প্রতীকী ছবি।
‘রেফার’ সংক্রান্ত সরকারি বিধি রয়ে গিয়েছে শুধু খাতায়-কলমে! বাস্তবে তা মানা হচ্ছে না বহু জায়গাতেই। ভুগছেন মানুষ।
নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রক্তের অভাবে এক সদ্যোজাতের মৃত্যু হয়েছে বলে দিন কয়েক আগে অভিযোগ উঠেছিল। সপ্তাহখানেক ঘোরাঘুরি করেও রক্ত না পাওয়ায় অবস্থা আশঙ্কাজনক হয়ে উঠেছিল ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন নদিয়ার বাসিন্দা এক রোগীর।
নিয়মমাফিক রিক্যুইজিশন স্লিপে ‘রেফার’ লিখে দেওয়া হলে এবং হাসপাতালে তার রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া চালু রাখলে এই ধরনের বিপদ এড়ানো যায় বলেই মন্তব্য স্বাস্থ্য কর্তাদের।
নিয়ম হল, যে কোনও ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্তের রিক্যুইজিশন স্লিপ জমা পড়লেই তার রেজিস্ট্রেশন করাতে হয়। চাহিদা মতো রক্ত ব্লাড ব্যাঙ্কে না থাকলে সেই তথ্য লিখে কর্তৃপক্ষের স্বাক্ষর-সহ রেফার স্লিপ দিতে হয়। সেই স্লিপের তথ্যও আলাদা করে রেজিস্ট্রেশন করাতে হয়। এর ফলে এক ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্ত না পেলে অন্য ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে রক্ত সংগ্রহের কাজটা অনেক সহজ হয়ে যায়।
কিন্তু এই নিয়মের তোয়াক্কা করেন না অধিকাংশ ব্লাড ব্যাঙ্কের কর্মীরাই। হুগলির এক সদ্যোজাতের ক্ষেত্রে সোমবার রক্তের জন্য রিক্যুইজিশন স্লিপ ব্লাড ব্যাঙ্কে পাঠানো হয়েছিল। বি নেগেটিভ রক্ত না থাকা সত্ত্বেও ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে প্রায় কুড়ি ঘণ্টা পরে রেফারের রিক্যুইজিশন স্লিপ রোগীর পরিবারকে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এনআরএস হাসপাতাল থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরেই তিনটি সরকারি এবং একাধিক বেসরকারি ব্লাড ব্যাঙ্ক রয়েছে। কয়েক হাত দূরেই রয়েছে রক্তদান শিবির আয়োজনকারী একাধিক সংগঠনের অফিস, যাদের সঙ্গে হাসপাতালের চিকিৎসক থেকে ব্লাড ব্যাঙ্কের কর্তাদের নিয়মিত যোগাযোগ। তাদের সাহায্য কেন নিল না হাসপাতাল?
বুধবার থেকে রেফার রিক্যুইজিশন স্লিপের জন্য রেজিস্ট্রেশন চালু হয়েছে এনআরএস হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে। যদিও হাসপাতালের সুপার সৌরভ চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘রিক্যুইজিশন স্লিপের তথ্য সংগ্রহের কাজ এনআরএসে চালু রয়েছে।’’
ব্লাড ব্যাঙ্কের কর্মীদের একাংশ জানান, শহরের অধিকাংশ ব্লাড ব্যাঙ্কেই রক্তের আকাল। প্রতিটি রিক্যুইজিশন স্লিপের হিসেব রাখলে রক্তের অভাবের ছবিটা আরও স্পষ্ট হবে। প্রশ্ন উঠবে শিবির আয়োজন নিয়েও। সেই অস্বস্তি এড়াতেই কম্পিউটারে নির্দিষ্ট ভাবে রিক্যুইজিশন স্লিপ এবং রেফারের তথ্য রাখার নির্দেশ থাকলেও তা কার্যকর করে না অধিকাংশ সরকারি ব্লা়ড ব্যাঙ্ক।
স্বাস্থ্য দফতরের এক শীর্ষ কর্তার কথায়, ‘‘কোনও ব্লাড ব্যাঙ্ক সম্পর্কে নির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সকলকেই নিয়ম মানতে হবে। রক্তের জোগান কমলে তা দফতরকে জানাতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy