E-Paper

পুজোয় খাবারের স্টলের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন বিশেষ চাহিদাসম্পন্নেরা

ভিড় থেকে একের পর এক অর্ডার নেওয়া, খাবার গরম করা, টাকা সামলানোর মতো কঠিন কাজে সময় একটু বেশি লাগলেও জ্যোতিষ্কদের ভুল ধরা কঠিন।

দেবস্মিতা ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০২৩ ০৮:২০
দমদম পার্কে ভিড় সামলে খাবার বিক্রিতে ব্যস্ত বিশেষ চাহিদাসম্পন্নেরা। বৃহস্পতিবার।

দমদম পার্কে ভিড় সামলে খাবার বিক্রিতে ব্যস্ত বিশেষ চাহিদাসম্পন্নেরা। বৃহস্পতিবার। —নিজস্ব চিত্র।

সন্ধ্যা হতেই ভিড় বাড়ছে স্টলে। বাড়ছে খাবারের অর্ডার। সব সামাল দিয়ে দোকান বন্ধ করতে প্রথম দিনই বেশ দেরি হয়েছে। কিন্তু তাতেও ক্লান্তি নেই নীলাভ, জ্যোতিষ্ক, পিনাকীদের। অটিজ়ম, বৌদ্ধিক প্রতিবন্ধকতা, ডাউন সিনড্রোমের নানাবিধ সমস্যাকে এক পাশে সরিয়ে রেখে কেক-পেস্ট্রি, জল, চকলেট বিক্রি করছেন ওঁরা। দমদম পার্ক তরুণ সঙ্ঘের পুজো মণ্ডপের পাশে একচিলতে স্টল তাই চতুর্থী থেকেই জমজমাট।

স্টলের উদ্যোক্তা, অটিস্টিক নীলাভ ঘোষালের মা ববিতা ঘোষাল বললেন, ‘‘এর থেকে হয়তো আর্থিক লাভ তেমন কিছুই হবে না। কিন্তু বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন এতগুলো ছেলেমেয়ের ব্যবসা ও দোকান চালানো সম্পর্কে একটা ধারণা তৈরি হবে। সমাজেরও কিছুটা সচেতনতা বাড়বে।’’ তাঁর মতে, অটিজ়ম, বৌদ্ধিক প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, এমন ছেলেমেয়েরা যে অনেক কঠিন কাজও করতে পারে, সেই ধারণাটা স্পষ্ট হওয়া দরকার। পরে হয়তো আরও কিছু পুজো কমিটি এবং অন্য অনেকেই এমন উদ্যোগে শামিল হবেন।

বিকেল ৪টেতেই নিউ ব্যারাকপুর, ডানকুনি, পার্ক সার্কাস থেকে স্টলে পৌঁছচ্ছেন জ্যোতিষ্ক ঘোষ, পিনাকী চৌধুরী, দেবজ্যোতি বালা, নীলাভ ভৌমিক, প্রতিজ্ঞা মজুমদার, সৌম্য ভৌমিক, সনহিতা ও অনন্যা চৌধুরীরা। পাঁচ ঘণ্টার কাজ। প্রত্যেকের জন্য কাজের সময় নির্দিষ্ট করা। পাঁচ জন করে স্টলের দু’টি কাউন্টার সামলাচ্ছেন। টাকার হিসাব রাখার দায়িত্বও তাঁদের। আর পুরোটা সময় তাঁদের পাশে থাকছেন ববিতা ও অন্য অভিভাবকেরা।

ভিড় থেকে একের পর এক অর্ডার নেওয়া, খাবার গরম করা, টাকা সামলানোর মতো কঠিন কাজে সময় একটু বেশি লাগলেও জ্যোতিষ্কদের ভুল ধরা কঠিন। এ দিকে, ছেলেমেয়েরা ঠাকুর দেখা ভুলে যে ভাবে দায়িত্ব নিয়ে স্টল চালাচ্ছেন, তাতে অবাক তাঁদের অভিভাবকেরা। উপার্জনের আনন্দেই যে অক্লান্ত অনন্যা, দেবজ্যোতিরা।

নীলাভর কথায়, ‘‘নবমীর দিন ঠাকুর দেখতে বেরিয়ে ওই টাকায় বন্ধুদের সঙ্গে বিরিয়ানি খাব।’’ উপার্জিত টাকা জমিয়ে রাখবেন পিনাকী চৌধুরী। ভিড় সামলানোর ফাঁকে মাঝেমধ্যেই এসে খোঁজ নিয়ে যাচ্ছেন পুজো কমিটির কর্তারা। দমদম পার্ক তরুণ সঙ্ঘের যুগ্ম সম্পাদক সায়ন্তন কাঞ্জিলাল বললেন, ‘‘স্টল তৈরির খরচটুকু ছাড়া আর কোনও ভাড়াই এ জন্য নেওয়া হয়নি। ওঁরা সফল হলেই আমরা খুশি।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Durga Puja 2023 Autism

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy