Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ঘোষণা হল না সময়ে, বিভ্রান্তি মেট্রো যাত্রীদের

‘ওয়েলকাম টু মেট্রো রেলওয়ে কলকাতা। হ্যাভ আ কমফর্টেবল জার্নি ফ্রম দমদম টু কবি সুভাষ’। দমদম থেকে মেট্রোয় উঠলেই শোনা যায় এই ঘোষণা। তবে বৃহস্পতিবার সকালের পরে দুপুরে মেট্রো সুড়ঙ্গে নেমে যাত্রীরা ফের প্রত্যক্ষ করলেন, ‘কমফর্টেবল জার্নি’র সেই নমুনা!

হয়রানি: বন্ধ মেট্রো। স্টেশনের বাইরে দাঁড়িয়ে যাত্রীরা। বৃহস্পতিবার সকালে, বেলগাছিয়ায়। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

হয়রানি: বন্ধ মেট্রো। স্টেশনের বাইরে দাঁড়িয়ে যাত্রীরা। বৃহস্পতিবার সকালে, বেলগাছিয়ায়। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০১৯ ০২:৩১
Share: Save:

‘ওয়েলকাম টু মেট্রো রেলওয়ে কলকাতা। হ্যাভ আ কমফর্টেবল জার্নি ফ্রম দমদম টু কবি সুভাষ’। দমদম থেকে মেট্রোয় উঠলেই শোনা যায় এই ঘোষণা। তবে বৃহস্পতিবার সকালের পরে দুপুরে মেট্রো সুড়ঙ্গে নেমে যাত্রীরা ফের প্রত্যক্ষ করলেন, ‘কমফর্টেবল জার্নি’র সেই নমুনা!

এ দিন সকালে মেট্রো বিকল হয়ে যাত্রী পরিষেবা ব্যাহত হয় দমদম স্টেশনে। এর পরে পরিষেবা সাময়িক বন্ধ রেখে ওই বিপর্যয়ের কারণ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। এই জন্যই দুপুর দেড়টা থেকে দুপুর দু’টো পর্যন্ত দমদম থেকে গিরিশ পার্ক পর্যন্ত মেট্রো পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়। তবে এই পরিষেবা বন্ধ থাকার কোনও আগাম ঘোষণা স্টেশনে করা হয়নি বলে অভিযোগ করছেন যাত্রীদের একাংশ। ফলে বেলগাছিয়া, শ্যামবাজার এবং শোভাবাজার স্টেশনে দাঁড়িয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। এক সময়ে বলে দেওয়া হয় শেষ মেট্রো ঢুকছে। তাতেই ওঠার তাড়ায় চিঁড়েচ্যাপ্টা হওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয় ওই সব স্টেশনে।

এক যাত্রী জানাচ্ছেন, শোভাবাজার মেট্রো স্টেশনে নেমে তিনি দেখেন, দুপুর ১টা ২৫ মিনিটের গাড়ি ১টা ২২ মিনিটেই স্টেশন ছেড়ে বেরিয়ে যাচ্ছে। অগত্যা পরের গাড়ির অপেক্ষা শুরু করেন ওই যাত্রী। দুপুর দেড়টা নাগাদ ঘোষণা হয়, ‘‘দমদমের দিকে যাওয়ার শেষ গাড়ি আসছে। এর পরের গাড়ি আসবে অনেক ক্ষণ পরে। মেট্রো বন্ধ থাকবে।’’ যাত্রী ভাবেন, ফের কোনও গোলমাল! কবি সুভাষের দিকে যেতে হবে তাঁকে। সে দিকের গাড়ি কি আসবে না? এর পরে শোভাবাজারের স্টেশন মাস্টারের ঘরে কথা বলতে যান ওই ব্যক্তি। তাঁকে বলা হয়, ‘‘দ্রুত নীচে যান। কবি সুভাষের দিকের শেষ গাড়ি এখনই ঢুকবে। দুপুর দেড়টা থেকে দু’টো পর্যন্ত দমদম ও গিরিশ পার্কের মধ্যে মেট্রো বন্ধ থাকবে।’’ যাত্রী অবশ্য দেখেন, তখনও টিকিট কাউন্টার খোলা রয়েছে।

টোকেন মিলছে!

এর কয়েক মিনিটের মধ্যেই ঘোষণা হয়, ‘‘কবি সুভাষের দিকের শেষ গাড়ি আসছে। এর পরের গাড়ি অনেক ক্ষণ পরে আসবে।’’ সেই সঙ্গেই ঘোষণা হয়, ‘‘কাউন্টারে আর টোকেন দেবেন না।’’ যাত্রী জানাচ্ছেন, স্টেশনে তখন প্রবল ভিড়। সকলেই ভাবছেন, এটাই শেষ গাড়ি। এতেই উঠতে হবে।

দুপুর ১টা ৩৭ মিনিটে ওই মেট্রো স্টেশনে ঢুকতেই হুলুস্থূল পড়ে যায়। গাড়িতে ওঠার তাড়নায় যাত্রীদের একাংশের মধ্যে হাতাহাতি বেধে যায়। কোনওমতে গাড়িতে ওঠেন কেউ কেউ। গেট ধরে ঝুলে পড়েন কয়েক জন। নিরাপত্তারক্ষীদের অনুনয়েও যাত্রীদের গেট থেকে সরিয়ে আনা যায়নি। বেশ কয়েক মিনিট পরে ১টা ৫০ মিনিট নাগাদ শোভাবাজার স্টেশন ছাড়ে ওই গাড়ি। ওই যাত্রী বলছেন, ‘‘পরপর গাড়ি থাকলেও ভিড়ের চাপে অনেক মেট্রোরই গেট বন্ধ করা যায় না। এটাই শেষ মেট্রো বলে দেওয়ায় স্টেশনের হাল কী হয়েছিল ভাবুন!’’

প্রবল হয়রানির শিকার যাত্রীদের অনেকেই বলছেন, মেট্রো পরিষেবা বেলা দেড়টা থেকে বন্ধ থাকবে জেনেও কেন ঘোষণা করা হয়নি? কেনই বা দুপুর দেড়টাতেও টিকিট কাউন্টার থেকে টোকেন দেওয়া হল? এক বৃদ্ধ যাত্রীর কথায়, ‘‘এ ভাবে উঠতে গিয়ে বিপদ ঘটলে কে দায়িত্ব নিত?’’ মেট্রো রেলওয়ের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক ইন্দ্রাণী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সব স্টেশনেই ঘোষণা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। ঠিকঠাক ঘোষণা হচ্ছে কি না, তা আমরাও খোঁজ নিয়েছি। তবু ফের অভিযোগ খতিয়ে দেখব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kolkata Metro Metro Passengers Daily Passengers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE