Advertisement
E-Paper

খন্দপথে মরণফাঁদ, মেরামতিতে ঢিলেমি

কোনও গ্রামের রাস্তা নয়। উপরের ছবি তিনটি কলকাতার অন্যতম তিন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার। প্রথম দৃশ্যটি বেহালার ডায়মন্ড হারবার রোডের। দ্বিতীয়টি ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাসের। আর তৃতীয় রাস্তাটি বন্দর এলাকার সার্কুলার গার্ডেনরিচ রোড।

দেবাশিস দাস

শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০১৬ ০১:৪৮
সার্কুলার গার্ডেনরিচ রোড । ছবি: অরুণ লোধ এবং শুভাশিস ভট্টাচার্য

সার্কুলার গার্ডেনরিচ রোড । ছবি: অরুণ লোধ এবং শুভাশিস ভট্টাচার্য

দৃশ্য ১: যাত্রী বোঝাই অটো চলছে এক দিকে কাত হয়ে। বাস, ট্যাক্সি চলছে নৌকার মতো দুলে দুলে।

দৃশ্য ২: রাস্তার মাঝেই বিশাল গর্ত। জায়গায় জায়গায় পিচ উঠে বেরিয়ে এসেছে নীচের ইট-পাটকেল সহ মাটি।

দৃশ্য ৩: কয়েক হাত অন্তর বড়-বড় খন্দ। ধুলোর জন্য দেখা যায় না এক হাত দূরের গাড়িও। তারই মধ্যে দুলতে দুলতে চলছে বড়-বড় ট্রেলারের পাশাপাশি যাত্রিবাহী বাস, ট্যাক্সি, স্কুটার, সাইকেল।

কোনও গ্রামের রাস্তা নয়। উপরের ছবি তিনটি কলকাতার অন্যতম তিন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার। প্রথম দৃশ্যটি বেহালার ডায়মন্ড হারবার রোডের। দ্বিতীয়টি ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাসের। আর তৃতীয় রাস্তাটি বন্দর এলাকার সার্কুলার গার্ডেনরিচ রোড।

এই সব রাস্তা দিয়ে যাঁরা নিয়মিত যাতায়াত করেন তাঁদের অভিযোগ, ফি বছর বর্ষায় এই রাস্তাগুলি হয়ে ওঠে ভয়াবহ। কয়েক পশলা বৃষ্টি হলেই এই সব রাস্তা দিয়ে প্রাণ হাতে করে যাতায়াত করতে হয়।

ডায়মন্ড হারবার রোডে গিয়ে দেখা গেল, অজন্তা কোয়ার্টার্স, বেহালা ট্রাম ডিপো, চৌরাস্তা, সখেরবাজার, শীলপাড়া-সহ অধিকাংশ জায়গার রাস্তাই খানা-খন্দে ভরা। বহু জায়গায় পিচের আস্তরণ উঠে গিয়ে জমে রয়েছে কাদা। ইটের চাদর বেরিয়ে এসেছে বিপজ্জনক ভাবে। তবে কিছু জায়গায় রাস্তা সারানোর কাজও চলছে। এলাকার বাসিন্দা চৈতালি চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এখানে রাস্তা সারানো মানে তো পিচের তাপ্পি দেওয়া। ক’দিন পরেই তা উঠে গিয়ে আবার ইট বেরিয়ে পড়বে। আর আমাদের যাতায়াত করতে হবে জীবন হাতে নিয়ে।’’

ডায়মন্ড হারবার রোড ও ই এম বাইপাস

ই এম বাইপাস এবং কসবার সংযোগস্থলেও ছবিটা একই। সেখানে একটি বেসরকারি হাসপাতালের কাছে পিচ উঠে বেরিয়ে এসেছে নীচের ইট, মাটি। আনোয়ার শাহ রোড এবং বাইপাসের সংযোগস্থলের কাছেই হোসেনপুর থেকে কালিকাপুর যেতে হয় বাইপাস পেরিয়ে। ওই অংশে রাস্তার মাঝেই বড় বড় গর্ত। সেখানে জমে রয়েছে জল। এ ছাড়াও বাইপাস সংলগ্ন একটি ডিপার্টমেন্টাল স্টোর, আয়কর ভবন এবং সত্যজিৎ রায় ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউটের সামনের রাস্তা-সহ বেশ কিছু জায়গায় অজস্র গর্ত। ওই রাস্তা দিয়েই সল্টলেকে অফিসে যাতায়াত করেন যাদবপুরের অনির্বাণ রায়। তাঁর বক্তব্য, ‘‘বাইপাসের বিভিন্ন জায়গার অবস্থা কহতব্য নয়। রীতিমতো দুলতে দুলতে যেতে হয়।’’

সার্কুলার গার্ডেনরিচ রোডেরও জায়গায়-জায়গায় পিচের আস্তরণ উঠে গিয়ে গর্ত হয়ে রয়েছে। সিক লেন, ব্রুক লেন-সহ বিভিন্ন রাস্তায় গর্তগুলিতে জমে রয়েছে জল। গোটা রাস্তায় পুরু ধুলো। বাসিন্দারা জানালেন, বছরভর এমনই থাকে এই রাস্তা। এলাকার বাসিন্দা মলয় মণ্ডল বলেন, ‘‘সারা দিন এই রাস্তা দিয়ে চলে অজস্র লরি, ট্রেলার। এ ছাড়া যাত্রিবাহী বাস, ট্যাক্সি, অটো তো রয়েছেই। রাস্তার অবস্থার জন্য এখানে যানজট আর ছোটখাটো দুর্ঘটনা প্রায় রোজকার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।’’

পূর্ত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এই তিনটি রাস্তার মধ্যে শুধু ডায়মন্ড হারবার রোড দেখভালের দায়িত্বই তাদের। ই এম বাইপাস রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে আছে কেএমডিএ। আর, সার্কুলার গার্ডেনরিচ রোড দেখভাল করেন বন্দর কর্তৃপক্ষ।

রাজ্যের পূর্তমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বলেন, ‘‘ডায়মন্ড হারবার রোড মেরামতির কাজ আমরা শুরু করে দিয়েছি।’’ বন্দর সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁরা ইতিমধ্যেই ওই এলাকার চারটি রাস্তা সারাইয়ের জন্য ১৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছেন। আরও কয়েকটি রাস্তা সংস্কারের জন্য ১ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। বন্দরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘সার্কুলার গার্ডেনরিচ রোড-সহ আরও কয়েকটি রাস্তা মেরামতির জন্য আমরা কলকাতা পুরসভাকে অনুরোধ করেছি।’’ তবে ই এম বাইপাসের হাল নিয়ে কেএমডিএ-র কোনও আধিকারিক মন্তব্য করতে চাননি।

Road of Kolkata damaged
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy