প্রতীকী ছবি
স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলিয়ে রয়েছেন মাত্র ৩৯১ জন অপটোমেট্রিস্ট। গত ৫ জানুয়ারি থেকে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত ‘চোখের আলো’ কর্মসূচিতে রাজ্যের ৫ লক্ষ ৭০ হাজার মানুষের চোখ পরীক্ষা করানো হয়েছে মাত্র ওই ক’জনকে দিয়ে! চশমা দেওয়া হয়েছে ২ লক্ষ ৮০ হাজার ৭৭৬ জনকে!
ক্ষুব্ধ অপটোমেট্রিস্টদের প্রশ্ন, এই ভাবে চাপের মধ্যে নামমাত্র কর্মী দিয়ে পাহাড়প্রমাণ কাজ করিয়ে স্বাস্থ্য দফতরের দক্ষতা প্রমাণের চেষ্টা কতটা মানবিক? গত ১৮ বছর রাজ্যে স্থায়ী অপটোমেট্রিস্ট পদে কোনও নিয়োগ হয়নি। অভিযোগ, এখন মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষিত ‘চোখের আলো’ কর্মসূচিতে অপটোমেট্রিস্টদের দিয়ে সব চেয়ে বেশি কাজ করানো হচ্ছে। এর ফলে জেলায় জেলায় সরকারি হাসপাতালের চক্ষু বিভাগে রোজকার সাধারণ পরিষেবা বন্ধ হতে বসেছে বলেও অভিযোগ। সরকারের সে দিকে কোনও হুঁশ নেই বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অপটোমেট্রিস্টরা। এর প্রতিবাদে সম্প্রতি স্বাস্থ্য অধিকর্তাকে চিঠিও দিয়েছে শাসকদল-পন্থী মেডিক্যাল টেকনোলজিস্টদের সংগঠন ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল প্রোগ্রেসিভ মেডিক্যাল টেকনোলজিস্টস অ্যাসোসিয়েশন’।
রাজ্য আলাদা কোনও বাজেট বরাদ্দ না-করে এবং আলাদা পরিকাঠামো ছাড়াই অত্যন্ত তাড়াহুড়ো করে এই কর্মসূচি শুরু করেছে বলে সমালোচনা করেছিলেন অনেকেই। এর পিছনে অনেকে ভোটের রাজনীতিও খুঁজে পেয়েছিলেন। ‘চোখের আলো’য় প্রত্যন্ত জেলায় শিবির করে চোখ পরীক্ষা, পাওয়ার দেখা ও চশমা দেওয়ার পুরো কাজটাই করতে হচ্ছে অপটোমেট্রিস্টদের। অথচ, স্থায়ী অপটোমেট্রিস্টদের ৩০০টি পদ খালি। অস্থায়ী পদেও শেষ নিয়োগ হয়েছে ২০১৩-’১৪ সালে। এখন রাজ্যে ৩৫০ জন স্থায়ী ও ৪১ জন অস্থায়ী অপটোমেট্রিস্ট রয়েছেন।
তাঁদের দিয়েই জানুয়ারি মাসের ২৫ দিনে ১২৭৫টি গ্রাম পঞ্চায়েতে শিবির করে সাড়ে ৫ লক্ষের বেশি মানুষের চোখ পরীক্ষা করানো হয়েছে বলে সূত্রের খবর। চশমা দেওয়া হয়েছে আড়াই লক্ষের বেশি। শুধু ২৭ জানুয়ারি তারিখেই ১ লক্ষ ৬০ হাজার জন চশমা পেয়েছেন! ৩০ জানুয়ারিতে এক দিনেই গোটা রাজ্যে চক্ষু শিবির হয়েছে ৫৮টি। ক্ষুব্ধ অপটোমেট্রিস্টদের প্রশ্ন, হাসপাতালের কাজ সামলে হাতে গোনা কর্মীদের পক্ষে কি এই বিশাল কর্মকাণ্ড সামলানো সম্ভব?
‘ওয়েস্ট বেঙ্গল প্রোগ্রেসিভ মেডিক্যাল টেকনোলজিস্টস অ্যাসোসিয়েশন’-এর রাজ্য সম্পাদক শমিত মণ্ডলের কথায়, ‘‘আমরা স্বাস্থ্য দফতরের কাছে এই অবস্থার প্রতিকার চেয়েছি। এই ভাবে কাজ করা যায় না। জেলায় জেলায় হাসপাতালে মাত্র এক জন করে অপটোমেট্রিস্ট রয়েছেন। কোথাও কোথাও সেটাও নেই। এক-এক জন অপটোমেট্রিস্টকে ৩-৪টি ব্লকে ‘চোখের আলো’-র শিবির করতে হচ্ছে। ৮০-৯০ কিলোমিটার দূরে দূরে হচ্ছে শিবিরগুলি। এই কাজ করতে গিয়ে তাঁরা হাসপাতালে থাকতে পারছেন না। সেখানে রোগীরা এসে পরিষেবা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন।’’
স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী এ ব্যাপারে বলেন, ‘‘এখন অপটোমেট্রিস্ট নিয়োগ করা যাবে না। ভোটের আগে নিয়োগ সম্ভবই নয়। যা আছে তা দিয়েই কাজ চালাতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy