—ফাইল চিত্র।
উৎসবের মরসুমে বাজির তাণ্ডব তো ছিলই। গত কয়েক বছরে তার সঙ্গে জুড়েছে ‘ডিজে বক্স’ বা পেল্লায় মাপের সাউন্ড বক্সের উপদ্রব। জাতীয় পরিবেশ আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও পথেঘাটে তার প্রভাব কিন্তু আমজনতার চোখে পড়ে না। এই পরিস্থিতিতে ফের উৎসব এগিয়ে আসতেই আশঙ্কায় ভুগছেন অনেকে। তাঁরা বলছেন, বিশ্বকর্মা পুজো থেকেই ফের ওই উপদ্রব শুরু হবে মহানগরে।
পুলিশ বলছে, গত কয়েক বার ‘ডিজে বক্স’ নিয়ে একাধিক অভিযোগ এসেছে তাদের কাছে। এ বার তাই আগেভাগেই সতর্ক তারা। ‘ডিজে বক্স’ যাঁরা ভাড়া দেন, সেই ব্যবসায়ীদের শুক্রবার দক্ষিণ শহরতলির গরফা ও নেতাজিনগর থানায় ডেকে পাঠানো হয়েছিল। নিয়ম অনুযায়ী, কোনও প্রেক্ষাগৃহ বা ঘেরা জায়গায় ‘ডিজে বক্স’ বাজানো যেতে পারে। কিন্তু প্রকাশ্যে তা বাজালে পুলিশ সংশ্লিষ্ট লোকজনকে গ্রেফতার ও বক্স বাজেয়াপ্ত করতে পারে। পুলিশ সূত্রে খবর, ওই ব্যবসায়ীদের থানায় ডেকে এই বিষয়টিই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ-ও বলা হয়েছে, সাউন্ড লিমিটার ছাড়া কোনও বক্স বাজানো যাবে না। এর পরে পুজো কমিটিগুলিকেও ডেকে পাঠিয়ে এ ব্যাপারে সতর্ক করা হবে।
লালবাজারের একটি সূত্রের দাবি, পাটুলি, গরফা, হরিদেবপুরের মতো দক্ষিণ শহরতলির বিভিন্ন এলাকাতেই ডিজে বক্সের উপদ্রব বেশি। গত বছর কালীপুজোর আগে এ নিয়ে বৈঠক করেও লাভ হয়নি। এ বার তাই দুর্গাপুজোর আগেই তৎপরতা শুরু হয়েছে। শুধু একটি এলাকা নয়, পুজোর আগে শহরের বিভিন্ন থানাতেই এই সচেতনতা ছড়ানো হবে বলে লালবাজার সূত্রের দাবি।
শুক্রবার সন্ধ্যায় পুলিশ-প্রশাসনের সঙ্গে পুজো কমিটির সমন্বয় বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের অন্যতম চিফ ইঞ্জিনিয়ার সুব্রত ঘোষ। তিনি বৈঠকে জানিয়েছিলেন, পুজো কমিটিগুলি যেন দূষণ সংক্রান্ত নিয়মকানুন মেনেই পুজো করে। পর্ষদের একটি সূত্র জানাচ্ছে, পুজোর আগেই প্রশাসনের কাছে পরিবেশ আদালত এবং হাইকোর্টের নির্দেশাবলী পাঠিয়ে দেওয়া হয়। পাশাপাশি, অভিযোগের মোকাবিলা করার বিষয়ে সমন্বয়ও রাখা হয়। এ বারেও তা-ই হয়েছে।
রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের প্রাক্তন মুখ্য আইন আধিকারিক ও পরিবেশকর্মী বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায়ের মতে, পুজো কমিটিগুলিকে অনুমতি দেওয়ার সময়েই ডিজে বক্স ও শব্দবাজি নিয়ে মুচলেকা লিখিয়ে নেওয়া উচিত। তিনি বলেন, ‘‘আমরা কয়েকটি পুরসভাকে এই পরামর্শ দিয়েছিলাম। তারা উদ্যোগীও হয়েছে।’’
শহরের বিভিন্ন পুজো কমিটির সংগঠন ‘ফোরাম ফর দুর্গোৎসব’-এর নেতারাও বলছেন, ডিজে বক্স পুরোপুরি নিষিদ্ধ করাই উচিত। তাঁদের সদস্যরা কেউ ডিজে বক্স ব্যবহার করেন না। কিন্তু বেশ কিছু পুজোর জন্য সবাইকেই এই অভিযোগের মুখে প়়ড়তে হচ্ছে। ফোরামের সভাপতি পার্থ ঘোষের কথায়, ‘‘আমরা চাই, এই উপদ্রব বন্ধ করেই উৎসব হোক। পুলিশ-প্রশাসন চাইলে সব রকমের সহযোগিতা করতে আমরা রাজি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy