কলকাতা শহরে কোভিডের সংক্রমণ খানিকটা নিয়ন্ত্রণে এলেও চিন্তা বাড়িয়েছে বেশ কয়েকটি এলাকা। কারণ, সেখানে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে খুব দ্রুত গতিতে। এই মুহূর্তে পুরকর্তাদের আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে দশ নম্বর বরো। সেখানে সংক্রমণ ঠেকাতে বাড়তি কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে পুরসভার তরফে। পুরসভা এ কথা বললেও পুলিশের তরফে বিশেষ কোনও উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না বলেই অভিযোগ এলাকার বাসিন্দাদের। তাঁরা জানাচ্ছেন, ওই বরোর অধিকাংশ থানাই ‘ছকে বাঁধা’ নির্দিষ্ট কিছু পদক্ষেপ করছে। বাড়তি কোনও উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, শহরের কন্টেনমেন্ট জ়োন বা গণ্ডিবদ্ধ এলাকাগুলির একটি বড় অংশই রয়েছে ১০ নম্বর বরোয়। কলকাতার মোট ৩৩টি গণ্ডিবদ্ধ এলাকার মধ্যে শুধু ১০ নম্বর বরোতেই রয়েছে ১২টি। ওই বরোয় নিউ আলিপুর, নেতাজিনগর, লেক ও যাদবপুর থানা এলাকার একাধিক আবাসন এবং রাস্তা গণ্ডিবদ্ধ এলাকা হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। পুলিশের তরফে গার্ডরেল বসিয়ে গণ্ডিবদ্ধ এলাকায় যাতায়াত নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে, বরো জুড়ে সংক্রমণ লাগামহারা মাত্রায় ছড়ালেও আমজনতার একটি বড় অংশের মধ্যেই সচেতনতার লেশমাত্র দেখা যাচ্ছে না। কারণে-অকারণে ভিড় করছেন তাঁরা। রাস্তায় বেরিয়ে মাস্ক পরারও প্রয়োজন বোধ করছেন না অনেকে। যাদবপুর, নিউ আলিপুর, চারু মার্কেট-সহ ওই বরোর একাধিক বড় বড় বাজারে প্রতিদিনই সকাল থেকে দেখা যাচ্ছে গিজগিজে ভিড়। পুরসভা ও পুলিশের তরফে মাঝেমধ্যে বাজার এলাকায় জীবাণুনাশক স্প্রে করা হলেও তা যে করোনাকে দমিয়ে রাখতে পারবে না, ভিড়ের চেহারা দেখেই তা মালুম হয়। আর এখানেই সচেতন নাগরিকদের একাংশের প্রশ্ন, এলাকায় সংক্রমণের বাড়বাড়ন্ত দেখেও পুলিশ ভিড় ঠেকাতে আরও বেশি করে উদ্যোগী হচ্ছে না কেন? কেন পুলিশ শুধু গার্ডরেল বসিয়েই দায় সারবে?
নিউ আলিপুরের বাসিন্দা ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, ‘‘যে সমস্ত এলাকায় সংক্রমণ কম, সেখানে পুলিশ যেমন কাজ করছে, এখানেও তা-ই। বাড়তি কোনও উদ্যোগ দেখছি না। কিন্তু সংক্রমিত এলাকায় তো আরও কড়া ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। সেটা নেওয়া হচ্ছে না বলেই লোকজন করোনা-বিধি ভাঙার সাহস পাচ্ছেন। ফল যা হওয়ার তা-ই হচ্ছে। সংক্রমণ আরও বাড়ছে।’’