Advertisement
০৫ মে ২০২৪

দমদমে দখল রাস্তা, দুর্ভোগ তাই নিত্যসঙ্গী

নাগেরবাজার থেকে চিড়িয়া মোড় পর্যন্ত দমদম রোডের অর্ধেকই দখল হয়ে পড়ে রয়েছে। রাস্তাটি যে যানবাহন চলাচলের জন্য, সে কথা যেন ভুলতে বসেছে পুলিশও। পায়ে হেঁটে যাতায়াতের জন্য ফুটপাথ বলতে কিছুই নেই। গোটাটাই হকারদের দখলে।

জট: এটাই দমদম রোডের রোজকার ছবি।— নিজস্ব চিত্র।

জট: এটাই দমদম রোডের রোজকার ছবি।— নিজস্ব চিত্র।

অরুণাক্ষ ভট্টাচার্য
শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০১৭ ০১:৩১
Share: Save:

লাল রঙের একটি গাড়ি। মাসের পর মাস রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে। গাড়িটি কার? কেউ জানে না। গাড়িটিকে কখনও বেরোতে দেখেননি কেউ। ধুসর রঙের আর একটি ছোট গাড়ির পিছনের চাকাই নেই। পুলিশ ফাঁড়ির কাছে দীর্ঘদিন দাঁড়িয়ে রয়েছে একটি মিনি বাস। চাকাটাই বসে গিয়েছে। একটি-দু’টি নয়, এ রকম প্রচুর গাড়ি দাঁড়িয়ে রাস্তার দু’ধারে। এটাই দস্তুর দমদম রোডে।

নাগেরবাজার থেকে চিড়িয়া মোড় পর্যন্ত দমদম রোডের অর্ধেকই দখল হয়ে পড়ে রয়েছে। রাস্তাটি যে যানবাহন চলাচলের জন্য, সে কথা যেন ভুলতে বসেছে পুলিশও। পায়ে হেঁটে যাতায়াতের জন্য ফুটপাথ বলতে কিছুই নেই। গোটাটাই হকারদের দখলে। ক্রমশ সরু হতে থাকা রাস্তায় যানজট যেন নিয়ম হয়ে গিয়েছে। নাগেরবাজার থেকে চিড়িয়া মোড় যেতে উঠে আসে নাভিশ্বাস। মাত্র সাড়ে চার কিলোমিটারের পথ যেতে পেরিয়ে যায় ঘণ্টাখানেক।

অথচ রাস্তার দু’পাশ জুড়ে দাঁড়িয়ে থাকা গাড়ি সরানোর দিকে নজর নেই কারও। এলাকার মানুষই জানাচ্ছেন, কিছু গাড়ি কখনওই চলাফেরা করতে দেখা যায় না। মোতিঝিল সায়েন্স কলেজের পড়ুয়ারা জানান, এখানে কিছু গাড়ি সারা দিন রাস্তার উপরেই পার্ক করা থাকে। ওই রাস্তায় দেখা গেল, গরুহাটা, মোতিঝিল, হনুমান মন্দির, চিড়িয়া মোড়, দমদম স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় একটি গাড়ির পাশে দাঁড়িয়ে আরও গাড়ি। ছোট গাড়ি, ম্যাটাডর, মিনিডর এমনকী, ট্রাকও দাঁড়িয়ে রাস্তার উপরেই। দমদম থানার অধীনস্থ ঘুঘুডাঙা ফাঁড়ির সামনেও ঠায় দাঁড়িয়ে এমন কিছু গাড়ি।

এই রাস্তার উপরেই রয়েছে স্থায়ী ট্যাক্সি, অটো, রিকশা স্ট্যান্ডও। নাগেরবাজার, দমদম স্টেশন, চিড়িয়া মোড়ের মতো এলাকায় রাস্তার উপরেই ট্যাক্সি স্ট্যান্ড। একটু রাত হলে আরও সরু হয় রাস্তা। স্থানীয়েরা জানান, তখন গাড়ির পাশাপাশি লাইন দিয়ে দাঁড়ায় বাসও। রাস্তার ধারে এটিএমে যাওয়ারও পথ মেলে না বলে অভিযোগ। শুধু গাড়ি নয়, ইট, বালি, সুড়কি, পাথরের মতো ইমারতি দ্রব্যের স্তূপ দেখা যায় নানা জায়গায়।

এরই সঙ্গে রয়েছে হকার সমস্যা। ফলে হাঁটার পথ মেলা ভার। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টো পর্যন্ত দমদম স্টেশন থেকে ফাঁড়ি পর্যন্ত আনাজ, মাছের বাজার বসে। তার জন্য দু’পাশ মিলিয়ে প্রায় ১০ ফুট রাস্তা দখল হয়ে থাকে। ফলে নিত্য দুর্ঘটনা লেগেই থাকে। শুক্রবার দুপুরের মতো ঘটছে মৃত্যুর ঘটনাও। অভিযোগ, এ সব ব্যাপারে ট্র্যাফিক পুলিশ কিংবা জন প্রতিনিধিদের জানিয়েও কোনও সুরাহা হয় না।

দমদম রোডের এই হাল প্রসঙ্গে স্থানীয় বিধায়ক ও তথ্য প্রযুক্তিমন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, ‘‘এ দিকে নজর দিতে দমদম পুরসভাকে জানানো হয়েছে।’’ তবে এ বিষয় জানতে গিয়ে বারবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি ব্যারাকপুর কমিশনারেটের ডিসি ট্র্যাফিক ইমরান ওহাবকে। ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার সুব্রত মিত্র বলেন, ‘‘ওই রাস্তায় নজরদারি চালানো হয়। এই সমস্যাগুলিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Road Dumdum Convenience দমদম
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE