জেসমিতা হালদার। নিজস্ব চিত্র
মৃত সন্তান প্রসবের পরেও লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিলেন ডেঙ্গি আক্রান্ত জেসমিতা হালদার (২৬)। টানা কুড়ি দিন ধরে যমে-মানুষে সেই যুদ্ধে শেষে হার মানতেই হল তাঁকে। শুক্রবার বাইপাসের একটি হাসপাতালে মৃত্যু হল জেসমিতার। আর কয়েকটা দিন পেরোলে, আগামী ৯ ডিসেম্বর বিয়ের এক বছর পূরণ হত তাঁর। তার আগেই ডেঙ্গির আক্রমণে ভেঙে খানখান হয়ে গেল জেসমিতার গোটা পরিবারের স্বপ্ন।
উল্টোডাঙার বাসিন্দা অমিত সাহার সঙ্গে গত বছর বিয়ে হয়েছিল বাবা-মায়ের একমাত্র মেয়ে জেসমিতার। কালীপুজোর সময়ে কসবার হালতুতে বাপের বাড়ি গিয়েছিলেন তিনি। সেখানেই ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হন অন্তঃসত্ত্বা ওই বধূ। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ২৪ অক্টোবর তাঁকে দক্ষিণ কলকাতার এক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন হাসপাতাল জানায়, জেসমিতা ডেঙ্গিতে আক্রান্ত। এক দিনে তাঁর রক্তে প্লেটলেটের পরিমাণ দেড় লক্ষ থেকে নেমে যায় তিরিশ হাজারে। অবস্থার অবনতি হওয়ায় ২৯ তারিখ তাঁকে অন্য হাসপাতালে স্থানান্তরিত করতে হয়। ৩১ অক্টোবর বাইপাসের ওই হাসপাতালেই মৃত সন্তান প্রসব করেন জেসমিতা।
বেসরকারি সংস্থার কর্মী অমিতবাবুও এই ক’দিন আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়েছেন। এখন হাসপাতালের মোটা টাকা বিলে প্রায় নিঃস্ব অবস্থা তাঁর। তিনি বলেন, ‘‘২৯ অক্টোবর বাইপাসের হাসপাতালে আমার স্ত্রীকে ভর্তি করা হয়। ১৭ তারিখ পর্যন্ত বিল হয়েছে প্রায় বারো লক্ষ টাকা!’’
পরিবার সূত্রে খবর, জেসমিতার বাবার মৃত্যুর পর থেকে প্রৌঢ়া মা সবিতা হালদার হালতুতে ভাইয়ের সঙ্গে থাকেন। মেয়ের অকালমৃত্যুর খবর পেয়ে বারবার জ্ঞান হারাচ্ছেন তিনি। প্রসঙ্গত, কলকাতা পুরসভার ১০৬ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত হালতুর ২২, লালবাহাদুর শাস্ত্রী রোডে জেসমিতার বাড়িতেই আরও চার জনের ডেঙ্গি হয়েছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy