Advertisement
০২ মে ২০২৪

কোটি টাকার চেক জালিয়াতির চেষ্টা

ব্যাঙ্কে জমা পড়েছে মোটা অঙ্কের চেক। নিয়মানুযায়ী, টাকার অঙ্ক বেশি হওয়ায় চেক ক্লিয়ারেন্সের আগে ব্যাঙ্ককর্মীরা গ্রাহকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। দেখা যায়, তাঁর ফোনটি বন্ধ।

শিবাজী দে সরকার
শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০১৮ ০১:৩২
Share: Save:

ব্যাঙ্কে জমা পড়েছে মোটা অঙ্কের চেক। নিয়মানুযায়ী, টাকার অঙ্ক বেশি হওয়ায় চেক ক্লিয়ারেন্সের আগে ব্যাঙ্ককর্মীরা গ্রাহকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। দেখা যায়, তাঁর ফোনটি বন্ধ। তাতে সন্দেহ হয় ব্যাঙ্ককর্মীদের। ব্যাঙ্কের স্থানীয় শাখার মাধ্যমে ওই গ্রাহকের সঙ্গে যোগাযোগ করতেই জানা যায়, তিনি ওই চেক আদৌ কাউকে দেননি।

পুলিশ জানায়, ব্যাঙ্ককর্মীদের তৎপরতায় আটকানো গিয়েছে এক কোটি টাকার ওই চেক জালিয়াতির চেষ্টা। চেকটি ব্যাঙ্কে পৌঁছেছিল রবীন্দ্র সরোবর থানা এলাকার এক ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের ট্রাস্টি বোর্ডের সম্পাদকের নামে। তদন্তে পুলিশ জেনেছে, জালিয়াতেরা চেক জমা দেওয়ার পরে গ্রাহকের ফোন নম্বর ‘ব্লক’ করে দেয়। ওই ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ গত মাসে জালিয়াতি ও প্রতারণা-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করেছে। তবে এখনও কেউ ধরা পড়েনি।

পুলিশের কাছে অভিযোগকারী জানিয়েছেন, একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের রাসবিহারী অ্যাভিনিউ শাখায় ওই ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের ট্রাস্টি বোর্ডের অ্যাকাউন্ট রয়েছে। পুজোর আগে ব্যাঙ্কের এক প্রতিনিধি তাঁকে জানান, তাঁকে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা হলেই ফোনটি বন্ধ বলছে। ওই কর্মী জানান, তাঁর সই করা এক কোটি টাকার চেক ব্যাঙ্কের দিল্লি শাখায় জমা পড়েছে।

পুলিশ জানায়, অভিযোগকারীর চেকবইয়ে কী কী নম্বরের চেক রয়েছে, তা জেনেই ওই চেক জালিয়াতি করা হয়েছিল। সেই সঙ্গে জালিয়াতেরা ভুয়ো নথি দিয়ে বন্ধ করে দেয় গ্রাহকের ফোন নম্বর, যাতে ব্যাঙ্ক তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারে। কিন্তু ব্যাঙ্কের সন্দেহ হতে সরাসরি গ্রাহকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়, যার জেরে বিষয়টি জানা যায়।

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, আসল চেকের পাতা ব্যবহার করে ওই জালিয়াতি করা হয়। ফোটোশপের সাহায্যে বদলানো হয়েছিল চেক নম্বর, আইএফএসসি কোড ও ব্যাঙ্কের শাখার নাম। ওই পদ্ধতিতেই গ্রাহকের সইও জাল করা হয় বলে অনুমান। তার পরেই আসলের মতো দেখতে সেই জাল চেক জমা পড়ে। পুলিশের এক কর্তা জানান, ওই অ্যাকাউন্টের সঙ্গে যুক্ত ফোন নম্বর ‘ব্লক’ করে দিলেও তার জায়গায় ব্যাঙ্কের নথিতে নতুন নম্বর যোগ করতে পারেনি। এর ফলেই বেঁচে যায় এক কোটি টাকা। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগকারীর ফোন নম্বর নিষ্ক্রিয় করতে মোবাইল পরিষেবা সংস্থার কাছে জালিয়াতেরা যে ভুয়ো নথি জমা দিয়েছিল, সেই সূত্র ধরেই তাদের খোঁজ চলছে।

লালবাজার জানিয়েছে, কয়েক বছর আগে একই কায়দায় একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের উল্টোডাঙা শাখা থেকে গুজরাতের একটি সংস্থার প্রায় দু’কোটি টাকা হাতিয়েছিল জালিয়াতেরা। ওই সময়ে শহরের বিভিন্ন ব্যাঙ্কে এই ধরনের কয়েকটি ঘটনায় কয়েক জনকে গ্রেফতার করা হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Promptness Bank Officials Check Forgery
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE