চালক ছাড়াই চলছে মেট্রো। সম্প্রতি দিল্লিতে পরীক্ষামূলক ভাবে এমন একটি ট্রেন চালু হয়েছে। কিছু দিনেই সেই অভিজ্ঞতার স্বাদ মিলবে কলকাতার ইস্ট-ওয়েস্টের মতো নতুন মেট্রো প্রকল্পে তো বটেই, এমনকী চালু মেট্রো রেলেও। সব ঠিকঠাক চললে নোয়াপাড়া-কবি সুভাষ পর্যন্ত চালু মেট্রো রেলে ২০১৮-তেই আধুনিক এই প্রযুক্তি চালু হওয়ার কথা।
আধুনিক উৎপাদন ব্যবস্থা নিয়ে শনিবার এক আলোচনাসভার আয়োজন করেছিল বণিক সভা সিআইআই। সেখানেই আগামী দিনে দেশের রেল ও মেট্রো রেলের আধুনিকীকরণের বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা জানান ভারতীয় রেলের ‘রিসার্চ ডিজাইন অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ড অর্গানাইজেশন’-এর (আরডিএসও) অন্যতম কর্তা যতীশ কুমার।
রেল সূত্রের খবর, প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে ট্রেনে পরিচালনার বিভিন্ন মাপকাঠি ( গ্রেড অব অটোমেশন বা ‘গোয়া’) রয়েছে। যেমন কলকাতায় এখন চলে গোয়া-১ প্রযুক্তি। যেখানে ট্রেন চালানো থেকে দরজা বন্ধ, সবই করেন চালক। গোয়া-২ ব্যবস্থায় ট্রেন চালানো কিংবা থামানো হয় স্বয়ংক্রিয় ভাবে। চালকের দায়িত্ব দরজা খোলা-বন্ধ, প্রয়োজনে ট্রেনটি চালানো ও আপৎকালীন ব্যবস্থায় হস্তক্ষেপ করা।
গোয়া-৩ ব্যবস্থায় ট্রেনে কোনও চালক থাকারই কথা নয়। ট্রেন স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থাতেই চলে। শুধুমাত্র এক জন কর্মী থাকেন। তাঁর কাজ দরজা বন্ধ করা, খোলা। সঙ্গে সব যাত্রী ঠিকমতো নামা-ওঠা করতে পারলেন কি না, তা দেখা। যদিও ভারতে গোয়া-৩ প্রযুক্তিতে সহকারী না, এক জন চালককেই রাখা হবে। আর ‘গোয়া-৪’ প্রযুক্তিতে সবই হয় স্বয়ংক্রিয় ভাবে। দিল্লিতে সম্প্রতি গোয়া-৪ মাপকাঠির একটি ট্রেন পরীক্ষামূলক ভাবে চালু হয়েছে। তবে দিল্লি মেট্রো রেলওয়ে কর্পোরেশন সূত্রের খবর, যাত্রী নিরাপত্তার স্বার্থে সেটিতে এখনও চালক থাকছেন।
যতীশ এ দিন জানান, এ বার থেকে দেশের সব নতুন মেট্রো রেলেই গোয়া-৩ এবং তার বেশি মাপকাঠির প্রযুক্তি ব্যবহৃত হবে। ইতিমধ্যেই বেঙ্গালুরু, চেন্নাই, লখনউ-এর মতো শহরে সেই মাপকাঠি চালু হচ্ছে। কারণ নতুন মেট্রো প্রকল্পে একেবারে গোয়া-৩ প্রযুক্তি ব্যবহার সম্ভব। কলকাতার নতুন প্রকল্পগুলিতেও তাই হবে। তবে যেহেতু এই সব শহরের মেট্রো প্রকল্পগুলি আলাদা সংস্থার অধীন,
তাই কবে থেকে কোথায় তা চালু হবে, তা সংশ্লিষ্ট মেট্রো সংস্থাগুলিই ঠিক করবে। কারণ আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারের জন্য বিপুল লগ্নিরও প্রয়োজন। আরডিএসও-র দায়িত্ব হল সেই সব প্রযুক্তি রূপায়ণের আগে তা খতিয়ে দেখা।
কলকাতায় এখন চালু মেট্রো প্রকল্পের ট্রেনগুলিতে এই প্রযুক্তির ব্যবহার সম্ভব নয়। সে জন্য সেগুলিকে বদলে নতুন ‘রেক’ আনতে হবে। যতীশের ইঙ্গিত, সম্ভবত সেই রেক আসবে চিন থেকে। তাঁদের নিজস্ব লক্ষ্যমাত্রা, ২০১৮-র মার্চের মধ্যে এই প্রযুক্তির রেক পরীক্ষা সেরে ফেলা। পরীক্ষায় উতরোলে তার পরে আসবে ছাড়পত্র দেওয়ার বিষয়টি। ফলে সবটাই খানিক সময় সাপেক্ষ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy