ফাইল ছবি
রেশনে যেখানে চাল ও গম মিলিয়ে মাথাপিছু আট কেজি খাদ্যসামগ্রী পাওয়ার কথা, সেখানে মিলত পাঁচ কেজি। অনেকে আবার দিনের পর দিন রেশন না তুললেও খাতায়কলমে দেখানো হত, নিয়মিত তাঁদের চাল ও গম দেওয়া হয়েছে। এ ভাবে দিনের পর দিন রেশনের জিনিসপত্র খোলা বাজারে পাচার করার ফলে ৩৬০ কেজি চাল এবং ২০০ কেজি গমের কোনও হিসাব দিতে পারছিল না মধ্য হাওড়ার একটি দোকান। শেষমেশ রেশনের মাল চুরি করে অন্যত্র পাচার করার অভিযোগে বৃহস্পতিবার মধ্য হাওড়ার কালীবাবুর বাজারের কাছে গোপাল মুখার্জি লেনে ওই রেশন দোকানটি সিল করে দিলেন রাজ্যের খাদ্য সরবরাহ দফতরের কর্তারা।
হাওড়া জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গোপাল মুখার্জি লেনের ওই রেশন দোকানটি নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ কয়েক দশকের। দোকানটির অধীনে প্রায় ছ’হাজার গ্রাহক রয়েছেন। যাঁদের অনেকেই দিনের পর দিন রেশন তুলতে আসতেন না। গ্রাহকদের অভিযোগ, সেই সুযোগটাই কাজে লাগিয়ে বছরের পর বছর রেশনের সামগ্রী খোলা বাজারে পাচার করা হচ্ছিল। এমন একাধিক অভিযোগ পেয়ে গত সোমবার রাজ্য খাদ্য দফতরের নিত্যধন মুখার্জি রোডের অফিস থেকে ওই রেশন দোকানের গুদামে তল্লাশি চালানো হয়। তখনই অফিসারদের নজরে আসে, সরকারি হিসাবঅনুযায়ী যত পরিমাণ খাদ্যসামগ্রী মজুত থাকার কথা, তার চেয়ে বহু গুণ বেশি জিনিস গুদামে পড়ে রয়েছে এবং সেগুলি খোলা বাজারে পাচার হচ্ছে।
জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, এর পরেই রেশন দফতরের অফিসারেরা গ্রাহকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তদন্ত করেন। পাশাপাশি, কয়েক জন গ্রাহকের সঙ্গে ফোনে কথা বলে তাঁরা আরও জানতে পারেন, খাতায়কলমে রেশনের যে সব সামগ্রী গ্রাহকেরা কিনেছেন বলে দেখানো হয়েছে, সেগুলি তাঁরা আদৌ নেননি। এমনকি, সংশ্লিষ্ট রেশন দোকানের মালিক ন্যূনতম সরকারি নিয়মগুলিও পালন করেননি। এমনই একাধিক অনিয়ম এবং সরকারি খাদ্যসামগ্রী পাচারের অভিযোগ পাওয়ার পরেই ওই দোকানের লাইসেন্স বাজেয়াপ্ত করেন খাদ্য সরবরাহ দফতরের অফিসারেরা। দোকানটি সিল করে দেওয়া হয়।
খাদ্য সরবরাহ দফতরের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘দোকানটি আপাতত সিল করে দেওয়া হয়েছে। তবে গ্রাহকেরা যাতে রেশনের সামগ্রী পান, তার জন্য কালীবাবুর বাজারের পাশে আর একটি দোকানে তাঁদের রেশন কার্ড ট্রান্সফার করে দেওয়া হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy