Advertisement
E-Paper

জীর্ণ বাড়ি ছাড়তে বলুন কাউন্সিলরেরা

পুরসভা সূত্রে খবর, গত এক বছরে কলকাতায় পঁচিশটিরও বেশি বিপজ্জনক বাড়ি ভেঙে পড়েছে। মারা গিয়েছেন ৮ জন। পুরসভা থেকে বিপজ্জনক হিসেবে নোটিস দেওয়া হয়েছে এমন বাড়ির সংখ্যা প্রায় সাড়ে তিন হাজার।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৭:৫০
ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

শহরের বুকে মাথা তুলে থাকা বিপজ্জনক বাড়ির সমস্যা মেটাতে এ বার বিরোধী কাউন্সিলরদের সহায়তা চাইলেন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। বুধবার পুরসভার মাসিক অধিবেশনে বড়বাজারে বিপজ্জনক বাড়ি ভেঙে তিন জনের মৃত্যুর প্রসঙ্গ ওঠে। সেখানেই মেয়র দলের ও বিরোধী–সহ সব কাউন্সিলরদের বলেন, ‘‘এলাকায় বিপজ্জনক বাড়ি থাকলে সেখানে বসবাসকারী মানুষদের বোঝান। বলুন, ঝুঁকি মাথায় নিয়ে থাকবেন না। বাড়ি খালি করে দিন। নির্মাণ শেষ হলে ফের তাঁদের জায়গা দেওয়া হবে।’’ তিনি জানান, ইতিমধ্যেই সরকার স্থায়ী সমাধানের পথ বার করতে আইনের সংযোজন করেছে। কিন্তু এখনও অনেক মানুষ সেই সব বাড়িতে বসে থাকায় আইন প্রয়োগে সমস্যা হচ্ছে।

পুরসভা সূত্রে খবর, গত এক বছরে কলকাতায় পঁচিশটিরও বেশি বিপজ্জনক বাড়ি ভেঙে পড়েছে। মারা গিয়েছেন ৮ জন। পুরসভা থেকে বিপজ্জনক হিসেবে নোটিস দেওয়া হয়েছে এমন বাড়ির সংখ্যা প্রায় সাড়ে তিন হাজার। এ দিন মেয়র উল্লেখ করেন, এক সময়ে ‘বিপজ্জনক বাড়ি’ বলে নোটিস টাঙিয়েই কাজ সারত পুরসভা। কিন্তু গত বছর সেপ্টেম্বরে পাথুরিয়াঘাটা স্ট্রিটে বাড়ি ভেঙে দু’জনের মৃত্যুর পরে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে নতুন আইন হয়েছে। কিন্তু তাতেও সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে এমনটা মনে করছেন না একাধিক কাউন্সিলরও। এ দিন অধিবেশনে বিপজ্জনক বাড়ি ভাঙা নিয়ে নির্দিষ্ট প্রশ্ন বা প্রস্তাব না থাকলেও সমস্যা সমাধানে মানবিক আবেদন জানিয়ে বক্তব্য রাখেন মেয়র শোভনবাবু। তিনি বলেন, ‘‘আইন হয়েছে ঠিকই। তবে তা কার্যকর করতে সময় তো লাগবে।’’ প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে বিপজ্জনক বাড়ির বাসিন্দাদের সতর্ক করার জন্য অলিগলিতে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। কিন্তু তাতে কতটা কাজ হচ্ছে তার নমুনা মিলেছে মঙ্গলবারের ঘটনা থেকেই।

আরও পড়ুন: চিন সম্পর্কে ভবিষ্যতে ভারতের আরও সাবধান হওয়া উচিত

তাই মেয়রের আবেদন, প্রতিটি এলাকার কাউন্সিলর পাড়ায় গিয়ে বিপজ্জনক বাড়ির বাসিন্দাদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। বরো চেয়ারম্যানদের ডাকুন। তাতেও কাজ না হলে হেড অফিসে নিয়ে আসুন। মেয়র নিজে তাঁদের সঙ্গে কথা বলবেন।

কিন্তু মেয়র যাই বলুন, কাজটা যে শক্ত তা বুঝছেন কাউন্সিলরেরাও। বেশি বিপজ্জনক বাড়ি রয়েছে উত্তর কলকাতার বড়বাজার, শোভাবাজার, হাতিবাগান থেকে মধ্য কলকাতার নানা জায়গায়। উত্তর কলকাতার একাধিক তৃণমূল কাউন্সিলরের মন্তব্য, ‘‘বিপজ্জনক বাড়িতে যে জীবনের ঝুঁকি রয়েছে, এটা আমরা না বললেও বাসিন্দারা বোঝেন। কিন্তু যাওয়ার জায়গা নেই বলে অনেকেই বাস করে যাচ্ছেন। একাধিক বাড়ি ঘুরে তেমনই অভিজ্ঞতা হয়েছে।’’ তাই মেয়র যা বলছেন বাস্তবে তা করাটা শক্ত। তা ছাড়া বাসিন্দাদের থাকার বিকল্প ব্যবস্থা না করে দিলে সমাধান অধরাই থেকে যাবে বলে মনে করছেন কাউন্সিলরেরা। মঙ্গলবােরর প্রসঙ্গ তুলে এক কাউন্সিলর বলেন, ‘‘ওখানেও বৃদ্ধ তারাপ্রসন্ন সাহা চেয়েছিলেন নির্মাণ চলাকালীন থাকার বন্দোবস্ত করে দিক প্রোমোটার। হয়নি বলেই তিনি শেষ সম্বলটুকু ছাড়তে চাননি। শেষমেষ স্ত্রী, মেয়ের সঙ্গে বাড়ি চাপা পড়েই মৃত্যু হল তাঁর।

মধ্য কলকাতার এক তৃণমূল কাউন্সিলর বলেন, ‘‘কাউকে জোর করে তুলে দেওয়া যায় না। সকলেই ভোটার। তাঁদের দেখভালের দায়িত্ব তো কাউন্সিলরকেই নিতে হবে। নির্মাণ চলাকালীন পুরসভা থাকার জায়গার ব্যবস্থা করলে বিষয়টা সহজ হতে পারে।’’ আইনে তার সংস্থানও রয়েছে বলে জানান পুরসভার বিল্ডিং দফতরের আধিকারিক। কিন্তু প্রচারে, বিজ্ঞাপনে তা নিয়ে ততটা গুরুত্ব দিচ্ছে না পুর প্রশাসন। তাই আইন তৈরি হলেও সমাধানের পথ দূর অস্ত বলে কেউ কেউ আশঙ্কা করছেন।

Sovan Chatterjee Old house DumDum দমদম শোভন চট্টোপাধ্যায়
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy