দেশের ৩৫১টি সব থেকে দূষিত নদীর শাখার মধ্যে আদিগঙ্গা অন্যতম। সেই আদিগঙ্গার সংস্কার ও পুনরুজ্জীবনের চেষ্টায় কোনও খামতি থাকলে চলবে না। রাজ্য পরিবেশ দফতর, সেচ দফতর, কলকাতা পুরসভা ও রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদকে এই দায়িত্ব নিতে হবে। তার জন্য আদিগঙ্গার দু’পাড়ে যত বেআইনি দখলদার রয়েছে, তাদের সরানো প্রয়োজন। আগামী ছ’মাসের মধ্যে রাজ্য সরকারকে তাঁদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি বন্দর (কলকাতা বন্দর) কর্তৃপক্ষের জমি পুনর্বাসনের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যায় কি না, তা আলোচনার মাধ্যমে রাজ্য সরকারকে ঠিক করতে হবে। আদিগঙ্গার দূষণ মামলায় এমনই রায় দিল জাতীয় পরিবেশ আদালত। এই রায়ের মাধ্যমে গত পাঁচ বছর ধরে চলা মামলার নিষ্পত্তিও করে দিল আদালত।
এই মামলায় কখনও বেআইনি দখলদার, কখনও নিকাশি পরিশোধন প্লান্টের জমি নিয়ে সমস্যা, কখনও আদিগঙ্গার উপরে মেট্রো রেলের স্তম্ভের জন্য আবর্জনা সাফাইয়ে অসুবিধা হওয়া-সহ একাধিক বিষয় উঠে এসেছে। এ নিয়ে নির্দিষ্ট সময় অন্তর পরিবেশ আদালতের তরফে নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তার পরেও আদিগঙ্গা রয়ে গিয়েছে আদিগঙ্গাতেই! ২৯ পৃষ্ঠার রায়ে সেই সব বিষয়েরই উল্লেখ করেছে আদালত। কলকাতা পুরসভাকে তিনটি নিকাশি পরিশোধন প্লান্ট তৈরির কাজ দ্রুত করতে বলার পাশাপাশি স্তম্ভ ও ‘এলিভেটেড’ স্টেশন নির্মাণের কারণে আদিগঙ্গায় জমা বর্জ্য এবং তা পরিষ্কারে অসুবিধা হওয়ার কারণে প্রয়োজনে মেট্রো রেলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
তবে আদিগঙ্গার সংস্কারের কাজে গতি আনার জন্য আদালত একটি কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছে। রাজ্য পরিবেশ দফতর, সেচ দফতর, কলকাতা পুরসভা, টালি নালা প্রকল্প, কলকাতা মেট্রো রেলওয়ে এবং রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের শীর্ষ কর্তারা সেটির সদস্য হবেন। বিভিন্ন দফতরের মধ্যে সমন্বয় সাধনের জন্য ‘নোডাল’ সংস্থা হিসেবে কাজ করবে কলকাতা পুরসভা। রাজ্যের মুখ্যসচিব ওই কমিটির কাজের তদারকি করবেন।