মেট্রো রেলকে নগরোন্নয়ন মন্ত্রকের অধীনে আনতে চায় কেন্দ্র। এ নিয়ে রাজ্যগুলির মতামত জানতে চেয়েছিল নয়াদিল্লি। বুধবার দিল্লিতে এ রাজ্যের প্রতিনিধি কেন্দ্রকে জানিয়ে দিয়েছেন, তাদের এই ভাবনার সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ সহমত নয়। এতে রাজ্যের মেট্রো প্রকল্পগুলির গতি স্লথ হয়ে পড়বে। আখেরে ক্ষতি হবে রাজ্যেরই।
গত মাসেই সংসদে ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষের বাজেট প্রস্তাব ঘোষণার সময়ে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি নতুন মেট্রো আইন তৈরির কথা ঘোষণা করেছিলেন।
তার পরেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, মেট্রো রেল সংক্রান্ত ১৯৭৮ এবং ২০০২ সালের দু’টি আইন বাতিল করা হবে। নতুন যে আইন আসছে, তাতে মেট্রো থাকবে নগরোন্নয়ন মন্ত্রকের অধীনেই।
কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন মন্ত্রকের কর্তাদের বক্তব্য, মেট্রো রেলের যাবতীয় প্রকল্প দেশের শহরগুলিতে। আর, শহরের উন্নয়নের ভার রয়েছে তাঁদের হাতেই।
এই অবস্থায় শুধু মেট্রো প্রকল্পগুলি রেলের হাতে থাকলে সমন্বয়ের মাধ্যমে উন্নয়নের কাজে ঢিলেমি আসে। সে কারণে পুরোটাই নগরোন্নয়ন মন্ত্রকের অধীনে আনার সিদ্ধান্ত। এর ফলে জমি অধিগ্রহণ থেকে শুরু করে রাজ্যের সঙ্গে সমন্বয় তৈরি করা এবং প্রকল্পের কাজ দ্রুত শেষ করা, দুই-ই অনেকটা সুবিধাজনক হবে— এমনই মনে করছেন নগরোন্নয়ন মন্ত্রকের কর্তারা। মন্ত্রকের এক শীর্ষকর্তার কথায়, ‘‘শহরের প্রকল্পের কথা ভেবে পরবর্তী সময়ে দিল্লি ও বেঙ্গালুরুর মেট্রো প্রকল্পকেও এই মন্ত্রকের অধীনে রাখা হয়েছে। তা হলে মেট্রো পরিচালনার ভার শুধুমাত্র রেলের হাতে থাকবে কেন?’’ তা ছাড়া, এক ছাতার তলায় মেট্রো থাকলে কেন্দ্রীয় ভাবে ভাড়া নির্ধারণ থেকে শুরু করে রাজ্যের সঙ্গে যৌথ ভাবে প্রকল্পে গড়ে তোলার ক্ষেত্রেও বিভিন্ন সুবিধে মিলবে।
কেন্দ্রীয় সরকার এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরেই গত ৬ ফেব্রুয়ারি মুখ্যসচিবকে চিঠি লিখে এই রাজ্যের মতামত জানতে চায়। একই ভাবে চিঠি পাঠানো হয় দেশের বাকি রাজ্যগুলিকেও।
বুধবার এ নিয়ে দিল্লিতে কেন্দ্রের সঙ্গে বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গের তরফে ওই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করা হয়েছে। রাজ্য প্রশাসনের কর্তাদের বক্তব্য, এই মুহূর্তে কলকাতা শহরে বেশ কয়েকটি মেট্রো প্রকল্পের কাজ চলছে। বহু কাঠখড় পোড়ানোর পরে সেগুলিতে অবশেষে গতি এসেছে। এখন হঠাৎ করে পরিবর্তন করতে গেলে প্রকল্পগুলির গতি ফের থেমে যাবে বলে তাঁদের আশঙ্কা।
রাজ্য প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘মেট্রো রেলের পুরো পরিকাঠামোকে নগরোন্নয়ন মন্ত্রকের অধীনে আনা বিরাট প্রক্রিয়া। তা করতে গেলে প্রকল্পের কাজ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা। প্রকল্পের ক্ষতি হোক, এমন কাজে আমরা সহমত নই। সে কারণেই কেন্দ্রের ভাবনার বিরোধিতা করা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy