—ফাইল চিত্র
আগের থেকে অনেকটাই কমেছে কোভিড সংক্রমণের হার। গত এক সপ্তাহে দৈনিক সংক্রমিতের সংখ্যা ঘোরাফেরা করেছে তিন থেকে সাত জনের মধ্যে। মৃত্যুর সংখ্যা শূন্য। এই পরিস্থিতিতে হাওড়া জেলা স্বাস্থ্য দফতর জানাল, করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য সরকারি ব্যবস্থাপনায় মোট ৫০টি শয্যা পৃথক রেখে বাকি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলিতে আগের মতোই সব ধরনের রোগের চিকিৎসা হবে। অর্থাৎ, সেগুলিকে আর করোনার জন্য নির্দিষ্ট করে রাখা হচ্ছে না। সোমবার জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, উলুবেড়িয়ার ইএসআই এবং একটি বেসরকারি হাসপাতাল-সহ সত্যবালা আইডি হাসপাতালে কিছু শয্যা সংরক্ষিত রেখে বাকি পাঁচটি
হাসপাতালকে করোনা হাসপাতালের তকমা থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
দফতর সূত্রের খবর, কোভিড পরিস্থিতিতে হাওড়ায় সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে আটটি হাসপাতালে প্রায় সাড়ে চারশো শয্যা করোনা চিকিৎসার জন্য বরাদ্দ করা হয়েছিল। কিন্তু গত তিন মাসে দেখা গিয়েছে, অন্য জেলার তুলনায় হাওড়ায় সংক্রমণের হার নিম্নমুখী। দৈনিক করোনা পজ়িটিভ রিপোর্ট আসছে তিন থেকে সর্বাধিক সাত জনের।
এর পরেই জেলার তিনটি হাসপাতাল বাদে বাকি পাঁচটিকে ‘করোনা হাসপাতালের’ তকমা থেকে মুক্ত করার জন্য আবেদন জানানো হয় রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের কাছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা এ দিন জানান, রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর সেই অনুমতি দিয়েছে। একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, নিয়মিত ১২০০ লোকের করোনা পরীক্ষা হচ্ছে। তাঁদের অধিকাংশেরই রিপোর্ট আসছে নেগেটিভ।
এ দিকে, অন্য জেলার মতো হাওড়াতেও চলছে করোনার প্রতিষেধক প্রদান কর্মসূচি। যদিও প্রতিষেধক গ্রহীতার সংখ্যা অনেকটাই কম। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত ৯০,৬৪৯ জনকে প্রতিষেধক দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধার্য হলেও তা নিয়েছেন ৩৪,৫৪৫ জন। হিসেব অনুযায়ী যা মাত্র ৩৮ শতাংশ।
স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে প্রায় ৪৬ শতাংশ প্রতিষেধক নিয়েছেন। পাশাপাশি, আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে ভোটকর্মীদের প্রথম সারির করোনা যোদ্ধা হিসেবে ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। তাঁদের মাত্র ৩৪ শতাংশ এখনও পর্যন্ত প্রতিষেধক নিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে সব ভোটকর্মীকে প্রতিষেধক দেওয়া কার্যত চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে জেলা প্রশাসনের কাছে।
জেলার এক পদস্থ স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, ‘‘প্রতিষেধক নেওয়ার পরে শারীরিক নানা সমস্যা হতে পারে, এমন বিরূপ প্রচারের প্রভাব তো আছেই। সেই সঙ্গে করোনা নির্মূল না হলেও তা নিয়ে অনেকেই মাথা ঘামাচ্ছেন না। সব মিলিয়ে নাগরিকদের একটা অংশ এখনও প্রতিষেধক নেওয়ার ব্যাপারে দোলাচলে ভুগছেন।’’ তবে তিনি মন্তব্য করেন, ভবিষ্যতে সুস্থ থাকার জন্য প্রত্যেকের প্রতিষেধক নেওয়া উচিত। কারণ চিকিৎসকেরা স্পষ্ট জানিয়েছেন, জেলায় সংক্রমণ কমলেও স্বাস্থ্যবিধি মানা, বিশেষত মাস্ক পরার ক্ষেত্রে গা-ছাড়া মনোভাব দেখানো চলবে না। কিন্তু এ দিনও মঙ্গলাহাট চলাকালীন দেখা গিয়েছে, হাজার হাজার মানুষ মাস্ক না পরেই ঘুরছেন।
জেলা স্বাস্থ্যকর্তাদের বক্তব্য, করোনা এখনও নির্মূল হয়নি। বিশেষত, দেশের কয়েকটি রাজ্যে নতুন করে যে ভাবে সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে, তাতে সামান্য ঢিলেঢালা ভাবই বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে বলে তাঁদের মত। এ দিকে, ভোটকর্মীদের সকলকে প্রতিষেধক নিতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। তাই যাঁদের ভোটের ডিউটি রয়েছে, তাঁদের প্রতিষেধক দেওয়ার জন্য সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে একাধিক শিবির করা হবে। যদিও শেষ পর্যন্ত কত শতাংশ ভোটকর্মী প্রতিষেধক নিতে আগ্রহী হবেন, তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন খোদ স্বাস্থ্যকর্তারাই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy