প্রতীকী ছবি
করোনা অতিমারির জেরে সিবিএসই বোর্ডের দশম শ্রেণির পরীক্ষা বাতিল হয়েছে। কিন্তু পরীক্ষার্থীদের যে পদ্ধতিতে মূল্যায়ন করার কথা বলেছে সিবিএসই বোর্ড, তা নিয়ে ক্ষুব্ধ বেশ কিছু স্কুল কর্তৃপক্ষ। তাঁদের দাবি, সিবিএসই বোর্ডের কর্তাদের তাঁরা ক্ষোভের কথা জানিয়েছেন।
অধ্যক্ষেরা জানাচ্ছেন, ব্যক্তিগত মূল্যায়ন নয়, স্কুলের মূল্যায়নের উপরে ভিত্তি করেই পরীক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করার কথা বলছে বোর্ড। দশম শ্রেণির যে সমস্ত বিষয়ের উপরে পরীক্ষা হয়, কোনও নির্দিষ্ট স্কুলে সেই সমস্ত বিষয়ে গত তিন বছরে গড়ে যত নম্বর উঠেছে, তার মধ্যে সর্বোচ্চ গড় নম্বরটির উপরে ভিত্তি করে পরীক্ষার্থীদের নম্বর দিতে হবে। ওই গড় নম্বরের উপরে সর্বোচ্চ দুই শতাংশ বাড়ানো যাবে বলে জানিয়ে দিয়েছে বোর্ড। ধরা যাক, কোনও একটি সিবিএসই বোর্ডের একটি স্কুলে ২০১৮, ২০১৯ এবং ২০২০ সালে অঙ্কে পরীক্ষার্থীরা গড়ে পেয়েছে ৫০, ৬০ এবং ৭০ শতাংশ নম্বর। বোর্ড জানাচ্ছে, এই বার ওই স্কুলের পরীক্ষার্থীদের অঙ্কে গড়ে ৭০ শতাংশ নম্বর দেওয়া যাবে সঙ্গে সর্বাধিক ২ নম্বর বাড়ানো যেতে পারে। অর্থাৎ, ওই স্কুলের কোনও পড়ুয়া অঙ্কে ৭২-এর বেশি পাবে না। শুধু তা-ই নয়, একটি নির্দিষ্ট শতাংশের মধ্যে নির্দিষ্ট কিছু সংখ্যক পরীক্ষার্থীর নম্বর রাখার কথাও বলেছে বোর্ড। যেমন, ধরা যাক কোনও একটি স্কুলের ক্ষেত্রে বোর্ড বলে দিল, অঙ্কে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ নম্বর ১০ জনের বেশি পরীক্ষার্থীকে দেওয়া যাবে না। ওই একই বিষয়ে ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ দিতে হবে ২০ জন পরীক্ষার্থীকে। সেই সঙ্গে খেয়াল রাখতে গড় সর্বোচ্চ নম্বরের দিকেও।
পরীক্ষার্থীদের নম্বর সারা বছর স্কুলের অনলাইন ও অফলাইন পরীক্ষার মূল্যায়নের উপরে ভিত্তি করে দেওয়ার কথা। কিন্তু বোর্ডের এই নির্দেশের পরে সেই পদ্ধতি আর অনুসরণ করা যাবে কি না, সেই প্রশ্নও তুলেছেন কেউ কেউ।
অধ্যক্ষদের একাংশের মতে, এর ফলে কোনও কোনও পরীক্ষার্থী নিজেকে বঞ্চিত মনে করতেই পারে। অধ্যক্ষদের প্রশ্ন, স্কুলের গত তিন বছরের গড় নম্বর কেন এই বছরের পরীক্ষার্থীদের মূল্যায়নের মাপকাঠি হবে? চলতি বছরে কোনও পড়ুয়া গত তিন বছরের থেকে পরীক্ষার্থীদের থেকে অনেক ভাল নম্বর পাওয়ার যোগ্যতা রাখতেই পারে।
উত্তর কলকাতার বি টি রোডের সিবিএসই বোর্ডের একটি স্কুলের অধ্যক্ষ বলেন, “আমাদের এই আপত্তির কথা সিবিএসই বোর্ডের পূর্বাঞ্চলের প্রধানকে জানিয়েছি। কিন্তু কোনও সমাধান হয়নি।” সিবিএসই বোর্ড পরিচালিত স্কুল শ্রী শিক্ষায়তনের মহাসচিব ব্রততী ভট্টাচার্য মনে করেন, “এই বছর পরীক্ষা না হওয়ায় কোনও না কোনও পদ্ধতিতে মূল্যায়ন তো করতেই হত। যে হেতু এই ভাবে মূল্যায়ন আগে হয়নি, তাই অধ্যক্ষদের কিছু আপত্তি থাকতেই পারে। তবে কোনও পড়ুয়ার নিজের নম্বর দেখে তা আপত্তিজনক বলে মনে হলে সে বোর্ডকে তা জানাতে পারে। সেই সুযোগ দিয়েছে বোর্ড।”
তবে কোনও কোনও অধ্যক্ষ আবার বলছেন, বোর্ডের অধীনে দশম শ্রেণির পরীক্ষা না হওয়ায় স্কুলগুলি যাতে প্রত্যেক পরীক্ষার্থীকে ঢালাও নম্বর দিতে না পারে, তা নিশ্চিত করতেই এমন ব্যবস্থা করেছে বোর্ড। সাউথ পয়েন্ট স্কুলের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য কৃষ্ণ দামানি এ বিষয়ে বললেন, “আমাদের এই পদ্ধতিতে মূল্যায়নের ক্ষেত্রে আপত্তির কোনও কারণ দেখছি না। আমাদের স্কুলে এক্সপার্ট কমিটি আছে। সেই কমিটির সদস্যেরা বিষয়টি দেখছেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy