Advertisement
E-Paper

জীর্ণ মেসে রাবড়ির স্বাদে পালন হবে প্রাক্তন আবাসিক শিবরামের জন্মদিন

সোমবার সন্ধ্যায় আর পাঁচটা দিনের মতোই চলছিল তাস খেলা। তবে এ দিন কিছু পরিকল্পনাও সেরে ফেললেন মেসের বাসিন্দারা। কারণ ওই মেসেই থাকতেন সাহিত্যিক শিবরাম চক্রবর্তী।

আর্যভট্ট খান

শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০২২ ০৯:২৭
খেলা: মেসবাড়িতে শিবরাম চক্রবর্তীর ঘরেই বসেছে তাসের আসর। সোমবার, মুক্তারামবাবু স্ট্রিটে। নিজস্ব চিত্র।

খেলা: মেসবাড়িতে শিবরাম চক্রবর্তীর ঘরেই বসেছে তাসের আসর। সোমবার, মুক্তারামবাবু স্ট্রিটে। নিজস্ব চিত্র।

কেক কেটে নয়, জন্মদিন পালন করা হবে রাবড়ি খেয়ে। কারণ যাঁর জন্মদিন, রাবড়ির প্রতি তাঁর পক্ষপাত সকলেরই জানা।

সোমবার সন্ধ্যায় আর পাঁচটা দিনের মতোই চলছিল তাস খেলা। তবে এ দিন কিছু পরিকল্পনাও সেরে ফেললেন মেসের বাসিন্দারা। কারণ ওই মেসেই থাকতেন সাহিত্যিক শিবরাম চক্রবর্তী। আর আজ মঙ্গলবার, তাঁর জন্মদিন পালন করতে চান মেসের বর্তমান বাসিন্দারা।

ঠনঠনিয়া কালীবাড়ির কাছে ১৩৪ নম্বর মুক্তারামবাবু স্ট্রিটের মেসবাড়ির যে ঘরে শিবরাম থাকতেন, যেখানে তিনি চৌকি পেতে লেখালিখি করতেন, ঘুমোতেন, ঠিক সেখানেই এখন থাকেন পূর্ব মেদিনীপুরের রামনগরের বাসিন্দা চিন্ময় গিরি। চিন্ময় হাই কোর্টের এক উকিলের অধীনে কাজ করেন। তিনি বলেন, ‘‘এত বড় সাহিত্যিক যে ঘরে থাকতেন, সেখানেই আমি আছি ভেবে বেশ রোমাঞ্চ লাগে। শিবরামবাবুর নাম শুনলেও লেখা আগে পড়িনি। এই ঘরেই উনি থাকতেন শোনার পরে লেখাও পড়তে শুরু করেছি।’’

বিখ্যাত প্রাক্তন আবাসিকের জন্মদিন কী ভাবে পালন করা যায়, তার পরিকল্পনা করতে গিয়ে তাঁরা ঠিক করেন, আনা হবে শিবরামের প্রিয় রাবড়িই। মেসের অন্য বাসিন্দা কল্যাণ মণ্ডল, পুলিনকুমার সিংহ, মোহন পাত্ররা সেই পরিকল্পনায় এককথায় রাজি হয়ে গেলেন। কল্যাণ বলেন, ‘‘শিবরামের লেখাতেই রাবড়ির কথা রয়েছে। তাই মঙ্গলবার রাতে রাবড়ি থাকবে।’’

অতিমারির সময়ে মেস ছেড়ে বাড়ি চলে গিয়েছিলেন আবাসিকেরা। এই বছরের গোড়ায় তাঁরা ফিরে এসেছেন। চিন্ময় বলেন, ‘‘আমপানের দাপটে মেস আরও জীর্ণ হয়েছে। মেসের সামনের যে বারান্দায় শিবরামকে প্রায়ই দেখা যেত, সেটি ভেঙে গিয়েছে। শিবরামের ঘরে তাঁর একটা ছবি ছিল। সেটাও আর নেই।’’

শিবরামের ঘরে এখন পাশাপাশি তিনটি চৌকি পাতা। পুলিন বলেন, ‘‘শিবরাম দেওয়াল জুড়ে পরিচিতদের নাম, ঠিকানা, ফোন নম্বর, বাজারের হিসাব অনেক কিছুই লিখে রাখতেন। কিন্তু সে সব ধীরে ধীরে মুছেগিয়েছে। লেখা তো ফিরিয়ে আনতে পারব না। তবে ওঁর একটা ছবি ফের টাঙাব।’’ মেসবাড়ির সিঁড়ি দিয়ে নামলে রান্নাঘর। রাঁধুনি কালীপদ মণ্ডল বলেন, ‘‘আগে কাঠের উনুন ছিল। শুনেছি শিবরাম মাঝেমধ্যে উনুনের আগুনে বিড়ি ধরাতে আসতেন। রান্নাঘরেই লিখতে বসে যেতেন।’’

মেসের বাসিন্দারা জানালেন, শিবরামের জন্মদিন হয়তো নীরবেই কেটে যাবে। তাঁর কিছু ভক্ত আসবেন মেস দেখতে। যেমন সারা বছর ধরেই অনুরাগীরা আসেন। তবে তাঁরা ঠিক করেছেন, এ বছরের জন্মদিন থেকে মেসে শিবরামের লেখা বইয়ের সংগ্রহও গড়ে তুলবেন তাঁরা।

Shibram Chakraborty Hostel
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy