Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

থানাতেই খেলাঘর

‘খেলাঘর বাঁধতে লেগেছি!’শিশুমন বুঝতে বিভিন্ন থানার কর্মী-অফিসারদের কাছে এটাই এখন আপ্তবাক্য।থানা মানেই শুধু চোর-ডাকাত, খাকি উর্দি, লাঠি, বন্দুক নয়! বরং শিশুদের কাছে থানাও একটা ‘খেলার জায়গা’!

শিশু-স্বর্গ: বেলঘরিয়া থানায়। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়

শিশু-স্বর্গ: বেলঘরিয়া থানায়। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়

শান্তনু ঘোষ
শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০১৭ ০১:৩৬
Share: Save:

‘খেলাঘর বাঁধতে লেগেছি!’

শিশুমন বুঝতে বিভিন্ন থানার কর্মী-অফিসারদের কাছে এটাই এখন আপ্তবাক্য।

থানা মানেই শুধু চোর-ডাকাত, খাকি উর্দি, লাঠি, বন্দুক নয়! বরং শিশুদের কাছে থানাও একটা ‘খেলার জায়গা’!

থানা সম্পর্কে চিরাচরিত চোর-পুলিশের ধারণা এ বার বদলাতে চলেছে শিশুদের মন থেকে। রাজ্যের বিভিন্ন থানায় ইতিমধ্যেই তৈরি হয়েছে কচিকাঁচাদের খেলাঘর। বছরখানেক আগে হাওড়া কমিশনারেটের বালি থানার পরে এ বার ব্যারাকপুর কমিশনারেটের বেলঘরিয়া ও বরাহনগর থানায়।

রাজ্য পুলিশের কর্তারা জানাচ্ছেন, কখনও কোন শিশুকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসতে হয়। কখনও আবার অভিভাবকেরাও প্রয়োজনীয় কাজে থানায় যাওয়ার সময়ে বাচ্চাদের কোথাও রাখার সুযোগ না থাকায় সঙ্গে নিয়ে যান। কোনও কোনও অপরাধের তদন্তে শিশুদের সঙ্গে কথা বলাও জরুরি হয়ে পড়ে তদন্তকারীদের কাছে।

প্রতিটি ক্ষেত্রেই থানায় এসে সেখানকার পরিবেশ মানতে পারে না অধিকাংশ বাচ্চা। প্রত্যেকের মনেই চেপে বসে পুলিশ, বন্দুক, লাঠি, দড়ির ভয়। ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার সুব্রত মিত্র বলছেন, ‘‘পুলিশ মানেই যে ভয় নয়, বরং চোর-পুলিশ বা বন্দুকের বাইরেও যে থানায় আনন্দ করার সুযোগ আছে তা শিশুদের বোঝাতেই এই খেলাঘর বানানো হচ্ছে।’’ রাজ্য পুলিশের কর্তারা জানাচ্ছেন, এখন প্রতিটি জেলা বা কমিশনারেটের একটি করে থানাকে শিশু বান্ধব থানা হিসেবে বেছে ‘খেলাঘর’ চালু করা হচ্ছে। আগামী দিনে তা বাকি থানাগুলিতেও চালু হবে।

বছরখানেক আগে ব্যারাকপুর কমিশনারেটের ১৪টি থানার (১টি মহিলা থানা) মধ্যে বেলঘরিয়া থানাকে ‘চাইল্ড ফ্রেন্ডলি মডেল থানা’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। একটি ঘর বেছে নিয়ে সেখানে ‘খেলাঘর’ তৈরির কাজ শুরু করেন বেলঘরিয়ার আইসি দেবর্ষি সিংহ। এর পরে খেলাঘর তৈরির জন্য বেছে নেওয়া হয় বরাহনগর থানাকে। নেতৃত্বে ছিলেন আইসি রাম মণ্ডল।

বরাহনগর ও বেলঘরিয়ার সেই খেলাঘরে রয়েছে মিকি মাউস, পুতুল, গাড়ি-সহ নানা খেলনা। দেওয়াল জুড়ে শিশুদের প্রিয় কার্টুন চরিত্র। রয়েছে ছোট একটি খাটও। উদ্ধার হওয়া শিশুদের আনার পরে তাদের ঘুম পেলেও যাতে কষ্ট না হয়। এই খেলাঘরের দায়িত্বে এক জন মহিলা কনস্টেবল ও মহিলা সিভিক ভলান্টিয়ার। পাশাপাশি এক জন নোডাল অফিসার। তবে খাকি উর্দিতে নয়, সব পুলিশকর্মী-অফিসারকে এ ঘরে ঢুকতে হবে সাদা পোশাকে।

এই খেলাঘর বেঁধেই শিশুদের মন থেকে পুলিশ-ভীতি দূর করতে চাইছে ব্যারাকপুর কমিশনারেট।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Police Station Children Games
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE