পুড়ে যাওয়ার পরে বাগড়ি মার্কেট।ফাইল চিত্র।
অগ্নিকাণ্ডের পরে কেটে গিয়েছে চার মাস। দমকলের অভিযোগের ভিত্তিতে গাফিলতি এবং অন্তর্ঘাতের তদন্ত শুরু হলেও এখনও পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি। পুলিশের অবশ্য দাবি, ফরেন্সিকের চূড়ান্ত রিপোর্ট হাতে এলেই আগামী মাসে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দেওয়া হবে। যাতে বাগড়ি মার্কেটে অগ্নি-নিবার্পণ ব্যবস্থা না থাকার জন্য গাফিলতির অভিযোগ আনা হবে অভিযুক্ত তিন জনের বিরুদ্ধে। পুলিশের একাংশ জানিয়েছে, অন্তর্ঘাত হয়েছিল কি না তা ফরেন্সিক রিপোর্ট পেলেই স্পষ্ট হবে। সে কারণে ওই রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে। রাজ্য ফরেন্সিক বিভাগ সূত্রের খবর, শীঘ্রই রিপোর্ট চূড়ান্ত করে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হবে।
তবে পুলিশ ওই ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে না পারলেও বাগড়ি মার্কেটের একটি ব্লক বাকি রেখে বাকি অংশের পুনর্নির্মাণের কাজ প্রায় শেষের পথে। সূত্রের খবর, দমকল, সিইএসসি এবং পুলিশের প্রয়োজনীয় অনুমতি মিললে ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে নব রূপে খুলতে পারে এই বাজার।
গত ১৫ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে আগুন লেগেছিল বাগড়ি মার্কেটের একাংশে। প্রায় তিন দিন পরে আগুন আয়ত্তে আনে দমকল। ঘটনায় দমকলের তরফে বড়বাজার থানায় বাগড়ি মার্কেটের মালিক রাধা বাগড়ি, তাঁর ছেলে বরুণ রাজ বাগড়ি এবং বাগড়ি এস্টেটের চিফ এগ্জিকিউটিভ অফিসার কৃষ্ণকুমার কোঠারির বিরুদ্ধে আগুন লাগানোর ষড়যন্ত্র, ধ্বংসের জন্য দাহ্য পদার্থ বা বিস্ফোরক মজুত রাখা, রক্ষণাবেক্ষণ না করা-সহ দমকল আইনের একাধিক ধারায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল।
তদন্তে নেমে প্রথমে রাধা, বরুণ ও কৃষ্ণকুমারের বিরুদ্ধে জারি হয় লুক আউট নোটিস। পরে তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে কলকাতা হাইকোর্ট। অভিযুক্ত তিন জন আদালতে আগাম জামিনের আবেদন জানালেও তা খারিজ হয়ে যায়। পুলিশের একাংশের দাবি, এর পরে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়েও ওই তিন জনের খোঁজ মেলেনি। তদন্তে আরও উঠে আসে, ওই তিন জন বাগড়ি মার্কেটের দেখভালের দায়িত্বে থাকলেও তাঁরা সেই দায়িত্ব ঠিক মতো পালন করেননি। ফলে আগুন নেভাতে গিয়ে দমকলকে বাধার মুখে পড়তে হয়েছে। এমনকি, ছাদে জলাধার থাকলেও তাতে একফোঁটা জল ছিল না বলেও জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা।
উপায়: বাগড়ি মার্কেটে তৈরি হয়েছে এই নতুন অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা। নিজস্ব চিত্র
অভিযুক্ত তিন জন এখনও কেন ধরা পড়ল না? লালবাজারের দাবি, ধৃতদের খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালানো হয়েছে। কিন্তু খোঁজ মেলেনি। এমনকি তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের উপরেও নজরদারি চালানো হয়। তাতেও অভিযুক্তদের খোঁজ পাওয়া যায়নি। যদিও পুলিশ সূত্রের খবর, তদন্ত প্রায় শেষের মুখে। ফরেন্সিকের রিপোর্ট হাতে এলেই অন্তর্ঘাত কি না, তা জানা যাবে। একই সঙ্গে জমা দেওয়া যাবে চার্জশিটও।
সোমবার বাগড়ি মার্কেটে গিয়ে দেখা গেল, ‘এ’ ব্লক বাদ দিয়ে বাকি অংশের কাজ চলছে। জেনারেটের থেকে বিদ্যুৎ নিয়ে কাজ করছেন শ্রমিকেরা। বাগড়ির প্রতিটি তলে নতুন ভাবে তৈরি করা হয়েছে অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা। নতুন করে তৈরি হচ্ছে প্রায় সাড়ে ন’শো দোকান। প্রতি দোকানে থাকছে ফায়ার বা স্মোক অ্যালার্ম। থাকছে আগুন লাগলে জল দেওয়ার ব্যবস্থাও। সামগ্রিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য আলাদা ঘর তৈরি করা হয়েছে। বাগড়ি মার্কেট ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত দাস জানান, ওই কাজ শেষ হলেই দমকলের ছাড়পত্র চেয়ে আবেদন জানানো হবে। তবে ‘এ’ ব্লকে এখনও হাত দেওয়া হয়নি। প্রসঙ্গত, আগুনে ওই অংশটিই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy