Advertisement
১৭ জুন ২০২৪

পথের ধারে খাবারের দোকানে পুর অভিযান

দৃশ্য ১: ইটের স্তূপের উপরে গ্যাস সিলিন্ডার। তার বেশ কিছুটা নীচে জ্বলছে বার্নার। পাশেই দাঁড়িয়ে চা খাচ্ছেন ক্রেতারা। এক জনের হাতে দেখা গেল সিগারেটও।

সরেজমিন: অভিযানে মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) প্রণয় রায়। বুধবার, সল্টলেকে। ছবি: শৌভিক দে

সরেজমিন: অভিযানে মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) প্রণয় রায়। বুধবার, সল্টলেকে। ছবি: শৌভিক দে

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০১৭ ০২:৪৫
Share: Save:

দৃশ্য ১: ইটের স্তূপের উপরে গ্যাস সিলিন্ডার। তার বেশ কিছুটা নীচে জ্বলছে বার্নার। পাশেই দাঁড়িয়ে চা খাচ্ছেন ক্রেতারা। এক জনের হাতে দেখা গেল সিগারেটও।

দৃশ্য ২: রাস্তার ধারের কার্ব চ্যানেলেই ভাতের ফ্যান ফেলছেন দোকানদার। সেই দোকানে দুপুরের খাওয়া সারছেন অনেকে। খাবার ঢাকা দেওয়ার কোনও ব্যবস্থাই নেই। যে পাত্রে জল রাখা, তা-ও অত্যন্ত অপরিষ্কার। জলের মান কতটা ঠিক, সেটাও প্রশ্ন সাপেক্ষ। রান্নার সমস্ত উপকরণ কোনও পরিচিত সংস্থার সামগ্রী নয়। রান্নার বাসনপত্র নিয়মিত ধোওয়া হলেও সেগুলির অবস্থাই বলে দিচ্ছে তা কতটা স্বাস্থ্যকর।

উপরের ছবিটা সল্টলেকের ৪১ নম্বর ওয়ার্ডে রাস্তার ধারের একটি খাবারের দোকানের। গোটা বিধাননগর পুর এলাকা ধরলে এমন দোকানের সংখ্যা অন্তত হাজারখানেক। দীর্ঘ দিন ধরেই অভিযোগ উঠেছে, এই সব দোকানের পরিবেশ অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর। রান্নাও হয় বিপজ্জনক ভাবে। প্রশাসন সব জেনেও কিছু করে না। এ বার খোদ কাউন্সিলর বিষয়টি পুরসভাকে জানানোয় টনক নড়েছে কর্তাদের। বুধবার সকালে স্থানীয় কাউন্সিলরকে নিয়ে সদলবলে প্রায় ১০টি দোকানের অবস্থা সরেজমিন খতিয়ে দেখেন বিধাননগর পুরসভার মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) প্রণয় রায়।

কী পদক্ষেপ করা হবে এই সব দোকানের বিরুদ্ধে? পুর আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, কী করা যাবে আর কী করা যাবে না, সে বিষয়ে দোকানদারদের বলা হয়েছে। নিয়মিত নজরদারি চলবে। যদিও এই প্রতিশ্রুতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। পুরসভা সূত্রেই খবর, পরিকাঠামো তো দূর, কোনও ফুড ইনস্পেক্টরই নেই। দোকানদারদের বক্তব্য, তাঁরা বিধাননগর বা কলকাতা পুরসভার জল ব্যবহার করেন। খাবারের আর রান্নার জলও আলাদা। তাঁরা আরও জানান, নামী সংস্থার সামগ্রী ব্যবহার করতে গেলে খাবারের দাম বেড়ে যাবে। সেই দামে খেতে ক্রেতারা রাজি হবেন না।

ক্রেতারাও বলছেন, অস্বাস্থ্যকর জেনেও তাঁদের কোনও উপায় নেই। অফিসের কাছাকাছি সুলভে এমন খাবার আর কোথাও পাওয়া যায় না। বাধ্য হয়ে ওই খাবারই খান তাঁরা। পুরকর্মীদের একাংশই জানাচ্ছেন, কার্ব চ্যানেলে ভাতের ফ্যান, মাছের আঁশ-সহ নানা জিনিস ফেলায় সেই নালাও রুদ্ধ হয়ে যাচ্ছে।

এর থেকে বাঁচার উপায় কি? বাসিন্দাদের দাবি, অস্থায়ী দোকানগুলি নিয়ে অবিলম্বে পরিকল্পনা করা হোক। ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পুরসভাকে জানিয়েছিলাম। আজ সরেজমিন দেখে গিয়েছেন পুরকর্তারা।’’

মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) প্রণয়বাবু বলেন, ‘‘বেশ কিছু দোকানে আমরা অভিযান চালিয়েছি। বিভিন্ন ওয়ার্ডেও অভিযান চলবে। আপাতত কী কী করতে হবে, তা আমরা দোকানদারদের বলেছি। অবস্থা না বদলালে কড়া পদক্ষেপ করতে বাধ্য হবে পুরসভা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Municipality Investigation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE