Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
স্বামী স্বরূপানন্দ সরণি

পড়শির যোগাযোগ কমলেও হারায়নি শান্তিপূর্ণ পরিবেশ

ছবির মতো পরিপাটি নয়। নতুন পুরনো বাড়ি আর গাছ-গাছালিতে ভরা এ পাড়াটা আগে কাঁকুড়গাছির কাঠগোলা নামেই পরিচিত ছিল। নাম বদলে হল স্বামী স্বরূপানন্দ সরণি। সিআইটি রোড থেকে শুরু হওয়া উপেন্দ্রচন্দ্র ব্যানার্জি রোডের ধার ঘেঁষে শুরু হওয়া আমাদের এ পাড়াটা মিশেছে সিআইটি রোডে।

ছবি: শৌভিক দে

ছবি: শৌভিক দে

সৌমিত্র শীল
শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৬ ০১:২১
Share: Save:

ছবির মতো পরিপাটি নয়। নতুন পুরনো বাড়ি আর গাছ-গাছালিতে ভরা এ পাড়াটা আগে কাঁকুড়গাছির কাঠগোলা নামেই পরিচিত ছিল। নাম বদলে হল স্বামী স্বরূপানন্দ সরণি। সিআইটি রোড থেকে শুরু হওয়া উপেন্দ্রচন্দ্র ব্যানার্জি রোডের ধার ঘেঁষে শুরু হওয়া আমাদের এ পাড়াটা মিশেছে সিআইটি রোডে।

তেরো বছর আগে এখানে এসে মনে একটা ধাক্কা খেয়েছিলাম। এ কেমন পাড়া, যেখানে কোনও রক নেই। আগে থাকতাম মৌলালি অঞ্চলে। সেখানে পাড়া পাড়া ব্যাপারটা অনেক বেশি ছিল।

বরাবরই এখানে বাসিন্দাদের মধ্যে যোগাযোগ কম। যেটুকুও বা ছিল দিনে দিনে সেটাও কমেছে। যখন এ পাড়ায় নতুন এসেছিলাম কয়েক জন পুরনো বাসিন্দা আলাপ করে আমাদের আপন করে নেন। তাঁরা সব হারিয়ে গেলেন।

সেই কাঠগোলা আর নেই। সেখানে হচ্ছে বহুতল। মাথা তুলেছে বহুতল। পুরনো বাসিন্দারা অনেকেই অন্যত্র চলে গিয়েছেন। এসেছেন অবাঙালিরা। পাড়া মানে যে বৃহত্তর পরিবার সে কথা এখানে মনে হয় না। পাড়ার মাঝামাঝি রয়েছে সিআইটি কোয়ার্টার্স। সেখানে বাঙালিদের বাস।

গাছপালা থাকায় এখনও ঘুম ভাঙে পাখির ডাকে। বাড়তে থাকা গাড়ির হর্নের আওয়াজ ছাপিয়ে যায় ফেরিওয়ালার ডাক।

স্থানীয় কাউন্সিলর এলাকার উন্নয়নে আগ্রহী। নিয়মিত ব্লিচিং মশার তেল ছড়ানো হয়। পাড়াটা এখন রাতেও আলো ঝলমলে। নিয়মিত জঞ্জাল সাফাই করা হয়। ফুটপাথের কিছু জায়গায় গুমটি দোকান হয়েছে। রাস্তার দু’ধারে তৈরি হয়েছে ঝলমলে অভিজাত বেশ কয়েকটি দোকান।

এখনও পাড়ার চায়ের দোকানে সকালের ভিড় চোখে পড়ে। চা-ডিম-টোস্ট কিংবা ঘুগনির আকর্ষণে অনেকেই প্রাতরাশ সারেন ওখানেই। সঙ্গে আড্ডাও। কিছু দোকানের সামনে কিংবা বাড়ির দরজায় চেয়ার পেতে চলে দু’-চার জনের আড্ডা। এ পাড়ার পুজো-পার্বণও আকর্ষণীয়। কাছেই হয় যুবকবৃন্দ এবং নবোদয় পল্লিমঙ্গলের দুর্গাপুজো। রোজ সকালে পুরনো পোস্ট অফিসের জমিতে বসে একটি বাজার। কাছেই ভিআইপি মার্কেট। সেখানে মধ্যবিত্তের নাগালের মেলে সব কিছুই।

কমেছে খেলাধুলোর ছবিটা। সিআইটি কোয়ার্টর্সের পিছনে ফুটবল-ক্রিকেট টুর্নামেন্ট হয়। আগে ফুটপাথে ছোটরা খেললেও গাড়ির দৌরাত্ম্যে সে ছবিও আর দেখা যায় না। পার্কিং সমস্যাও বেড়েছে। কখনও কখনও গ্যারাজের সামনে অন্যের গাড়ি থাকায় গাড়ি বার করতে সমস্যা হয়।

কিছু ঘাটতি কিছু প্রাপ্তি। এরই মাঝে দিনের শেষে এখানেই খুঁজে পাই নিশ্চিন্ত নিরাপত্তা আর শান্তি। সেটাই এ পাড়ার সবচেয়ে বড় আকর্ষণ।

লেখক চিকিৎসক

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Peaceful Environment
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE