Advertisement
১১ মে ২০২৪

ডিম ধরতে পুর অভিযান

বৃহস্পতিবার পার্ক সার্কাসের বাসিন্দা অনিতা কুমারের পাঠানো একটি ভিডিও ফুটেজ রীতিমতো আলোড়ন ফেলে দিয়েছে অনেকেরই হেঁসেলে। অভিযোগ, তাতে ডিমের খোল থেকে শুরু করে কুসুমও প্লাস্টিক-সিন্থেটিকের।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০১৭ ০১:৫৯
Share: Save:

বৃহস্পতিবার পার্ক সার্কাসের বাসিন্দা অনিতা কুমারের পাঠানো একটি ভিডিও ফুটেজ রীতিমতো আলোড়ন ফেলে দিয়েছে অনেকেরই হেঁসেলে। অভিযোগ, তাতে ডিমের খোল থেকে শুরু করে কুসুমও প্লাস্টিক-সিন্থেটিকের। কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের কাছে প্রথম আসে ওই সচিত্র মেসেজ। এর পরেই বিষয়টি খতিয়ে দেখতে অভিযানে নামে পুলিশ ও পুরসভার দল। রাতেই গ্রেফতার হন পার্ক সার্কাস বাজারের ডিম ব্যবসায়ী শামিম আনসারি। শুক্রবার আদালতে ৪ তারিখ পর্যন্ত তাঁর পুলিশ হেফাজত হয়। অনিতা কুমারের কাছে পাওয়া ‘প্লাস্টিক’ ডিমের নমুনা প্রাণীসম্পদ দফতরের গবেষণাগারে পাঠানো হয়।

ইতিমধ্যেই শহর জুড়ে নানা প্রশ্ন উঠছে, তা আঁচ করেই এ দিন একাধিক ডিমের আড়তে অভিযান চালায় পুলিশ ও পুরসভা। শুক্রবার পুরসভার মেয়র পারিষদ অতীন ঘোষ ফুড সেফ্‌টি ইনস্পেক্টরদের নিয়ে শিয়ালদহ ডিম পট্টিতে অভিযান চালান। পুরসভার খবর, ধৃত ব্যবসায়ী পুলিশকে জানান, ২৪ মার্চ শিয়ালদহের একটি আড়ত থেকে ৯৫ হাজার টাকার ডিম কেনেন তিনি। অতীনবাবু জানান, ওই আড়তদারের থেকে তিন ক্রেট ডিম তোলা হয়েছে। ধৃত শামিম যে সময়ে ডিম কিনেছিলেন, সেই লটের মাল। সেগুলিও পরীক্ষার জন্য পাঠানো হচ্ছে।

প্লাস্টিক ডিমের নমুনা পেয়েছেন বেলেঘাটার সুদেষ্ণা দাসও। তাঁর অভিযোগ, ‘‘রাসমণি বাজার থেকে ৬টা ডিম কিনেছিলাম দিন দুয়েক আগে। তার দু’টি আগেই খাওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার সংবাদমাধ্যমে সব দেখার পরে ডিম ফাটাতে গিয়ে বুঝতে পারি বাকি চারটির মধ্যে দু’টি প্লাস্টিকের। খোল পোড়াতেই প্লাস্টিকের গন্ধ।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘এ সব বন্ধ করতে সরকার, পুলিশ কড়া ব্যবস্থা নিক। দিন কয়েক হইচইয়ের পরে চুপ হয়ে গেলে চলবে না। লাগাতার নজরদারি করতে হবে মানুষের স্বাস্থ্যের কথা ভেবে।’’

লালবাজার সূত্রে খবর, কলকাতা পুলিশের এনফোর্সমেন্ট ব্র্যাঞ্চ এ দিন কোলে মার্কেট, গড়িয়াহাট, হাতিবাগান, নিউ মার্কেট, মানিকতলা বাজারে প্লাস্টিক ডিম ধরার অভিযান চালায়। কোথাওই তা মেলেনি। আরও অভিযান চালানো হবে বলে জানায় লালবাজার।

পুরসভা অবশ্য অপেক্ষা করছে চিকিৎসকদের রিপোর্টের জন্য। কবে তা মিলবে? অতীনবাবু জানান, চোখে দেখে অস্বাভাবিক বলেই জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। প্রাণীসম্পদ দফতরের ল্যাবরেটরিতে দেওয়া হয়েছে।
রিপোর্ট খারাপ এলে তো অভিযান চালাতে হবেই।

এই মুহূর্তে প্রতিদিন কত ডিম লাগে রাজ্যে? পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক মদন মাইতি জানান, আড়াই কোটি। এর মধ্যে ৮০ লক্ষ আসে অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা ও পঞ্জাব থেকে। তিনি বলেন, পৃথিবীর যে কোনও দেশের চেয়ে সস্তায় ডিম মেলে ভারতে। তাই এখানে প্লাস্টিক বা সিন্থেটিক ডিম বানানোর কারণ নেই। তবুও পরীক্ষার রিপোর্ট না এলে কিছু বলা সম্ভব নয়। কারণ চিন থেকে অনেক কিছুই ভারতে ঢুকছে। সেই পথে নকল ডিম ঢুকলে ভয়াবহ পরিস্থিতি হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Plastic eggs operation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE