একত্রিশ বছরে এই প্রথম। খাস মেট্রো ভবনে ঢুকে মেট্রোর দুরবস্থার বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন যাত্রীরা। সমস্যা তাড়াতাড়ি না মিটলে ‘সোশ্যাল মিডিয়া’র মাধ্যমে যাত্রীদের একজোট করে বড় আন্দোলেনর ডাক দেবেন বলেও জানিয়ে দিয়েছেন তাঁরা।
ভেঙে পড়া পরিকাঠামো এবং রক্ষণাবেক্ষণের ত্রুটি। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে মেট্রোর কর্মসংস্কৃতি। এই তিন গেরোতেই বারবার থমকে যাচ্ছে মেট্রো। কখনও সুড়ঙ্গে, কখনও বা বাইরে। আর এর জন্য দুঃখপ্রকাশ দূর অস্ত, যে কোনও ঘটনায় যান্ত্রিক ত্রুটি বলে দূর থেকেই দায় এড়িয়ে গিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। যাত্রীদের বক্তব্য, এত দিন ধরে মুখ বুজে সহ্য করছিলেন তাঁরা। কিন্তু এ বার পরিষেবা একেবারে শিকেয় ওঠায় সোমবার সরাসরি মেট্রো ভবনে ঢুকে ক্ষোভ জানালেন তাঁরা। মেট্রো কর্তৃপক্ষের হাতে এ দিন তাঁরা ১৮ দফা দাবি সংবলিত একটি স্মারকলিপিও তুলে দিয়েছেন। দাবিগুলির যে যৌক্তিকতা রয়েছে, আগামী ১০ এপ্রিল ফের মেট্রোকর্তারা বৈঠক করবেন বলে জানানোতেই তা পরিষ্কার।
এ দিন মেট্রো ভবনের গেটে ‘সুস্থ পরিষেবা’র দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন যাত্রীরা। পরে চিফ অপারেশন ম্যানেজারের সঙ্গে বৈঠক করতে ভিতরে ঢোকেন তিন জন প্রতিনিধি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি দেখা করতে রাজি না হওয়ায় যাত্রী-প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেন ডেপুটি অপারেশন ম্যানেজার। দাবিগুলি দেখে তিনি কয়েকটি বিষয় শীঘ্রই সমাধান করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন বলে এক যাত্রী-প্রতিনিধি গৌরাঙ্গ দেবনাথ।
বিক্ষোভকারী যাত্রীদের বক্তব্য, কী কারণে মেট্রো যত্রতত্র আটকে পড়ছে, তার কারণ তাঁরা জানতে চান না, বুঝতেও চান না। শুধু চান সুষ্ঠু ও যথাযথ পরিষেবা। তাঁদের দাবি, পরিষেবা ভাল করার লক্ষ্যে মেট্রো অনেক টাকা ভাড়া বাড়িয়েছে। কিন্তু পরিষেবা উল্টে একেবারে তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। এই অবস্থায় মেট্রো কর্তৃপক্ষকে কড়া বার্তা দিতেই তাঁদের অভিযান বলে জানান যাত্রীরা।
পরিষেবা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, পরিষেবা নিয়ে অভিযোগ কোথায় জানানো যাবে তা বলা, ট্রেন চালানোর আগে প্রতিটি রেক পরীক্ষা করা, রবিবার ভোর থেকে পরিষেবা দেওয়া, সময়ের ব্যবধান কমানো, চলমান সিঁড়ির রক্ষণাবেক্ষণ, স্টেশনগুলিতে বাতাস ঢোকার যন্ত্র ঠিক ভাবে চালু করা-সহ মোট ১৮টি দাবি রয়েছে ওই স্মারকলিপিতে। এ সব গোলমালেই এখন ঝরঝরে ‘দেশের গবর্’ কলকাতা মেট্রো। অভিযোগ, পরিষেবা ও পরিকাঠামোর হাল নিয়ে রেল বোর্ড বা মেট্রো কেউই মাথা ঘামাচ্ছে না। যাত্রীদের দাবি, তলানিতে মেট্রোর কর্মসংস্কৃতিও। তাই গত ২১ ফেব্রুয়ারি ‘ডেঞ্জার জোনে’ মেট্রো আটকে পড়ার এত বড় ঘটনার পরেও তদন্তে তার কারণ উঠে আসেনি। তা মেনে নিয়েছেন কর্তারা। জানতে চায়নি রেলবোর্ডও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy