Advertisement
১৬ জানুয়ারি ২০২৫

আনাজ বনাম মাছের যুদ্ধে জেরবার বাজার

উল্টোডাঙা মেন রোডের উপরের কেআইটি’র বহুতলটি বাম আমলে তৈরি হলেও তা অব্যবহৃত অবস্থায় পড়েছিল দীর্ঘ বছর। ব্যবসায়ীদের দাবি মেনে গত অগস্টে ওই বহুতলের নীচে স্টল করে বাজার সরানোর পরিকল্পনা করেন মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে।

সুনসান: এ ভাবেই ফাঁকা পড়ে রয়েছে নবনির্মিত বাজার। (ইনসেটে) এই বহুতলেই ব্যবসায়ীদের স্টলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ছবি: শৌভিক দে

সুনসান: এ ভাবেই ফাঁকা পড়ে রয়েছে নবনির্মিত বাজার। (ইনসেটে) এই বহুতলেই ব্যবসায়ীদের স্টলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ছবি: শৌভিক দে

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০১৮ ০২:৪৫
Share: Save:

‘প্রাইম টাইমে’ কারা ব্যবসা করবেন? মাছ বিক্রি হবে নাকি আনাজ? সেই নিয়ে জট কাটছে না। ফলে ছ’মাস ধরে নতুন কমপ্লেক্স তৈরি হয়ে পড়ে থাকলেও পুরনো জায়গা থেকে সরনো যাচ্ছে না মুচিবাজারের মাছ ব্যবসায়ীদের। এমনকী রাজ্যের ক্রেতা ও সুরক্ষামন্ত্রী সাধন পাণ্ডে একাধিক বৈঠক করার পরেও সমাধানসূত্র বেরোচ্ছে না। একে অপরকে জায়গা ছাড়তে নারাজ মাছ এবং আনাজ ব্যবসায়ীরা।

উল্টোডাঙা মেন রোডের উপরের কেআইটি’র বহুতলটি বাম আমলে তৈরি হলেও তা অব্যবহৃত অবস্থায় পড়েছিল দীর্ঘ বছর। ব্যবসায়ীদের দাবি মেনে গত অগস্টে ওই বহুতলের নীচে স্টল করে বাজার সরানোর পরিকল্পনা করেন মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে। তিনি বলেন, ‘‘আগে ওখানে অসামাজিক কাজকর্ম চলত। তাই বাজার বসানোর পরিকল্পনা করি। এখন যেখানে বাজার বসে, সেই পুরনো জমিটা কেআইটি নিয়ে নেবে। পাঁচিল তুলে ঘিরে দেওয়া হবে।’’ তবে সেই সময়ে ব্যবসায়ীর থেকে স্টলের সংখ্যা কম হওয়ায় বাজার সরা‌নো নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। উল্টোডাঙা ফিশ মার্কেট হকার্স কল্যাণ সমিতির তরফে দাবি করা হয়েছিল, তাঁরা মোট ১১২ জন ব্যবসায়ী। কিন্তু নতুন ভবনে স্টল ৯৬টি। ফলে কে স্টল পাবেন, কে পাবেন না, তা নিয়ে সমস্যা তৈরি হচ্ছে। মন্ত্রী সাধন পাণ্ডের মধ্যস্থতায় স্টলের সংখ্যা বাড়ানো হয়।

কিন্তু তাতেও সমস্যা মেটেনি। সেই অগস্টেই আনাজ ব্যবসায়ীরা বেঁকে বসেন। তাঁদের দাবি ছিল, শুধু মাছ ব্যবসায়ীদের স্টল দিলে চলবে না। পুরনো বাজারে তাঁরাও ব্যবসা করতেন। সেই অস্থায়ী বাজার উঠে গেলে তাঁরা যাবেন কোথায়, সেই নিয়ে বিরোধ শুরু হয়। আসরে নামেন কলকাতা পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অমল চক্রবর্তী। বাজারটি তাঁর ওয়ার্ডের অন্তর্গত।

পরে সময়সীমা বেঁধে দিয়ে সমাধানসূত্র বার করেন মন্ত্রীও। তিনি জানান, সকাল ৬টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত নতুন বাজারে মাছ বিক্রি হোক। এক ঘণ্টা বাজার সাফসুতরো করার পরে বেলা ১২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত আনাজ বিক্রি করুক ব্যবসায়ীরা। কিন্তু এতেও কাজ হয়‌নি। ফলে ছ’মাস ধরেও সরানো যায়নি পুরনো বাজার। নিজেদের জায়গা ছাড়েননি ব্যবসায়ীদের কোনও পক্ষই।

উল্টোডাঙা ফিশ মার্কেট হকার্স কল্যাণ সমিতির সভাপতি ভোলাশঙ্কর সাউয়ের দাবি, তাঁরা সমঝোতায় যেতে রাজি হলেও আনাজ বিক্রেতারা কিছুতেই আপোস করছেন না। তিনি বলেন, ‘‘আমরা সকালে না বসলে কেউ মাছ কিনবেন? ওঁদের জন্য পরে জায়গা ছেড়ে দিতে রাজি হয়েছি। ওঁরা এটুকু মানবেন না? অন্য বাজারে গিয়ে দেখুন, মাছের স্টল বেলাতেও থাকে।’’ এক আনাজ ব্যবসায়ী বললেন, ‘‘বেলায় বসলে আমাদের বিক্রি মার খাবে। সবাইকেই সকালে ব্যবসা করতে দেওয়া হোক।’’ মন্ত্রী বললেন, ‘‘স্টল বানিয়ে দিলাম, সময় বলে দিলাম। তাতেও হচ্ছে না। এই সপ্তাহেই ওঁদের নিয়ে আবার বসব। চলতি মাসেই সমস্যা মেটাব।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Ultadanga Fish Market Muchibazar Muchibazar Market
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy