যে সব খাস জমি কোনও প্রয়োজনে আসছে না, সেই সব জমি দখলকারীদের এ বার পাট্টা দিতে চান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য, ‘‘রাস্তার পাশে বা অন্যত্র কোনও জায়গায় যে সব সরকারি জমি দীর্ঘদিন ধরে পড়ে রয়েছে, সেখানে যাঁরা ঘর বেঁধে রয়েছেন তাঁদেরকেই ওই জমির পাট্টা দিয়ে দেওয়া হোক।’’
তবে ওই পাট্টা দেওয়ার ক্ষমতা তিনি যে দলের নেতা-কর্মীদের পুরোপুরি ছেড়ে দিতে নারাজ, সেটাও এদিন বুঝিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ব্যারাকপুরের প্রশাসনিক বৈঠকে ওই সিদ্ধান্ত জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘‘কোথায় কোথায় এমন মানুষকে পাট্টা দেওয়া যায়, সেটা দেখে জেলাস্তর থেকে পরিকল্পনা করে পাঠাতে হবে রাজ্য সরকারের কাছে। সব কিছু খতিয়ে দেখে রাজ্য সরকার ঠিক করবে কাদের জমির পাট্টা দেওয়া হবে।’’
মুখ্যমন্ত্রীর এই চাওয়াকে কেন্দ্র করে ভিন্ন মতও শোনা যাচ্ছে। কেউ কেউ বলছেন, রাস্তার পাশে এই ভাবে দখল জমিতে বসে থাকা মানুষদের জমির পাট্টা দিয়ে স্থায়ী ভাবে থাকার সুযোগ করে দেওয়া হলে ভবিষ্যতে কোনও প্রয়োজনে ওই জমি পাওয়া যাবে না। এই ভাবনা তাই কতটা বাস্তবসম্মত এবং দূরদর্শী প্রশ্ন উঠছে তা নিয়ে।
অনেকের মতে, এই সরকার প্রথম থেকেই পাইয়ে দেওয়ার রাজনীতিতে বিশ্বাস করে। ক্লাব পিছু অনুদান থেকে ছুতোয় নাতায় এতদিন জনগনের হাতে আর্থিক সাহায্য তুলে দেওয়া হয়েছে। এখন আর্থিক সাহায্যের দিকে না হেঁঠে জমির পাট্টা দেওয়ার মানে হল, সরকারি কোষাগারে চাপ তৈরি না করে ঘুর পথে পাইয়ে দেওয়া। যদিও পাট্টা দেওয়ার পিছনে মুখ্যমন্ত্রীর যুক্তি, ‘‘কী করব! আমি গরীব মানুষদের পক্ষে। কিছু না হোক, ওই সব গরীব মানুষের মাথার ওপর একটা ছাদ যেন থাকে।’’
প্রসঙ্গত, এদিন বৈঠকে নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভোমিক তাঁর এলাকায় রেলের বরোদা ব্রিজের সংস্কারের কাজ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে অবগত করছিলেন। ওই সময় পার্থবাবু জানান, বরোদা ব্রিজের সংস্কারের জন্য সেতুর তলায় থাকা ১৬৭টি বাড়ি রাজ্যের গীতাঞ্জলি প্রকল্পে সারিয়ে অন্যত্র একটি পাড়া তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। সেখান ইতিমধ্যে ১১২ জনকে পুনর্বাসন দেওয়া হয়েছে। পার্থবাবুর দাবি ছিল, মুখ্যমন্ত্রী ওই পাড়ার নামকরণ করে দিন। এই প্রসঙ্গেই মুখ্যমন্ত্রী জমির পাট্টার দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
বৈঠকে সময় কম থাকায় এ দিন আর নামকরণ করতে পারেননি মুখ্যমন্ত্রী। পার্থবাবু জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, তিনি শীঘ্রই ওই পাড়ার নাম ঠিক করে জানিয়ে দেবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy