কলকাতার নবনির্বাচিত পুর-প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল কংগ্রেস সূত্রের খবর, আগামী ৫ মে, মঙ্গলবার বিকেলে নজরুল মঞ্চে ওই বৈঠকের ব্যবস্থা করছে দল। এ বারের পুরভোটে ১৪৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে তৃণমূল একাই পেয়েছে ১১৪টি। এর মধ্যে ৪৪ জন এ বারই প্রথম কাউন্সিলর হয়েছেন। নতুনদের মধ্যে ১৬ জন মহিলা। দলের এক নেতার কথায়, ‘‘সামনের বছর বিধানসভা ভোট। সে দিকে লক্ষ রেখে কী ভাবে জনহিতে কাজ করা যায়, তার পরামর্শ দিতেই পুর-প্রতিনিধিদের বৈঠকে ডেকেছেন নেত্রী।’’
পুর দফতর জানিয়েছে, আগামী ৫ এবং ৬ মে নবনির্বাচিত কাউন্সিলরদের শপথবাক্য পাঠ করানো হবে। এ ব্যাপারে পুর-প্রশাসনকে সব রকম ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন পুরসচিব। যদিও প্রথম দিন অর্থাৎ ৫ মে তৃণমূলের কোনও কাউন্সিলর শপথ নেবেন না বলে দলীয় সূত্রের খবর। কারণ হিসেবে তৃণমূলের এক বিধায়ক জানান, কাউন্সিলরেরা সকলেই চান দলনেত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পরেই তাঁরা শপথ নেবেন। সেই কারণে ৬ মে, বুধবার তৃণমূলের কাউন্সিলরেরা শপথ নেবেন। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, নবনির্বাচিত কাউন্সিলরদের শপথবাক্য পাঠ করাতে চেয়ারম্যান প্রোটেম মনোনীত করা হয়েছে ১২১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, প্রবীণ তৃণমূল নেতা মানিক চট্টোপাধ্যায়কে।
মহাকরণ সূত্রের খবর, তৃণমূলের ওই বৈঠকের বার্তা পৌঁছনোর পরে ঠিক হয়েছিল শপথের দিন বদলানো হবে। পরে ঠিক হয়, তৃণমূল ছাড়া অন্য দলের কাউন্সিলরেরা সে দিন শপথ নিতেই পারেন। তাই দিন বদলের দরকার নেই। তবে এক দিনে তৃণমূলের ১১৪ জন কাউন্সিলর শপথ নিলে সময় একটু বেশি লাগবে। সে দিকে লক্ষ রেখেই দ্বিতীয় দিন শপথের সময় একটু বাড়ানো হয়েছে। পুর দফতরের এক আধিকারিক জানান, ৫ মে সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত শপথ নেওয়ার সময় ধার্য হয়েছে। পরদিন অর্থাৎ বুধবার ১টার পরিবর্তে ২টো পর্যন্ত শপথ চলবে।
তৃণমূল সূত্রের খবর, নতুন পুর-বোর্ডে কাকে কোন দায়িত্ব দেওয়া হবে, তা নিয়েও জোর জল্পনা শুরু হয়েছে। পুরভোটের আগেই মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছিলেন, শোভন চট্টোপাধ্যায়ই ফের মেয়র হবেন। তবে কোন দিন তিনি শপথ নেবেন, তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। কারণ মেয়রের সঙ্গেই শপথ নেওয়ার কথা পুরসভার নতুন চেয়ারম্যানেরও। বিদায়ী চেয়ারম্যান সচ্চিদানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় পরাজিত হওয়ায় ওই পদ কে পাবেন তা নিয়েও কানাঘুষো চলছে। দলেরই এক নেতা জানান, কোনও মহিলাকে ওই পদ দেওয়া যায় কি না, তা ভেবে দেখছেন দলীয় নেতৃত্ব। ডেপুটি মেয়র ফরজানা আলমও পরাজিত। সেখানেও সংখ্যালঘু কাউকে দেওয়ার কথা ভাবছে দল। এক পদস্থ নেতা জানান, পুরনো মেয়র পারিষদদের মধ্যে অভিজ্ঞদের সরাতে চায় না দল। তবে ২০১০ সালে প্রথম বার জিতে যাঁরা মেয়র পারিষদ হন, তাঁদের কাউকে কাউকে সরানো হতে পারে। এ ছাড়া, বিদায়ী পুর-বোর্ডের এক মেয়র পারিষদ পার্থপ্রতিম হাজারি পরাজিত হয়েছেন। আর এক মেয়র পারিষদ রাজীব দেবকে অসুস্থতার কারণে প্রার্থী করা হয়নি। ফলে অন্তত গোটা পাঁচেক পদে নতুন মুখের সম্ভাবনা প্রবল। এর মধ্যে দু’জন মহিলাকে নেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। পুরনো বোর্ডে যার হাতে যে দফতর ছিল, তা না-ও থাকতে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে।
এ দিকে, ভোটের আগেই মেয়র জানান, আরও একটি বরো বাড়ছে। ফলে ১৫টির বদলে এ বার ১৬টি বরো হবে। জোকার দু’টি গ্রাম পঞ্চায়েত পুরসভায় যুক্ত হওয়ায় তিনটি ওয়ার্ড বেড়েছে। ১৪২, ১৪৩ এবং ১৪৪ ওয়ার্ড-সহ ওই এলাকা সংলগ্ন আরও তিনটি ওয়ার্ড নিয়ে হচ্ছে ১৬ নম্বর বরো। নবগঠিত মেয়র পারিষদের প্রথম বৈঠকেই ১৬টি বরোর চেয়ারম্যান পদে কাদের বসানো হবে, তা ঠিক হবে। যদিও ভোটের ফলাফল অনুসারে এ বার প্রতিটি বরোর দখল তৃণমূলের হাতেই থাকবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy