বাইরে নিয়ে আসা হচ্ছে টুম্পার দেহ। বুধবার রাতে। —নিজস্ব চিত্র।
বিছানায় নিথর পড়ে আছেন এক মহিলা। নাক ও মুখ থেকে রক্ত গড়িয়ে পড়ছে। তাঁর মাথার কাছে পড়ে রয়েছে একটি গামছা। বুধবার রাতে আলিপুর রোডের একটি বাড়ি থেকে এমন অবস্থাতেই উদ্ধার হল টুম্পা পাল (৩৬) নামে ওই মহিলার দেহ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানিয়েছে, মহিলার মাথার পিছনে ক্ষতচিহ্ন মিলেছে। তা দেখে তাদের অনুমান, প্রথমে ভারী কিছু দিয়ে ওই মহিলার মাথায় আঘাত করা হয়। তার পরে মৃত্যু নিশ্চিত করতে গামছা দিয়ে শ্বাসরোধ করা হয়। রাতেই দেহটি এসএসকেএমে পাঠানো হয়েছে ময়না-তদন্তের জন্য। রাত পর্যন্ত টুম্পার স্বামীর খোঁজ মেলেনি।
পুলিশ সূত্রের খবর, ৬৩এ, আলিপুর রোডে একটি মন্দির সংলগ্ন বাড়িতে ভাড়া থাকেন পেশায় ব্যবসায়ী সুরজিৎ পাল, তাঁর স্ত্রী টুম্পা ও তাঁদের দুই ছেলে রায়ন ও সায়ন। ছোট ছেলে সায়ন সাউথ সিটি কলেজে দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জেনেছে, সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ তিনি কলেজ থেকে বাড়ি ফিরে দেখেন, বিছানায় চিৎ হয়ে পড়ে রয়েছেন মা। নাক ও মুখ থেকে রক্ত গড়াচ্ছে। সায়নই প্রতিবেশীদের খবর দেন। খবর যায় পুলিশেও। আসেন হোমিসাইড শাখার আধিকারিকেরা। ডিসি পদমর্যাদার এক পুলিশকর্তাও পৌঁছন।
সায়নকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জেনেছে, সুরজিৎবাবু ও টুম্পার মধ্যে অশান্তি ছিল। তবে তা বিবাহ-বহির্ভূত কোনও সম্পর্ক ঘিরে না অন্য কারণে, তা দেখছেন তদন্তকারীরা। ঘর থেকে একটি মোবাইল এবং ব্যাগ মিলেছে। প্রাথমিক ভাবে সে দু’টি সুরজিৎবাবুর বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। তবে সেই তথ্য খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কারণ সায়ন তদন্তকারীদের জানিয়েছেন, তাঁর বাবা সকালেই ব্যাগ ও মোবাইল নিয়ে ব্যবসার কাজে বেরিয়ে যান। তা হলে উদ্ধার হওয়া মোবাইল এবং ব্যাগ কার? স্পষ্ট উত্তর রাত পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। এ দিন সকাল থেকে সন্ধ্যার মধ্যে সুরজিৎবাবু বাড়ি ফিরেছিলেন কি না, তা-ও জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। পারিবারিক অশান্তির বাইরে অন্য সব দিকও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এলাকাবাসীরা জানিয়েছেন, বছর দুই আগে আলিপুর রোডের ওই বাড়ির একতলা ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করেন সুরজিৎবাবুরা। পাড়ায় সে ভাবে তাঁদের মেলামেশা ছিল না। টুম্পার এক আত্মীয়া জানান, ওই দম্পতির বড় ছেলে রায়ন উত্তরবঙ্গে আত্মীয়ের বিয়েতে গিয়েছেন। সেখান থেকেই তিনি ঘটনার কথা জানতে পারেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy