Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪

যান বিরল, তবু পরীক্ষা নির্বিঘ্নেই

মিন্টো পার্কের কাছে পৌঁছনোর জন্য গড়িয়া থেকে হাতে আড়াই ঘণ্টা সময় নিয়ে বেরিয়েছিলেন অরুণ হালদার। শনিবার, সিবিএসই-র দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষা ছিল তাঁর মেয়ে আহেলির। পুর-নির্বাচনের দিন যানবাহনের অভাব, সন্ত্রাসের আশঙ্কার মধ্যে সময় মতো পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছতেই অন্য দিনের চেয়ে ঘণ্টাখানেক আগে বেরিয়েছিলেন তাঁরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০১৫ ০০:০৮
Share: Save:

মিন্টো পার্কের কাছে পৌঁছনোর জন্য গড়িয়া থেকে হাতে আড়াই ঘণ্টা সময় নিয়ে বেরিয়েছিলেন অরুণ হালদার। শনিবার, সিবিএসই-র দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষা ছিল তাঁর মেয়ে আহেলির। পুর-নির্বাচনের দিন যানবাহনের অভাব, সন্ত্রাসের আশঙ্কার মধ্যে সময় মতো পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছতেই অন্য দিনের চেয়ে ঘণ্টাখানেক আগে বেরিয়েছিলেন তাঁরা। শেষ পর্যন্ত চেনা রাস্তা বাদ দিয়ে অন্য বাসে চেপেই পরীক্ষা দিতে যেতে হয়েছে আহেলিকে।

ছেলেকে নির্বিঘ্নে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছে দিতে আগে থেকেই ট্যাক্সি বলেছিলেন শ্রেয়সী জানা। তাঁর ছেলে শ্রমণও সিবিএসই -র পরীক্ষার্থী।

আহেলি, শ্রমণদের মতো অনেক ছাত্রছাত্রীরই শনিবার পরীক্ষা ছিল। কেউ গাড়ি ভাড়া করে, কেউ বা আগেভাগে বেরিয়ে পরিচিত রাস্তা ছেড়ে একটু ঘুরে, খানিক বাড়তি হেঁটে পৌঁছেছেন পরীক্ষাকেন্দ্রে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কলকাতার প্রায় সব স্কুলেই নির্বিঘ্নে পরীক্ষা হয়েছেন বলে জানিয়েছেন অধ্যক্ষেরা। কিন্তু শুনশান রাস্তায়, যানবাহনের আকালের মধ্যে পরীক্ষা দিতে যাওয়াটা বেশ স্মরণীয় হয়ে থাকবে বলে জানাচ্ছে শ্রমণ, আহেলিরা।

পরীক্ষা দিয়ে বেরিয়ে আহেলি বলে, ‘‘অন্যান্য দিন একটি মিনি বাসে করে পরীক্ষাকেন্দ্রে আসি। আজ সেই বাস পাইনি। একটি সরকারি বাসে চড়ে একটু ঘুরে আসতে হয়েছে পরীক্ষাকেন্দ্রে। বেশ খানিকটা হাঁটতেও হয়েছে।’’

এ দিন বেলা সাড়ে ১০টা থেকে সিবিএসই-র পেন্টিং, গ্রাফিক্স, স্থাপত্য এবং ফলিত ও বাণিজ্যিক কলার পরীক্ষা ছিল। কলকাতার বিভিন্ন স্কুলে ১০০-রও বেশি ছাত্রছাত্রী পরীক্ষা দিয়েছে। তবে নির্বাচনের দিন পরীক্ষা থাকায় আগাগোড়াই চিন্তিত ছিলেন পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকেরা। একেই যানবাহনের স্বল্পতা, তার উপরে জায়গায় জায়গায় বিরোধী প্রার্থী ও সমর্থকদের উপরে হামলার জেরে নির্বাচনের দিনে অশান্তির আশঙ্কা ছিলই। তাই, শনিবার পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছনোর ব্যাপারে বাড়তি সতর্ক ছিলেন পরীক্ষার্থী-অভিভাবকেরা।

দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ পরীক্ষা দিয়ে ফিরছিলেন নিশা সাহা, প্রিয়ঙ্কা পারিদা, মনস্বী দেশাই, ঐশ্বর্যা গুপ্তরা। কাউকে বাবা গাড়ি করে পৌঁছে দিয়েছেন, কেউ বা গিয়েছে ট্যাক্সিতে। ওদের কথায়, ‘‘একটা উদ্বেগ ছিল। তবে শেষ পর্যন্ত খুব একটা সমস্যা হয়নি।’’

অভিনব ভারতী স্কুলের এই ছাত্রীদের পরীক্ষাকেন্দ্র ছিল বিড়লা হাই স্কুল। বিড়লা হাই স্কুলের অধ্যক্ষা মুক্তা নৈন বলেন, ‘‘আমার স্কুলে লক্ষ্মীপত সিংহানিয়া আর অভিনব ভারতীর ছাত্রছাত্রীদের আসন পড়েছে। এ দিন পরীক্ষা নির্বিঘ্নে হয়েছে।’’ তবে নির্বাচনের দিন যাতে কেউ ভিড় না করেন, তাই অভিভাবকদের স্কুলের সামনে থেকে সরিয়ে দেন কর্তৃপক্ষ। নির্বিঘ্নে পরীক্ষা হয়েছে বলে জানান এপিজে স্কুলের অধ্যক্ষা রীতা চট্টোপাধ্যায়ও। তাঁর স্কুলে পরীক্ষা দিয়েছেন লক্ষ্মীপত সিংহানিয়া ও মহাদেবী বিড়লা স্কুলের পড়ুয়ারা। রীতাদেবীর কথায়, ‘‘আমার স্কুলের পরীক্ষার্থীদের আসন পড়েছে লক্ষ্মীপত সিংহানিয়া স্কুলে। সেখানেও কোনও সমস্যা হয়নি বলেই খবর পেয়েছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE