Advertisement
১৮ মে ২০২৪

কপ্টারে রোগী আসুক যুবভারতীতে, ভাবনা

শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক বলেই এ সব রোগীকে চিকিৎসার জন্য উড়িয়ে আনা হয়। এ দিকে, নিরাপত্তার কারণে কলকাতা বিমানবন্দরের ভিতরে বেসরকারি হাসপাতালের অ্যাম্বুল্যান্স ঢুকতে দেওয়া হয় না।

সুনন্দ ঘোষ
শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০১৬ ০২:৩২
Share: Save:

মাসে গড়ে দু’জন করে রোগী আসছেন আকাশ-পথে। কিন্তু সমস্যায় ফেলছে কলকাতা বিমানবন্দর।

শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক বলেই এ সব রোগীকে চিকিৎসার জন্য উড়িয়ে আনা হয়। এ দিকে, নিরাপত্তার কারণে কলকাতা বিমানবন্দরের ভিতরে বেসরকারি হাসপাতালের অ্যাম্বুল্যান্স ঢুকতে দেওয়া হয় না। বিমানবন্দরের নিয়ম অনুযায়ী, হেলিকপ্টার বা ছোট বিমানে কলকাতায় নামার পরে সেখান থেকে টার্মিনালের বাইরে পর্যন্ত রোগীকে আনতে হবে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের নিজস্ব অ্যাম্বুল্যান্সে। বাইরে পৌঁছে তবেই বেসরকারি হাসপাতালের আধুনিক অ্যাম্বুল্যান্সে স্থানান্তরিত করা হয় রোগীকে। বেসরকারি হাসপাতালের এক কর্তার কথায়, ‘‘গুরুতর অসুস্থ রোগীকে এক অ্যাম্বুল্যান্স থেকে অন্য অ্যাম্বুল্যান্সে স্থানান্তরিত করাটাও তো ঝুঁকির।’’

ই এম বাইপাসের কাছে এক বেসরকারি হাসপাতাল রোগীদের উড়িয়ে আনার জন্য তাই যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের হেলিপ্যাড ব্যবহার করার পরিকল্পনা করেছে। হাসপাতালের সিইও রূপালী বসু জানান, রাজ্য সরকারের সঙ্গে তাঁদের প্রাথমিক কথা হয়েছে। স্টেডিয়ামের হেলিপ্যাডটি তাঁদের হাসপাতাল থেকে মাত্র ১০ মিনিটের রাস্তা। ফলে, অনেক তাড়াতাড়ি রোগী হাসপাতালে পৌঁছে যেতে পারবেন।

রূপালীর কথায়, ‘‘আমাদের হাসপাতালের মধ্যে বিদেশের ধাঁচে বাড়ির ছাদে হেলিপ্যাড করার পরিকল্পনা রয়েছে। বস্টনের বেথইজরায়েল ডেকোনেস হাসপাতালে পড়ার সময়ে দেখেছি হেলিকপ্টারে করে এনে রোগীকে হাসপাতালের ছাদে নামিয়ে নেওয়া হতো। কলকাতায় আমাদের হাসপাতালে একটি ছ’তলা কার পার্কিং করা হচ্ছে। তারই মাথায় ১০ হাজার বর্গফুট এলাকা নিয়ে তৈরি করা হবে এই হেলিপ্যাড।’’ তা বাস্তবায়িত করার আগে আপাতত সল্টলেক স্টেডিয়ামের হেলিপ্যাডটি ব্যবহার করতে চান তাঁরা।

কলকাতায় এই মূহূর্তে বেশ কিছু হাসপাতাল নিয়মিত ভিন্‌ রাজ্য এমনকী বাংলাদেশ, ভূটান, মায়ানমারের মতো প্রতিবেশী দেশ থেকেও রোগী পাচ্ছে। অনেকেই চটজলদি হাসপাতালে পৌঁছে যাওয়ার জন্য এয়ার-অ্যাম্বুল্যান্স ব্যবহার করতে চান। প্রয়োজনীয় অর্থও রয়েছে। কিন্তু হাসপাতালের কাছাকাছি নামার সুযোগ না থাকায় সেই পরিকল্পনা বাতিল করে দেন তাঁরা।

কলকাতা বিমানবন্দরে এখন একটি ছোট বিমান রাখা আছে, যেটি এয়ার-অ্যাম্বুল্যান্স হিসেবে কাজ করে। এ ছাড়া জামশেদপুরেও একটি ছোট বিমান রয়েছে যেটি নিয়মিত এয়ার-অ্যাম্বুল্যান্স হিসেবে ব্যবহার হয়। কিন্তু, পূর্ব ভারতে এয়ার-অ্যাম্বুল্যান্স হিসেবে হেলিকপ্টারের ব্যবহার খুবই কম। রূপালী মনে করছেন, স্টেডিয়ামের হেলিপ্যাড ব্যবহারের অনুমতি পেলে অ্যাপোলো হাসপাতালে হেলিকপ্টারে অনেক রোগী আসতে পারবেন।

কলকাতায় এখন পবন হংসের একটি হেলিকপ্টার রয়েছে। তবে ৯ আসনের ওই হেলিকপ্টার এয়ার-অ্যাম্বুল্যান্স হিসেবে ব্যবহারের উপযোগী নয় বলেই জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। কলকাতার বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালের কর্তারা জানান, উত্তর পূর্ব ভারত-সহ দেশ ও বিদেশের যে সব প্রান্ত থেকে রোগীরা হেলিকপ্টারে করে কলকাতায় আসতে চান, সেখানে এয়ার-অ্যাম্বুল্যান্স পাওয়াটা জরুরি।

দিল্লি থেকে বিমান পরিবহণের বিশেষজ্ঞ ক্যাপ্টেন বিজয় মদন জানান, বিমান পরিবহণ মন্ত্রকের নতুন নীতিতে এয়ার-অ্যাম্বুল্যান্স ব্যবহারে জোর দেওয়া হয়েছে। জুন মাসের শেষে মন্ত্রক তার নিয়ম শিথিল করতে পারে বলে তিনি জানান। তাঁর দাবি, ইতিমধ্যেই দেশের বেশ কিছু সংস্থা এয়ার-অ্যাম্বুল্যান্স চালানোর অনুমতি চেয়েছে। ক্যাপ্টেন বিজয়ের কথায়, ‘‘কলকাতায় যদি চাহিদা এ ভাবে বাড়তে থাকে তা হলে সেখানেও এয়ার-অ্যাম্বুল্যান্স হেলিকপ্টার নিয়মিত ব্যবহার হতে পারে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Salt Lake Stadium Helipad
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE