আকাশে তখন সূর্য ডুবছে। কাঁসর-ঘণ্টা সহযোগে ঠাকুরদালানে উঠল একচালার প্রতিমা। নাটমন্দিরের সিঁড়ির সামনে বসল ব্যারিকেড। সেই দিকে তাকিয়ে প্রবীণ প্রসূন হাজরা আক্ষেপ করে বলেছিলেন, ‘‘পঞ্চমীর সন্ধ্যায় বেদিতে ঠাকুর ওঠা জানবাজারের রানি রাসমণির বাড়ির দুর্গাপুজোর পরম্পরা। তবে সিঁড়ি বেয়ে দর্শনার্থীদের উঠতে না পারা এ বার প্রথম।’’ এই দালানেই এক সময়ে সখী বেশে এসে দুর্গাপুজো করেছিলেন শ্রীরামকৃষ্ণ। প্রতি বছর দুর্গাপুজোয় ক্যালিফর্নিয়া থেকে দেশে আসেন প্রসূনবাবুর মেয়ে পূজা। এ বার তাঁর ভরসা ছিল ভিডিয়ো-কল। এ বছর ফুল ছাড়াই হয়েছে অঞ্জলি।
এ বার অন্নকূট উৎসব হয়নি বলে জানিয়েছেন শ্যামবাজারের নব বৃন্দাবনের অরুণাংশু করুরী। বললেন, ‘‘প্রতি বছর ৩০০ পদের অন্নকূট হয়। প্রসাদ পান তিন হাজার লোক।’’ সংক্রমণ রোধে ভিড় এড়ানোর কথা বলছেন সকলেই। তাই প্রতিমার উচ্চতাও কমিয়ে দিয়েছেন অরুণাংশুবাবুরা। যাতে আজ, দশমীতে সাইকেল ভ্যানে করেই প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া যায়।
মণ্ডপে প্রবেশ নিষেধ। তাই প্রতিবেশীদের অনেকেই পুজো দেখতে এসেছিলেন তাঁদের বাড়িতে। আর তাই বাড়িতে ঢোকার মুখেই স্যানিটাইজ়েশন টানেল বসিয়েছে যাদবপুর রামগড়ের ঘটকবাড়ি। সেই পরিবারের নবীন সদস্য প্রসেনজিৎ ঘটক বললেন, ‘‘পুজোর কয়েক দিন আগে থেকেই বাড়ি লোকে ভরে যেত। এ বার আত্মীয়েরা তেমন ভাবে আসতে পারেননি। তবে পড়শিদের নিয়েই পুজোটা কাটিয়ে দিলাম।’’