাহা সরদার)। চিত্রবাণী-তে ১৮ জানুয়ারি বিকেল ৪টেয়। মৃণাল সেনকে নিয়ে এই শ্রদ্ধার্ঘ্যে তাদের সঙ্গে চিত্রবাণী ও ফোকাস। সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় বলবেন, ‘ইতিহাসের পাণ্ডুলিপি: মৃণাল সেন’। দেখানো হবে ‘চালচিত্র’। অন্য দিকে ১৭ জানুয়ারি সন্ধে ৬টায় ম্যাক্সমুলার ভবনে গ্যোটে ইনস্টিটিউট ও কল্পনির্ঝর ফাউন্ডেশন-এর যৌথ উদ্যোগে আলোচনাসভা: ‘এচিং দ্য ট্রুথ— মৃণাল সেন’। বলবেন অপর্ণা সেন, অঞ্জন দত্ত, ধৃতিমান চট্টোপাধ্যায়, এস ভি রামন ও শমীক বন্দ্যোপাধ্যায়। ইতিহাসের প্রেক্ষিতে মৃণাল সেনের ছবির নিহিত দর্শন, সত্য আর প্রাসঙ্গিকতা নিয়েই বলবেন বক্তারা।

জন্মদিনে

‘‘প্রতি জন্মদিনেই ওঁর মুখোমুখি হতে চান মানুষজন, তাঁরা আশাও করেন যে সে দিন কিছু একটা করবেন তিনি।’’ বলছিলেন সৌমিত্র-কন্যা পৌলমী। ১৯ জানুয়ারি চুরাশি পূর্ণ করে পঁচাশিতে পা দেবেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। ১৮ জানুয়ারি অ্যাকাডেমিতে সারা দিন ধরে তাঁর নাট্যানুষ্ঠান। সন্ধে সাড়ে ৬টায় ‘বিল্বমঙ্গল ঠাকুর’ নাটক পাঠ, বেশ কিছু বছর আগে এ নাটক মঞ্চস্থ করেন সৌমিত্র, ‘‘এ বার গিরিশচন্দ্র ঘোষের এই ক্লাসিক নাটকটি পাঠের ভিতর দিয়ে তাঁর অনন্য অভিনয়ের স্বাদ যেমন পাবেন দর্শক, তেমনই মঞ্চেও দেখতে পাবেন তাঁকে।’’ জানালেন পৌলমী— তাঁরই সামগ্রিক পরিকল্পনা। পাঠে পিতা-কন্যার সঙ্গে দেবশঙ্কর, সুদীপ্তা, সুরজিৎ, জগন্নাথ, ঊর্মিমালা, সীমা, সৌমিত্র মিত্র প্রমুখ। আয়োজনে মুখোমুখি।

জার্মান ছবি

আল্পসের কোলে ছবির মতো গ্রামে হাঁপানির উপশমে আসে এক মেয়ে, রাখালের সঙ্গে তার বন্ধুতার গল্প। ডিজিটাল মিডিয়া কী করে আজকের তরুণদের জীবন ও অস্তিত্ব ছেয়ে আছে, সেই নিয়ে থ্রিলার। বিশ শতকের জার্মান ভাস্কর-শিল্পীকে নিয়ে, কুড়ি বছর ধরে চলা দমন-পীড়নে জর্জর কঙ্গোর মানুষদের নিয়ে তথ্যচিত্র। ২০১৮ সালে পুরস্কার-পাওয়া এমনই মোট দশটি জার্মান ছবির উৎসব ‘দ্য জার্মান লেন্স’ আয়োজন করেছে গ্যোটে ইনস্টিটিউট ম্যাক্সমুলার ভবন। আছে গত বছর জার্মান ফিল্ম অ্যাওয়ার্ডস-এর সেরা ছবি ‘থ্রি ডেজ় ইন কিবেরন’; কেট ব্ল্যানচেট-অভিনীত নিরীক্ষামূলক ছবি ‘ম্যানিফেস্টো’; এ ছাড়াও ফিল্ম স্কুলের পড়ুয়াদের তৈরি ছবি। উৎসব ১৮-২০ জানুয়ারি, প্রথম দু’দিন নন্দন ২-এ, শেষ দিন ম্যাক্সমুলার ভবনে।

কৃষির ইতিহাস

গ্রামীণ সমাজকে ভেঙেচুরে, দেশীয় জীবিকার্জনের ধারাগুলির পুনর্বিন্যাস ঘটিয়ে পত্তন ঘটানো হয়েছিল ঔপনিবেশিক কৃষি-সমাজের। আর এই কৃষি-ঔপনিবেশিকতার স্বার্থে তৈরি হয়েছিল নতুন আইন, নতুন স্তর-বিভাজন। সামাজিক সম্পর্ক, গোষ্ঠীবিন্যাসও নতুন চেহারা নিল। এই গভীর ও আগ্রাসী পরিবর্তনের চেহারাটা তুলে ধরেছেন নীলাদ্রি ভট্টাচার্য, তাঁর সম্প্রতি প্রকাশিত দ্য গ্রেট অ্যাগ্রারিয়ান কঙ্কোয়েস্ট (পার্মানেন্ট ব্ল্যাক) বইয়ে। গত চার দশকে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অধ্যাপকের কাছে বহু তরুণ ইতিহাসবিদের গবেষণার গোড়াপত্তন হয়েছে, কিন্তু তাঁর নিজের গবেষণার পূর্ণাঙ্গ প্রকাশ এই প্রথম। কৃষির ইতিহাস যে একই সঙ্গে পরিবেশ, সমাজ, অর্থনীতি, আইন আর সংস্কৃতির ইতিহাস, সহজ ভাষায় সে কথা ভেবেছেন এবং ভাবিয়েছেন লেখক। আজ ১৪ জানুয়ারি বিকেল ৪টেয় যদুনাথ ভবনে এই বইটি নিয়ে আলোচনায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়, প্রাচী দেশপাণ্ডে, বোধিসত্ত্ব কর, উপল চক্রবর্তী প্রমুখের সঙ্গে থাকবেন নীলাদ্রি ভট্টাচার্য নিজেও।

শিল্পী-স্মরণ

পণ্ডিত অরুণ ভাদুড়ীর কণ্ঠের মাধুর্য ও বিস্তার ছিল অনবদ্য। ১৯৪৩ সালে মুর্শিদাবাদের প্রত্যন্ত গ্রামে জন্ম, শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে শিক্ষা উস্তাদ ইশতিয়াক হুসেন খান ও পরে পণ্ডিত জ্ঞানপ্রকাশ ঘোষের কাছে। আইটিসি-সঙ্গীত রিসার্চ অ্যাকাডেমিতে তিনি দু’দশকেরও বেশি শিক্ষা দিয়েছেন। তৈরি করেছিলেন নিজস্ব গায়কি। পেয়েছেন বঙ্গবিভূষণ-সহ নানা সম্মান। পণ্ডিত অরুণ ভাদুড়ী প্রয়াত হন গত ১৭ ডিসেম্বর। ১৭ জানুয়ারি বিকেল ৫টায় শিশির মঞ্চে তাঁর স্মরণসভা, তাঁর পরিবার এবং তাঁরই নামাঙ্কিত সংস্থা সুরসাধকের পক্ষ থেকে। তাঁর উপর নির্মিত তথ্যচিত্র ‘সুরসাধক’ও প্রদর্শিত হবে সে দিন।

ইতিহাসবিদ

এ বারের শীত অনেক পাতা ঝরিয়ে গেল। প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ, জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন অধ্যাপক, বিশ্বভারতীর প্রাক্তন উপাচার্য সব্যসাচী ভট্টাচার্যের স্মরণ অনুষ্ঠান ১৬ জানুয়ারি বিকেল ৪টেয়, এশিয়াটিক সোসাইটির বিদ্যাসাগর হলে। ঔপনিবেশিক অর্থনীতির ইতিহাস থেকে শুরু করে বাংলার রাজনৈতিক ইতিহাসে বিস্তৃত অধ্যাপক ভট্টাচার্যের গবেষণার ক্ষেত্রটি সুবিশাল। রবীন্দ্রনাথ ও গাঁধীর সম্পর্ক নিয়েও কাজ করেছেন তিনি। এশিয়াটিক সোসাইটির সংযোগে তিন খণ্ডে আধুনিক বাংলার ইতিহাস সম্পাদনার কাজটি শেষ করেছিলেন সবে। অন্য দিকে মধ্যযুগের ইতিহাস চর্চায় আজীবন ব্যাপৃত ছিলেন অনিরুদ্ধ রায়। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামীয় ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে অধ্যাপনার সঙ্গে মূলত ফরাসি সূত্র কাজে লাগিয়ে দীর্ঘ গবেষণা করেছিলেন। পশ্চিমবঙ্গ ইতিহাস সংসদের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন তিনি। আজ, ১৪ জানুয়ারি বিকেল ৪টেয় ইতিহাস সংসদের উদ্যোগে ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সহযোগিতায় আলিপুর ক্যাম্পাসের দশম তলে তাঁর স্মরণসভা।

বিনা মন্তব্যে

অমিতাভ ঘোষ স্বেচ্ছায় ফ্রেঞ্চকাট রেখেছেন। ‘‘ভাবলাম, অনেক দিন এক রকম আছি, একটু বদলে দেখা যাক’’, এক আড্ডায় বলছিলেন তিনি। ১৯৮৪ সালে ইন্দিরা গাঁধীর মৃত্যু নিয়ে একটি লেখা লিখেছিলেন। অমিতাভ তখন দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। সে দিন বিকেলে বাসে যাচ্ছেন, রাস্তায় দোকানপাটের শাটার পড়ে গিয়েছে, কয়েক জন মস্তান বাস থামিয়ে জিজ্ঞেস করল, এখানে কোনও শিখ আছে নাকি? ড্রাইভার এবং বাকি যাত্রীরা উত্তর দিলেন, না। এক শিখ যাত্রী তখন গুটিসুটি মেরে ভয়ে কাঁপছেন। সেই পুরনো কথা টানতেই মৃদুভাষী লেখক হাসলেন, ‘‘হ্যাঁ, সেটা অন্য একটা দেশ ছিল। কিন্তু এখন চার দিকে যা ঘটছে, দেশটাকে আর চিনতে পারি না।’’ জ্ঞানপীঠ পুরস্কারে সম্মানিত লেখক এ ভাবেই বিনা মন্তব্যে সেই দাঙ্গার সঙ্গে আজ গোরক্ষকদের তৈরি পরিস্থিতির ফারাক বুঝিয়ে দেন। জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে তাঁর সাম্প্রতিক বইয়ের কথাও উঠল। লেখক পরিষ্কার জানালেন, এখন আর জলবায়ু পরিবর্তন, শরণার্থী সমস্যা, ট্রাম্পের আমেরিকা— এ সব আলাদা সমস্যা বলে ভাবা যাবে না। এ সবের সমাধান এক সঙ্গেই ভাবতে হবে। প্রতিশ্রুতি দিলেন, আগামী জুন মাসে আবার আসবেন জন্মভূমির শহরে। তখনই প্রকাশিত হবে তাঁর নতুন উপন্যাস গান আইল্যান্ড। যে উপন্যাসের প্রধান চরিত্র দীন দত্ত নামে এক পুস্তকবিক্রেতা।

সম্মাননা

চার দশক আগে দক্ষিণ ভারতের মুদ্রা ব্যবস্থা নিয়ে প্রথম বই। সে বই আজও আকরের মর্যাদা পায়। পরে বিভিন্ন সময় এ বিষয়ে কাজ করলেও মুদ্রার জগতে আর পুরোপুরি ফেরেননি ব্রজদুলাল চট্টোপাধ্যায় (জন্ম ১৯৩৯), বিডিসি নামেই যিনি সুপরিচিত। আদি-ঐতিহাসিক থেকে আদি-মধ্যযুগের ইতিহাসের নানা দিগন্তে নিজেকে ছড়িয়ে দিয়েছেন জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা (১৯৭১-২০০৪), অন্য দিকে একের পর এক গবেষণাগ্রন্থ-প্রবন্ধ রচনা ও সম্পাদনায়। ইতিহাস চর্চায় ভূগোলের গুরুত্ব তাঁকে যেমন ভাবিয়েছে, তেমনই খুঁজেছেন রাজপুতদের উৎস। সামন্ততন্ত্র, নগরায়ণ ও গ্রামসমাজ নিয়ে নতুন চিন্তার দিশা দেখিয়েছেন তিনি। ভারতীয় সমাজে ‘অপর’ কারা, তথ্যভিত্তিতে চিহ্নিত করেছেন তাও। ১৭ জানুয়ারি বিকেল ৪টেয় যদুনাথ ভবনে এক অনুষ্ঠানে ওসমন্ড বোপেআরাচ্চি ও সুচন্দ্রা ঘোষ সম্পাদিত সম্মাননা গ্রন্থ আর্লি ইন্ডিয়ান হিস্টরি অ্যান্ড বিয়ন্ড (প্রাইমাস) তাঁর হাতে তুলে দেবেন আর এক প্রবীণ ইতিহাসবিদ বিনয় চৌধুরী।

ঢাকা থেকে

নিজের কথা-গল্প-ছবি তৈরি করতে শেখায় পুণের ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট।’’ বলছিলেন সুবর্ণা সেঁজুতি টুসি। সেখানেই সিনেমার চিত্রনাট্য ও নির্দেশনার কাজ শিখেছেন, আদতে বাংলাদেশের নাগরিক তিনি। ‘‘ছবির জন্য স্ক্রিপ্ট তৈরির কাজ আগেও করেছি, কিন্তু তা কী করে শিল্পিত করে তুলতে হয়, শিখলাম এফটিআই-তেই। শিখিয়েছিলেন আমার প্রিয় শিক্ষকেরা— অনুপ সিংহ, কমল স্বরূপ— ইনিই আমায় শেখান কী ভাবে নিজের স্বর বুনে দিতে হয় ফিল্মের শিল্পকাঠামোয়।’’ বলতে বলতে আবেগে একটু বুজে আসে সুবর্ণার গলা। সদ্য ঘুরে গেলেন এ শহরে। ঢাকায় জন্ম, বেড়ে ওঠা, পুরোদস্তুর চলচ্চিত্রকার হয়ে ওঠার আগে সাংস্কৃতিক কর্মী হিসেবে কাজ করেছেন সেখানেই, দীর্ঘ কাল। যুক্ত ছিলেন সাংবাদিকতাতেও। পাশাপাশি কাজ করতেন টিভির থিয়েটার-ফিল্মে,

সেই সূত্রেই চিত্রনাট্য লেখায় হাতেখড়ি। অভিনয় আর গান করা শুরু সেই ছেলেবেলায়। বাংলাদেশের বিশিষ্ট পরিচালক নুরুল আলম আতিক-এর প্রেরণায় পুণেয় আসা এই দশকের গোড়ায়, সেখানকার পাঠ শেষ করে বানিয়েছেন ‘মীনালাপ’, ২৮ মিনিটের ছবি। গ্রাম ছেড়ে শহরে এসে বস্ত্র কারখানার কর্মী বনে-যাওয়া এক দম্পতির নিঃসঙ্গ জীবন ও মানসিক পরিবর্তন নিয়ে ছবিটি রীতিমতো সাড়া ফেলেছে রোম থেকে কেরল অবধি নানান ফিল্মোৎসবে, সম্প্রতি পুরস্কৃত হল তাজ়িকিস্তান শিলিগুড়ি ও মুম্বইয়ে। ইরানের ছবি অত্যন্ত পছন্দ— জানানোর পর প্রিয় দুই পরিচালকের কথাও বললেন সুবর্ণা: তারকোভস্কি আর আদুর গোপালকৃষ্ণন।

Korcha Kolkata কলকাতার কড়চা
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy