পরখ: পুজোর কেনাকাটায় জায়গা করে নিয়েছে ছাতাও। নিউ মার্কেটে। নিজস্ব চিত্র
পুজোয় চাই নতুন জামা, নতুন জুতো। সঙ্গে অবশ্যই ছাতা ও বর্ষাতি!
শারদোৎসবের কেনাকেটাতেও সহজেই ঢুকে পড়েছে বর্ষার দুই বন্ধু। ঢুকবে নাই বা কেন? বর্ষা যে এখনও বিদায় নেয়নি। পঞ্চমীর ভোরও ভেসেছে বৃষ্টিতে। তাই এ বার টালা থেকে টালিগঞ্জ ঠাকুর দেখতে দর্শনার্থীদের সঙ্গী হয়েছে বাহারি ছাতা থেকে বর্ষাতি।
চতুর্থীর বিকেল থেকেই শহরের বিভিন্ন মণ্ডপে জনতার ঢল নেমেছিল। আগামী ক’দিনে অবশ্যই বাড়বে সেই ভিড়। যে কোনও
মুহূর্তে বর্ষা ‘অসুর’ হয়ে জল ঢালতে পারে বলেই আশঙ্কা প্রকাশ করছে হাওয়া অফিস। তা বলে কি আর ঠাকুর দেখায় ইতি টানতে পারেন আট থেকে আশি। তাঁরা বলছেন, ‘‘নতুন জামা, শাড়ি, মেক-আপ যাতে না ভেজে সে জন্যই তো রয়েছে ছাতা।’’ ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, সে কারণে এই পুজোয় বেড়েছে ছাতা ও বর্ষাতির বিক্রি।
বৃহস্পতিবার পঞ্চমীর বিকেলে ধর্মতলার ফুটপাতে ছাতার পসরা সাজিয়ে বসেছিলেন দেবীপ্রসাদ যাদব। মাঝেমধ্যেই
হাঁকছিলেন—‘‘আসছে, আসছে। বৃষ্টি আসছে। নিয়ে যান নতুন নকশার ছাতা।’’ জামা, প্লাস্টিকের ব্যাগ ভরা শাড়ি হাতে তাঁর কাছে ভিড়ও জমাচ্ছেন ক্রেতারা। নতুন সালোয়ারের রঙের সঙ্গে ছাতা মানাচ্ছে কি না, তা-ও মিলিয়ে নিচ্ছিলেন বছর কুড়ির সুতপা ঘোষ। বললেন, ‘‘বাড়িতে ছাতা রয়েছে। পুজো বলে কথা, পোশাকের সঙ্গে না মানালে হয়!’’
দেবীপ্রসাদ জানালেন, তরুণী ও মহিলারাই মূলত ছাতার ক্রেতা। নিউ মার্কেট, ধর্মতলা চত্বরে কেনাকেটা করে ফেরার পথে তাঁরাই শাড়ি, সালোয়ারের সঙ্গে রং মিলিয়ে ছাতা কিনছেন। সাধারণ কাপড়ের ছাতা ১০০ টাকা আর বিভিন্ন নকশা করা ছাতার দাম ১৫০ টাকা। বেশি বিক্রি হচ্ছে নকশা ছাতাই। ছোটদের জন্য ক্রেতারা বেছে নিচ্ছেন হাল্কা বর্ষাতি। তাতেও চাহিদা রয়েছে নকশা ছাপের। যার দাম ২০০-৩০০ টাকার মধ্যে ঘোরাফেরা করছে।
নিউ মার্কেট থেকে কেনাকাটা করে ফেরার পথে অনেকেই ঢুকছিলেন লেনিন সরণির
একটি ছাতার দোকানে। ব্যবসায়ী মাধুরী জৈন জানালেন, পুজোয় ছাতা ও বর্ষাতির বিক্রি বেড়েছে ঠিকই। তবে লোকজন মাঝারি দামের ছাতাই বেশি চাইছেন। মাধুরী বলেন, ‘‘২৫০-৩০০ টাকার মধ্যে মেয়েদের বাহারি ছাতা পাওয়া যাচ্ছে। তবে তিন ভাঁজে সহজেই ভ্যানিটি ব্যাগে ঢোকানো যাবে এমন ছাতার চাহিদাই বেশি।’’
পঞ্চমীর বিকেলে আকাশের মুখ তখন ফের কালো হচ্ছে। তড়িঘড়ি লেনিন সরণির ছাতার দোকানে ঢুকে পড়লেন বেলুড়ের পল্লবী সরকার। নিউ মার্কেটে কেনাকাটা সেরে বান্ধবীদের সঙ্গে শিয়ালদহ চত্বরের ঠাকুর দেখার পরিকল্পনা ছিল তাঁর। বললেন, ‘‘বৃষ্টি হবে বলে তো ঠাকুর দেখা বন্ধ করা যায় না! আবার ঠাকুর দেখতে বেরিয়ে নতুন শাড়িও ভেজালে চলবে না।’’
দূরের মণ্ডপ থেকে তখন ভেসে আসছে, ‘ছাতা ধর হে দেওরা। হেসান সুন্দর শাড়ি আমার ভিগ গিলাই না...’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy