Advertisement
E-Paper

টেন্ডারের ফাঁদে বন্ধ দেখভাল, বেহাল বহু বাস ছাউনি

বাস ছাউনিগুলির রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ডাকা দরপত্রে ওঠা দাম পছন্দ হয়নি। তাই সেই টেন্ডার বাতিল করে দেয় পুরসভা। আর তার জেরে গত কয়েক মাস ধরে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে বেহাল দশা বাস ছাউনিগুলির। পাশাপাশি, ওই টেন্ডার বাতিলের জেরে কয়েক মাস ধরে বন্ধ পুরসভার বিজ্ঞাপন দফতরের আয়ও।

দীক্ষা ভুঁইয়া

শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০১৪ ০১:৩৭

বাস ছাউনিগুলির রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ডাকা দরপত্রে ওঠা দাম পছন্দ হয়নি। তাই সেই টেন্ডার বাতিল করে দেয় পুরসভা। আর তার জেরে গত কয়েক মাস ধরে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে বেহাল দশা বাস ছাউনিগুলির। পাশাপাশি, ওই টেন্ডার বাতিলের জেরে কয়েক মাস ধরে বন্ধ পুরসভার বিজ্ঞাপন দফতরের আয়ও।

কেমন হাল বাস ছাউনিগুলির?

শহর জুড়ে সব বাস ছাউনিতে বিজ্ঞাপন দেওয়ার প্যানেল ফাঁকা। সেই জায়গায় ঝুলছে ফুটপাথবাসীদের জামাকাপড়, জিনিসপত্র। অধিকাংশ ছাউনিতে ভেঙে গিয়েছে বসার জায়গা। দু’-এক জায়গায় বসার আসন থাকলেও তা ধুলোয় ঢাকা।

কিন্তু নতুন তৈরি বাস ছাউনিগুলির হাল কয়েক বছরের মধ্যেই এ রকম হল কী করে? পুরসভা সূত্রের খবর, কয়েক বছর আগে তৈরি বাস ছাউনিগুলি গড়া থেকে রক্ষণাবেক্ষণ সবই বিজ্ঞাপন সংস্থাগুলির হাতে দেওয়া হয়। পুরসভা সূত্রের খবর, এ বারও কয়েক মাস আগে পুরসভার বিজ্ঞাপন দফতর প্রথম দফায় ৩৬টি বাস ছাউনির জন্য দরপত্র ডেকেছিল। সেই দরপত্রে সাড়া দিয়ে বেশ কয়েকটি বিজ্ঞাপন সংস্থা আবেদন করে এবং এক-একটি বাস ছাউনি প্রতি দাম ওঠে সর্বোচ্চ আড়াই লক্ষ টাকার মতো। কিন্তু ওই দরপত্রের প্রেক্ষিতে কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি পুরসভা।

ফলে ওই ৩৬টি ছাউনির দায়িত্ব কোনও সংস্থাই পায়নি।

আরও ১২১টি বাস ছাউনির জন্য দ্বিতীয় টেন্ডার ডাকে পুরসভা। কিন্তু এই দফায় আগের বারের মতো অত দাম দিতে রাজি হয়নি আবেদনকারী সংস্থাগুলি। বড় বড় যে সংস্থাগুলি এতদিন বাস ছাউনির দায়িত্ব নিয়েছে, সেগুলি এ বছর আর আবেদনই করেনি। ফলে ১২১টি বাস ছাউনির জন্য দামও কম ওঠে। পুরসভার বিজ্ঞাপন দফতর সূত্রে খবর, এত কম টাকায় দিলে পুরসভার কোনও লাভ হবে না। তাই নতুন করে টেন্ডার ডাকার সিদ্ধান্ত হয়।

এই সিদ্ধান্তকে ভুল মনে করছেন একাংশ পুরকর্তাই। এর প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিরোধীরাও। তাদের দাবি, দ্বিতীয় দফায় ১২১টি বাস ছাউনির জন্যও বিজ্ঞাপন সংস্থাগুলি যে টাকা দিতে চেয়েছিল, তা-ও “রিজার্ভ বিড প্রাইসের” থেকে বেশি। ফলে পুরসভার বিশেষ লোকসান হত না।

বিরোধীদের আরও বক্তব্য, গত কয়েক মাসের অবহেলায় ছাউনিগুলির যা অবস্থা হয়েছে, তাতে লোকসান আরও বেশি। বরং এই টাকাতেই সংস্থাগুলির হাতে গেলে ছাউনিগুলি রক্ষণাবেক্ষণ হত এবং পুরসভার কিছুটা আয়ও হত। বর্তমান পরিস্থিতিতে বিজ্ঞাপন দফতরের আয় একেবারে নেই বললেই চলে।

কিন্তু এই লোকসানের কথা মানতে নারাজ বিজ্ঞাপন দফতরের দায়িত্বে থাকা মেয়র পারিষদ (পার্ক ও উদ্যান) দেবাশিস কুমার। এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে তিনি জানান, নতুন করে টেন্ডার ডাকলে আরও বেশি দাম পাওয়া যাবে। তিনি বলেন, “প্রথম ৩৬টির জন্য ডাকা দরপত্রে দাম বেশি উঠলেও পরে বিজ্ঞাপন সংস্থাগুলি পিছিয়ে যায়। আর দ্বিতীয় দফায় যা দাম উঠেয়েছিল, তাতে দেওয়ার মানেই হয় না।” দেবাশিসবাবুর আরও দাবি, নতুন টেন্ডার ডাকা হলে যা দাম উঠবে, তাতে সহজেই মিটে যাবে এ ক’মাসের ঘাটতি।

মেয়র পারিষদ আশাবাদী হলেও বিজ্ঞাপন জগতের লোকেরা অবশ্য এমনটা মনে করেন না। তাঁদের অনেকেরই কথায়, বর্তমানে বিজ্ঞাপন সংক্রান্ত বিষয়ে পুরসভা যে মনোভাব নিয়েছে, তাতে সংস্থাগুলির লাভ নেই। কারণ আগের বার বাস ছাউনির পিছনের প্যানেলের পাশাপাশি উপরেও দু’টি করে বিজ্ঞাপন দেওয়া যেত। কিন্তু এ বার তা করতে দেবে না পুরসভা। কম বিজ্ঞাপন এবং বেশি দামের শর্তে ছাউনি দায়িত্ব নিয়ে তাই নিজেদের ক্ষতি করতে চাইছে না অধিকাংশ বিজ্ঞাপন সংস্থা।

deeksha bhunia tender bus stop shade maintenance tender trap closed maintains kolkata news online kolkata news
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy