Advertisement
০৫ মে ২০২৪
কাটা পায়ের দুই ‘কেলেঙ্কারি’

‘নষ্ট করেছে হাসপাতাল’

শরীরের কোনও অঙ্গ কেটে বাদ দেওয়া হলে রোগীর পরিবারের হাতে তা তুলে দেওয়াই নিয়ম। এ বিষয়ে জানানোর কথা স্থানীয় থানাকেও।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০১৭ ০১:০৮
Share: Save:

শরীরের কোনও অঙ্গ কেটে বাদ দেওয়া হলে রোগীর পরিবারের হাতে তা তুলে দেওয়াই নিয়ম। এ বিষয়ে জানানোর কথা স্থানীয় থানাকেও। কিন্তু পুলিশের দাবি, পাটুলির ব্যবসায়ী সুনীল পাণ্ডের কাটা পা তাঁর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া তো হয়ইনি, উল্টে মেডিকা হাসপাতাল নিজেরাই তা নষ্ট করে দিয়েছিল। সেই অভিযোগ তুলেই এ বার ওই হাসপাতাল-কর্তৃপক্ষের জবাব তলব করল পুলিশ।

পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, অঙ্গ কেটে বাদ দেওয়া হলে সংশ্লিষ্ট রোগীর পরিবারের হাতে তা তুলে দিতে হয়। তার আগে সেটি ঠিকমতো সংরক্ষণ করা জরুরি। কারণ, কোনও কারণে অঙ্গ বাদ দেওয়া নিয়ে অভিযোগ দায়ের হলে কাটা অঙ্গের ময়না-তদন্ত করতে হয়। এ ক্ষেত্রে সেই নিয়ম কেন মানা হয়নি, তা জানতে চান তদন্তকারীরা। এই ঘটনায় শুক্রবার সুনীলের চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা চার জন ডাক্তারকে থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন তাঁরা।

লালবাজারের খবর, হৃদ্‌যন্ত্রের সমস্যা নিয়ে গত ৬ তারিখ মেডিকা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন সুনীল। প্রথমে তাঁর অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি করা হয়। পরে পায়ে রক্ত জমাট বেঁধে গিয়েছে জানিয়ে ওই হাসপাতালেই তাঁর একটি পা কেটে বাদ দেওয়া হয়। সেই অস্ত্রোপচারের পরদিনই মারা যান তিনি। তার পরেই এক চিকিৎসক এবং হাসপাতালের বিরুদ্ধে পূর্ব যাদবপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করে
সুনীলের পরিবার।

পুলিশের দাবি, কী পরিস্থিতিতে সুনীলের পা বাদ দেওয়া হয়েছিল, তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন ওই চার জন চিকিৎসক। এ-ও জানিয়েছেন, হাসপাতালের গঠিত মেডিক্যাল বোর্ডে রোগীর পরিবারের এক জন সদস্যও ছিলেন। তাঁর অনুমতি নিয়েই সব কিছু করা হয়েছে বলে তাঁদের দাবি। সুনীলবাবু ভর্তি হওয়ার পরে হার্টের যে চিকিৎসক তাঁর অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি করেছিলেন, তাঁকে বৃহস্পতিবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। তিনিই জানিয়েছিলেন, হাসপাতালের গঠন করা মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্য এক অস্থিবিশারদের নির্দেশেই সুনীলের পা কাটা হয়েছিল। সেই সূত্র ধরেই এ দিন ওই অস্থিবিশারদ-সহ চার জনকে ডেকে পাঠানো হয়। সুনীলের চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রায় সাড়ে চারশো পাতার নথি মেডিক্যাল কাউন্সিলে পাঠানো হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।

অন্য দিকে, ডানকুনির যুবক সঞ্জয় রায়ের মৃত্যুর তদন্তে এ দিন ফের অ্যাপোলো হাসপাতালে যায় লালবাজারের সাইবার ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের একটি দল। সঙ্গে ছিলেন ওই মামলার তদন্তকারী অফিসারও।

পুলিশ সূত্রে খবর, সাইবার ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা ওই হাসপাতালের রেডিওলজি বিভাগের সার্ভার খতিয়ে দেখেন। সেই সার্ভারেই ওই হাসপাতালের চিকিৎসাধীন রোগীদের এক্স-রে, স্ক্যান, এমআরআই রিপোর্ট থাকে। সঞ্জয়ের মৃত্যুর পরে চিকিৎসায় গাফিলতি এবং রিপোর্ট বিকৃত করার যে অভিযোগ উঠেছে, তা যাচাই করতেই এ দিন সেখানে যাওয়া হয়েছিল বলে লালবাজারের দাবি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Scandal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE