Advertisement
১০ ডিসেম্বর ২০২৪

অজ্ঞান করবে কে, ভুগছে পিজির ওটি

অস্ত্রোপচারে ভয় পাচ্ছেন ডাক্তারেরা। একের পর এক ডেট পিছিয়ে দিচ্ছেন অনেকেই। নিজেদের কারণে নয়, রোগীদের সুরক্ষার কথা ভেবেই। জেলা হাসপাতাল নয়, অ্যানাস্থেটিস্টের অভাবে বেহাল খাস কলকাতার সুপার স্পেশ্যালিটি এসএসকেএম।

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

সোমা মুখোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০১৭ ০৩:৩৫
Share: Save:

অস্ত্রোপচারে ভয় পাচ্ছেন ডাক্তারেরা। একের পর এক ডেট পিছিয়ে দিচ্ছেন অনেকেই। নিজেদের কারণে নয়, রোগীদের সুরক্ষার কথা ভেবেই। জেলা হাসপাতাল নয়, অ্যানাস্থেটিস্টের অভাবে বেহাল খাস কলকাতার সুপার স্পেশ্যালিটি এসএসকেএম। এমনিতেই অ্যানাস্থেটিস্ট কম ছিল। তার উপরে গত কয়েক মাসে পাঁচ জন ডাক্তার চাকরি ছেড়েছেন। সব মিলিয়ে ত্রাহি ত্রাহি রব অপারেশন থিয়েটারে।

বহু ডাক্তার জানাচ্ছেন, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা ও শিশুদের ক্ষেত্রে তাঁরা বেশি ভয় পাচ্ছেন। এমনিতেই অ্যানাস্থেশিয়ার ডোজের সামান্য এ দিক-ও দিক হলেই বিপর্যয়ের আশঙ্কা থাকে। বয়স্ক ও শিশুদের ক্ষেত্রে ঝুঁকিটা বেশি।

যেখানে বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসার মান ও খরচে সরকারি তরফে লাগাম পরানোর বিষয়টি নিয়ে তেতে গোটা রাজ্য, সেখানে সেরা সরকারি হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রে এমন ঝুঁকি থেকে যাওয়ায় অস্বস্তিতে চিকিৎসক থেকে স্বাস্থ্যকর্তা।

এক ডাক্তারের কথায়, ‘‘চারপাশে ডাক্তারদের বিষয়ে সাধারণ মানুষের যে অনাস্থা তৈরি হয়েছে, তাতে এমনিতেই ভয়ে আছি। আবার অজ্ঞান করতে গিয়ে কোনও বিপত্তি ঘটলে কী হবে, ভেবেই কাঁটা হয়ে থাকছি।’’

হাসপাতাল সূত্রে খবর, আপাতত অপারেশনের টেবিল ৩৬টি। কিন্তু অ্যানাস্থেটিস্ট মাত্র পাঁচ জন। তাঁদের বিভিন্ন শিফ্‌ট, সাপ্তাহিক ছুটি, শারীরিক অসুস্থতা বা কোনও কারণে অনুপস্থিতি, সব মিলিয়ে এক সঙ্গে সকলকে পাওয়া যায় না। তাই অস্ত্রোপচারের আগে রোগীকে অজ্ঞান করবেন কে, তা নিয়েই ধন্ধে চিকিৎসকেরা। মূলত অ্যানাস্থেশিয়ার স্নাতকোত্তর স্তরের পড়ুয়াদের উপরেই রয়েছে রোগীকে অজ্ঞান করার দায়িত্ব।

কবে বদলাবে এই পরিস্থিতি? এসএসকেএমের অধিকর্তা মঞ্জু বন্দ্যোপাধ্যায় কোনও উত্তর দেননি। তবে স্বাস্থ্য-কর্তারা জানান, অ্যানাস্থেটিস্টের অভাব গোটা রাজ্য জুড়েই। বেশির ভাগ হাসপাতালেই স্নাতকোত্তর পড়ুয়ারাই ভরসা। সিনিয়র ডাক্তারেরা চাকরি ছাড়লে বা অবসর নিলে ডাক্তার পাওয়াই বড় সমস্যা।

স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে খবর, রাজ্য জুড়ে অ্যানাস্থেটিস্টের অভাবেই জেলা স্তরে বহু জায়গায় সিজারিয়ান চালু করা যায়নি। প্রসবের সময়ে সামান্য জটিলতার ভয় থাকলেও প্রসূতিদের পাঠিয়ে দেওয়া হয় শহরের মেডিক্যাল কলেজগুলিতে। কেন এই সমস্যা? তাঁদের বক্তব্য, অ্যানাস্থেশিয়া পাশ করা ডাক্তারের সংখ্যা খুব বেশি নয়। যাঁরা পাশ করেন, তাঁদের বড় অংশ বেসরকারি হাসপাতালে যোগ দেন। ফলে চাহিদা আর জোগানের ঘাটতি থেকে যায়। এখন সরকার চাইলেও দ্রুত অ্যানাস্থেটিস্ট নিয়োগ করতে পারবে না। তবে চেষ্টা চলছে। সদ্য অবসরপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কথা চলছে। যেখানে অস্ত্রোপচার কম, সেখান থেকে অ্যানাস্থেটিস্ট তুলে বেশি অস্ত্রোপচারের জায়গায় পাঠানোর ব্যাপারে চেষ্টা চলছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Anesthetist SSKM Hospital
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy