Advertisement
০৭ ডিসেম্বর ২০২৩
Presidency University

প্রেসিডেন্সিতে পড়ুয়াদের দাবি মানলেন কর্তৃপক্ষ, আর বসবে না শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি

প্রেসিডেন্সির জারি করা এই নির্দেশের বিরুদ্ধে পাল্টা ‘নির্দেশাবলী’ জারি করেন পড়ুয়ারা। দাবি করা হয়, কোনও নির্দেশিকা জারির আগে পড়ুয়াদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে।

Presidency University abide by two demands of students

প্রেসিডেন্সির ক্যাম্পাসে প্রেম করা যাবে না— বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন ফতোয়ায় আন্দোলন শুরু হয় ক্যাম্পাসে। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০২৩ ২২:০২
Share: Save:

প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রেম করা চলবে না। কর্তৃপক্ষের এমন নির্দেশ জারি হওয়ার পর কয়েক দিন ধরে উত্তাল ছিল ক্যাম্পাস। অবশেষে মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, ন্যাকের প্রতিনিধি এবং পড়ুয়াদের প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক হয়। তাতে কর্তৃপক্ষ তাদের দু’টি দাবি মেনে নিয়েছেন বলে দাবি পড়ুয়াদের। এক, প্রেসিডেন্সিতে এর পর আর কোনও শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি বসবে না। দুই, পড়ুয়াদের বিরুদ্ধে সমস্ত শৃঙ্খলাভঙ্গ সংক্রান্ত অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি ছাত্রছাত্রীদের জন্য আগামী সাধারণ সভা পর্যন্ত নতুন আচরণবিধি জারি হচ্ছে না। এ নিয়ে ‘ডিন অফ স্টুডেন্টস্’ সই এবং স্ট্যাম্প-সহ লিখিত ভাবে জানিয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফে অভিযোগ করা হয়, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে চার ছাত্রছাত্রী অশোভন আচরণ করেছিলেন। পাশাপাশি এক আবাসিক ছাত্র প্রেসিডেন্সির ছাত্রী আবাসে পুরুষ বন্ধুদের নিয়ে আসেন বলে অভিযোগ করেন হস্টেল সুপার। এর পর শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি বসে বিশ্ববিদ্যালয়ে।

পড়ুয়াদের অভিযোগ, এর পর বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে প্রেমিক-প্রেমিকাদের ধরপাকড় শুরু করেন কর্তৃপক্ষ। এমনকি, প্রেম করে ‘ধরা পড়লে’ ওই পড়ুয়াদের অভিভাবকদের ডেকে পাঠানো শুরু হয়। পড়ুয়াদের জোর করে কাউন্সেলিং করানোরও অভিযোগ ওঠে। বিশ্ববিদ্যালয় জারি করা এই নির্দেশের বিরুদ্ধে পাল্টা ‘নির্দেশাবলী’ জারি করেন পড়ুয়াদের একাংশ। তাতে তাঁরা দাবি করেন, এখন থেকে কোনও নির্দেশিকা জারি করার আগে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে পড়ুয়াদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। পড়ুয়াদের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করতে পারে এমন কোনও কমিটি গঠন করা যাবে না। পড়ুয়াদের মিটিং, মিছিলের অধিকার কেড়ে নেওয়া যাবে না। যৌন হেনস্থায় কেউ অভিযুক্ত হলে তাঁকে আড়াল করা যাবে না। শুধু তাই নয়, পড়ুয়াদের নির্দেশিকায় বলা হয়, কোনও ‘রাজনৈতিক অপরাধীদের’ ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে দেওয়া যাবে না। ক্যাম্পাসের ভিতরে কারও অডিয়ো বা ভিডিয়ো রেকর্ড করতে গেলে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে এবং শৃঙ্খলার নামে ছাত্রছাত্রীদের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেওয়া যাবে না বলে ওই নির্দেশিকায় দাবি করা হয়। ২০০ বছরের প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ‘নীতিপুলিশি’র এই অভিযোগ তুলে আন্দোলনে নামে এসএফআই। সরব হন প্রেসিডেন্সির প্রাক্তনীদের একাংশও। মঙ্গলবার প্রেসিডেন্সির কয়েক জন পড়ুয়া দাবি করেন, তাঁদের সঙ্গে ন্যাকের প্রতিনিধি এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বৈঠক হয়েছে। তাতে তাঁদের দু’টি দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে। তবে সমস্ত দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন জারি থাকবে বলে হঁশিয়ারি দিয়েছেন ওই ছাত্রছাত্রীরা।

প্রেসিডেন্সি ছাত্র সংগঠনের তরফে অহন কর্মকার বলেন, ‘‘আন্দোলনের চাপে পড়ে দুপুরে ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করতে চান কর্তৃপক্ষ। তাতে কয়েক দফা দাবি লিখিত আকারে জমা করেন পড়ুয়ারা। সন্ধ্যার পর জানানো হয়, মূল দু’টি দাবি মেনে নেওয়া হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE