আরও পড়ুন: বন্ধ ঘরে স্বামীর দেহ, পাশের ঘরে রক্তাক্ত স্ত্রী
পোস্টটিতে লেখা হয়েছে, ‘সকালে মৃত ঘোষণা সত্ত্বেও কেউ তাঁর দিকে ফিরেও তাকাননি।’ সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদও দেহ সরানো হয়নি বলে সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দেহ কী ভাবে হাসপাতালের বারান্দায় পড়ে রইল, সেই প্রশ্ন তুলেছেন মানসিক স্বাস্থ্য আন্দোলনের কর্মীরা। সম্প্রতি মানসিক হাসপাতালের রোগীদের প্রতি আচরণ কেমন হওয়া উচিত তা নিয়ে ব্রিটেনের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ওই হাসপাতালগুলির নার্সদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছিল স্বাস্থ্য ভবন। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিনিধিদের মতে, মানসিক রোগীদের প্রতি আন্তরিক না হলে কোনও প্রশিক্ষণই যথেষ্ট নয়। একেই তো ওঁরা পরিবারের অনাদরের শিকার হন। মৃত্যুর পরেও সরকারি পরিকাঠামো যদি তাঁদের ন্যূনতম সম্মান না দেয়, তবে তো আর কিছুই বলার থাকে না বলে জানাচ্ছেন তাঁরা।
আরও পড়ুন: ফি বৃদ্ধি ঘিরে ক্ষোভ সাউথ পয়েন্টে
সমাজকর্মী শুক্লা দাস বড়ুয়ার মতে, পুলিশের মাধ্যমে যাঁরা মানসিক হাসপাতালে ভর্তি হন, তাঁদের ‘আননোন’ হিসেবেই ভর্তি করানো হয়। শুক্লার কথায়, ‘‘তবে পরে তিনি সুস্থ হলে তাঁর পরিচয়ের বদল ঘটানোর তাগিদ কারও থাকে না।’’
যাঁর ফেসবুক পোস্টে এই বিষয়টি সামনে আসে, সেই সমাজকর্মী রত্নাবলী রায় বলেন, ‘‘এক জন মায়ের দেহ আগলে রাখলে তাঁর মনোরোগী হিসাবে চিকিৎসা শুরু হয়। কিন্তু মৃত্যুর পরেও অনাদরে রোগীর দেহ ফেলে রাখার অসুখের চিকিৎসা কেন হয় না?’’ এ প্রসঙ্গে পাভলভের সুপার গণেশ প্রসাদের বক্তব্য, ‘‘এমন খবর জানা নেই।’’ হাসপাতালের আধিকারিকদের দাবি, দেহ ওয়ার্ডেই ছিল। পুলিশ ছবি তুলতে আসায় তা বার করা হয়েছিল। অনাদরে দেহ ফেলে রাখার অভিযোগ ঠিক নয়।
ইন্ডিয়ান সাইকায়াট্রিক সোসাইটির সম্পাদক চিকিৎসক রঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘কোনও অজুহাতেই এ ভাবে দেহ ফেলে রাখা যায় না। ওই রোগীর ঠিক মতো চিকিৎসা হয়েছিল কি না, তা-ও দেখা উচিত।’’ বস্তুত, মানসিক হাসপাতালের প্রশাসনে মনোরোগ চিকিৎসকেরা না থাকায় পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে বলে মনে করেন তিনি।
স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এ রকম ঘটনা ঘটে থাকলে তা দুর্ভাগ্যজনক। ঠিক কী হয়েছিল খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’