প্রতীকী ছবি।
ব্যোমকেশ বক্সী বা ফেলু মিত্তির নয়! পুজোর ছুটিতে চাই পেশাদার পাহারাদার!
বাড়ি ফাঁকা রেখে সপরিবার বেড়াতে যেতেই পারেন! কিন্তু আপনার বাড়িতে নিজস্ব রক্ষীর বন্দোবস্ত আছে তো? ছাপ্পামারা নিরাপত্তা এজেন্সি থেকে রক্ষীদের বাড়িতে ডেকে এনে বসান। তার পরে যেখানে খুশি যান! ফুরফুরে মেজাজে ঘুরতে যাওয়ার ইচ্ছে থাকলে এটুকু মশাই করতেই হবে— খানিকটা এমনই নিদান পুলিশের।
কলকাতার উপকণ্ঠে সোনারপুর থানার তরফে বিলি করা প্রচারপত্রে সেটাই বলা হয়েছে। বাড়িতে ভাল করে তালা দেওয়া, ছাদে বা বাড়ির পিছনে লোহার দরজা বসানোর পরামর্শ তো বহু পুরনো। ইদানীং বলা হচ্ছে, ‘বাড়িতে লোক রাখুন’! এই ‘লোক রাখা’র ব্যাখ্যা রীতিমতো জোর গলায় এ বার শুনিয়েও দিয়েছে পুলিশ। অর্থাৎ, বাড়ি ফাঁকা রেখে কোথাও গেলে পেশাদার নিরাপত্তা এজেন্সি থেকে রক্ষী রাখতে হবে।
সম্প্রতি বাড়িতে চুরির জেরে সোনারপুর থানার শরণাপন্ন হয়েছিলেন স্থানীয় এক গৃহস্থ। তাঁকে দেখেই আকুল থানার ওসি! ‘আপনারা তো কোনও কথাই শোনেন না, পুলিশ কী করবে? কিছুই তো ব্যবস্থা করেননি! নিরাপত্তা এজেন্সির লোক কই! এত করে লিফলেট ছাপিয়ে বিলি করছি! একটা কথা যদি কানে তোলেন।’
গৃহস্থের প্রশ্ন, বড়সড় আবাসনে নিরাপত্তার এজেন্সিকে মোতায়েন করা তা-ও ভাবা যায়! কিন্তু বাড়িতে ভাড়া করে নিরাপত্তারক্ষী রাখব? দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পুলিশের এক কর্তার ব্যাখ্যা, এজেন্সি থেকে লোক ডেকে বসাতে কয়েক হাজার টাকা গৃহস্থের পকেট থেকে বেরোলে বেরোক! কিন্তু লাখ টাকার চুরি হলে তো লোকসান ঢের বেশি। অর্থাৎ, গৃহস্থের ফাঁকা বাড়ির পাহারাদারি যে পুলিশের পক্ষে সব সময়ে সম্ভব না-ও হতে পারে, তা স্পষ্ট কবুল করছেন তিনি।
জেলা পুলিশের এক কর্তা রাখঢাক না-করেই বলছেন, ‘‘কলকাতার বাইরে এক-একটি থানার এলাকা যা বিশাল, তাতে একা পুলিশের পক্ষে সর্বত্র অতন্দ্র নজরদারি চালানো সম্ভব নয়।’’ তবে বাড়ি ফাঁকা রেখে কোথাও যেতে হলে পুলিশের তরফে থানায় জানিয়েও যেতে বলা হচ্ছে। তাদের আশ্বাস, ফাঁকা বাড়িগুলির দিকে না হয় টহল জোরদার করতে হবে।
পুজোর আগে কলকাতা থেকে কাছেপিঠের মফস্সল— সর্বত্রই চুরি রুখতে গৃহস্থের জন্য পরামর্শের তালিকা দিয়েছিল পুলিশ। অষ্টমীর সকালে অঞ্জলি থেকে শুরু করে সন্ধ্যায় ঠাকুর দেখতে যাওয়া— পারতপক্ষে সক্কলে বাড়ি খালি করে বেরোতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল তারা। লোহার দরজায় লোহার পাতে তালা দিতে বলা হয়েছিল। দুমদাম ফেসবুকে সচিত্র আপডেটও বিপজ্জনক হতে পারে বলে মনে করিয়ে দিয়েছে পুলিশ। মানে, ফাঁকা বাড়ি দেখলে তো বটেই, ফেসবুক মারফত আপনার গতিবিধিও ধরা পড়তে পারে ‘চোরে’র চোখে।
পুলিশের দাবি, সাবধানতার এ সব পদক্ষেপের ফলে চুরি কিন্তু অনেক জায়গায় কমেছে। তবে একেবারে নিরাপত্তা এজেন্সির রক্ষী বাড়িতে বসানোর প্রস্তাব অনেকেরই হজম হতে একটু সমস্যা হচ্ছে। অল্প লোকের সংসারে ছোটখাটো বাড়িতে যাঁদের বসবাস, থানায় এমন কথা শুনে তাঁরা কী করবেন, ভেবেই উঠতে পারছেন না!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy