Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

বাগড়ি-কাণ্ডে চার্জশিট পেশ

পুলিশ জানিয়েছে, জমা দেওয়া চার্জশিটে বাগড়ি মার্কেটের মালিক রাধা বাগড়ি, তাঁর ছেলে বরুণরাজ বাগড়ি এবং বাগড়ি এস্টেটের চিফ এগজিকিউটিভ অফিসার কৃষ্ণকুমার কোঠারিকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে দাহ্য পদার্থ রাখা এবং বাজারের রক্ষণাবেক্ষণ না করা-সহ দমকল তিনটি আইনে মামলা করেছে।

বাগড়ি মার্কেটে আগুন।—ফাইল চিত্র।

বাগড়ি মার্কেটে আগুন।—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৩:৪০
Share: Save:

বাগড়ি মার্কেটে আগুনের ঘটনায় অন্তর্ঘাতের অভিযোগ খারিজ করে দিল পুলিশ। ব্যাঙ্কশাল আদালতে জমা দেওয়া চার্জশিটে পুলিশের দাবি, ওই মার্কেটের অগ্নিকাণ্ডের পিছনে অন্তর্ঘাত নয়, মালিকপক্ষেরই গাফিলতি রয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, জমা দেওয়া চার্জশিটে বাগড়ি মার্কেটের মালিক রাধা বাগড়ি, তাঁর ছেলে বরুণরাজ বাগড়ি এবং বাগড়ি এস্টেটের চিফ এগজিকিউটিভ অফিসার কৃষ্ণকুমার কোঠারিকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে দাহ্য পদার্থ রাখা এবং বাজারের রক্ষণাবেক্ষণ না করা-সহ দমকল তিনটি আইনে মামলা করেছে। তবে তিন অভিযুক্তই এখনও পলাতক। আগেই তাঁদের বিরুদ্ধে লুক আউট নোটিস এবং গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিল আদালত।

সরকারি কৌঁসুলি দীপনারায়ণ পাকড়াশি জানান, ঘটনার সাড়ে চার মাসের মাথায় বৃহস্পতিবার ব্যাঙ্কশাল আদালতের বিচারক মনোদীপ দাশগুপ্তের এজলাসে ওই চার্জশিট জমা দেওয়া হয়েছে তদন্তকারীদের পক্ষ থেকে। পশ্চিমবঙ্গ দমকল আইনের এগারোর সি, জি এবং এল ধারায় ওই তিন জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। মোট ২১ জন প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে ওই তদন্তে।

গত ১৫ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে আগুন লাগে বাগড়ি মার্কেটের ক্যানিং স্ট্রিটের দিকে এ ব্লকে। তিন দিন পরে দমকল ওই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনার পরেই দমকলের তরফে বড়বাজার থানায় রাধা বাগড়ি, বরুণরাজ বাগড়ি এবং কৃষ্ণকুমার কোঠারির বিরুদ্ধে অন্তর্ঘাত, ষড়যন্ত্র-সহ দমকল আইনের একাধিক ধারায় অভিযোগ আনা হয়।

কেন অন্তর্ঘাতের অভিযোগ খারিজ করেছে পুলিশ?

আদালতে জমা দেওয়া চার্জশিটে পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, ফরেন্সিকের রিপোর্টে বলা হয়েছে ওই আগুনের উৎস ছিল ক্যানিং স্ট্রিটের দিকের ফুটপাত। সেখানে থাকা একটি বিদ্যুতের বাক্স থেকে প্রথমে আগুন বেরোয়। বাক্সটি প্লাস্টিকে ঢাকা ছিল। দাহ্য প্লাস্টিকের কারণে দ্রুত ওই আগুন ছড়িয়ে পড়ে পাশের সুগন্ধির ডালায়। পুলিশের দাবি, সুগন্ধির বোতলগুলি দাহ্য বস্তুতে ঠাসা থাকায় আগুনের সংস্পর্ষে আসা মাত্রই তাতে বিস্ফোরণ ঘটে। তা থেকে আগুনের ফুলকি পড়ে ওই মার্কেটের ভিতরে। তবে ওই আগুন লাগার পিছনে কোনও অন্তর্ঘাত না পেলেও তদন্তকারীরা তিন অভিযুক্তের একাধিক গাফিলতির খোঁজ পেয়েছেন। এক তদন্তকারী অফিসার জানান, ব্যবসায়ীদের থেকে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য টাকা নিলেও অভিযুক্ত ওই তিন জন মার্কেটের দেখভাল করেননি। এমনকি, অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থাও কাজ করেনি। ফলে আগুন লাগার পরে দমকল কাজ করতে নেমেও বাধা পেয়েছে। চার্জশিটে পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, মার্কেটের ছাদে জলাধার থাকলেও তাতে জল ছিল না ওই তিন জনের গাফলতির জেরেই।

পুলিশের ওই চার্জশিটেই বলা হয়েছে, বাগড়ি মার্কেট খোলার তোড়জোড় চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। ‘বাগড়ি মার্কেট ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত দাস জানান, আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি আগুনে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এ ব্লক বাদ দিয়ে বাকি মার্কেট খোলার অনুমতি চেয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দফতর, দমকল এবং পুরসভায় চিঠি দেওয়া হয়েছে। সেই অনুমতি মিললেই

৯৫৭টি দোকান খুলে দেওয়া হবে। অগ্নিকাণ্ডের পরে নতুন করে তৈরি করা হয় মার্কেটের বাকি অংশও। আধুনিক অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা করা হয়েছে বাগড়ির ভিতরে। ছাদে বসানো হয়েছে প্রায় হাজার লিটার গ্যালন আয়তনের জলাধার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE