Advertisement
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

ওলা-উবের চালকদের তথ্য তলব

উদ্বেগ বাড়িয়েছে রাতের বিধাননগরে লাক্সারি ট্যাক্সিতে এক মহিলা যাত্রীর হেনস্থা। এ বার তাই ওলা-উবেরের মতো অ্যাপ-নির্ভর ক্যাব সংস্থার কাছে সমস্ত চালকের সবিস্তার তথ্য চাইল পরিবহণ দফতর।

অত্রি মিত্র
শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০১৬ ০১:৩৯
Share: Save:

উদ্বেগ বাড়িয়েছে রাতের বিধাননগরে লাক্সারি ট্যাক্সিতে এক মহিলা যাত্রীর হেনস্থা। এ বার তাই ওলা-উবেরের মতো অ্যাপ-নির্ভর ক্যাব সংস্থার কাছে সমস্ত চালকের সবিস্তার তথ্য চাইল পরিবহণ দফতর। সাত দিনের মধ্যে ওই তথ্য দফতরে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, কোনও সংস্থার অধীনে থাকা প্রতিটি গাড়িতে সুরক্ষার সমস্ত শর্ত পূরণ হয়েছে কি না, তা-ও জানতে চেয়েছে সরকার। সংস্থাগুলির থেকে ওই তথ্য পেলে নিয়মিত গাড়ি ধরে তা মিলিয়ে দেখবে পরিবহণ দফতর।

গত সপ্তাহে সল্টলেকে উবেরের একটি গাড়িতে ওই হেনস্থার ঘটনা ঘটে। অভিযোগ, গাড়িতে প্যানিক বাটনের মতো কোনও ব্যবস্থা না থাকায় ওই মহিলা চলন্ত গাড়ি থেকে লাফিয়ে নেমে কোনও রকমে আত্মরক্ষা করেন। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই উবের-কে শো-কজ করেছে পরিবহণ দফতর। প্রশ্ন উঠেছে, সরকারের নানা শর্ত থাকা সত্ত্বেও যাত্রী-নিরাপত্তার কোনও ব্যবস্থা ছাড়াই ওলা, উবেরের মতো সংস্থাগুলি গাড়ি চালাচ্ছে কী করে? বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীও। এর পরেই সংস্থাগুলির কাছ থেকে সবিস্তার তথ্য চেয়ে পাঠানোর এই সিদ্ধান্ত।

তবে শুধু নিরাপত্তা নিয়েই নয়, ভাড়া নিয়েও এখন সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। অভিযোগ, বেশির ভাগ সময়েই সংস্থাগুলির তরফে নির্দিষ্ট ভাড়ার চেয়ে বাড়তি রেটে ভাড়া চাওয়া হচ্ছে। এমনকী অনেক ক্ষেত্রে যাত্রী প্রত্যাখ্যানের ঘটনাও ঘটছে। তবে এখনই এ সব নিয়ে সরকার হস্তক্ষেপ করতে নারাজ। এক পরিবহণ কর্তার কথায়, ‘‘যাত্রীরা খুশি না হলে ওই পরিষেবা নেবেন না। কিন্তু অযথা ভাড়া নিয়ে মাথা গলাবে না সরকার।’’

এ বছরের শুরুতে ওলা, উবেরের মতো সংস্থাগুলির উপরে বেশ কিছু শর্ত আরোপ করেছিল রাজ্য সরকার। সেগুলি হল— ১. প্রত্যেক সংস্থাকে ২৪X৭ কন্ট্রোল রুম তৈরি করতে হবে। ২. প্রতি দু’বছর অন্তর লাইসেন্স নবীকরণ করাতে হবে। ৪. পরিবহণ পরিষেবার সাধারণ শর্তগুলি পুরণ করতে না-পারলে সরকার প্রয়োজনে লাইসেন্স বাতিল করবে। ৫. নিয়মিত পারফরম্যান্স অডিট করতে হবে। ৬. গাড়িতে সংস্থার লোগো থাকতে হবে। ৬. গাড়িতে বাধ্যতামূলক ভাবে জিপিএস পরিষেবা এবং ‘ফিজিক্যাল প্যানিক বাটন’ রাখতে হবে। ৭. গাড়িতে সিসি ক্যামেরার নজরদারি রাখতে হবে। ৮. চালকের বিস্তারিত সরকার অনুমোদিত নিরাপত্তা সংস্থাকে দিয়ে পরীক্ষা করিয়ে নিতে হবে। কথা ছিল, শর্ত পূরণ করলে তবেই সংস্থাগুলিকে লাইসেন্স দেওয়া হবে।

সংস্থাগুলির তরফে জানানো হয়, শর্ত পূরণে তাদের অন্তত তিন মাস সময় দেওয়া উচিত। সরকার তা মেনে নিয়ে ১৫ জুন পর্যন্ত অস্থায়ী লাইসেন্স দেয় কয়েকটি সংস্থাকে। এর পরে তার সময়সীমা ফের বাড়িয়ে ১৫ সেপ্টেম্বর করা হয়েছে। কিন্তু পরিবহণ দফতর সূত্রে খবর, তিন মাসের বেশি কাটার পরেও সংস্থাগুলি প্রাথমিক শর্তগুলি পূরণে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। এমনকী, সংস্থার অধিকাংশ গাড়িতেই যাত্রী সুরক্ষায় প্যানিক বাটন পর্যন্ত নেই। এর পরেই বিষয়টি নিয়ে কড়া অবস্থান নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

পরিবহণ দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘গাড়ির মালিকের তথ্য আমরা জানি। কিন্তু বেশির ভাগ মালিক নিজে গাড়ি চালান না। অথচ কোনও চালক, তার যাবতীয় তথ্য সম্পর্কে সরকারের কিছুই জানা নেই। কথা ছিল, প্রত্যেক চালকের ছবি ও সবিস্তার তথ্য যাত্রীদের দেওয়া হবে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে তা দেওয়া হচ্ছে না। বাধ্য হয়েই আমরা এ নিয়ে কড়া হয়েছি।’’ কর্তার হুঁশিয়ারি, ‘‘সংস্থার কোনও চালকের বিরুদ্ধে কোথায় অভিযোগ জানাতে হবে, তা নিয়েও নির্দিষ্ট তথ্য নেই। সংস্থাগুলি যখন এ শহরে ব্যবসা করছে, তখন যাত্রী-সুরক্ষার বিষয়টিও তাদের বজায় রাখতে হবে।’’ পরিবহণ-কর্তার দাবি, ‘‘নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সবিস্তার তথ্য না দিলে সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নেওয়া হবে। অস্থায়ী লাইসেন্সও বাতিল হতে পারে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

uber ola
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy