শহরের গঙ্গায় এ বার নতুন ‘রাইড’।
গঙ্গাবক্ষে ‘জলক্রীড়া’ চালু হয়েছে সপ্তাহ দু’য়েক আগে। লালবাজার জানিয়েছে, এত দিন জেট স্কি, স্পিড বোট, এবং বাম্পি রাইডের সুযোগ ছিল। সেগুলির সাফল্য দেখে এ বার আরও তিনটি নতুন অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস বা রাইড চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে লালবাজার। উৎসবের মরসুমেই তা চালু হওয়ার কথা।
কলকাতা পুলিশের পরিচালনায় ওই জলক্রীড়ায় মন্দারমণির একটি অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস চালানোর অভিজ্ঞতাসম্পন্ন সংস্থা উপকরণ এবং দক্ষ অপারেটর দিয়ে সাহায্য করছে পুলিশকে। ওই সংস্থার কাছে অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসের সর্বভারতীয় লাইসেন্স থাকায় তাদের কাছ থেকে সাহায্য নেওয়া হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। সেই সঙ্গে কলকাতা পুলিশের বির্পযয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যরা সব সময় সজাগ থাকছেন।
পুলিশ সূত্রের খবর, নতুন তিনটি অ্যাডভেঞ্চার রাইড চালু হলে গঙ্গার বুকে সাধারণ মানুষ ‘প্যারাসেলিং’, ‘কায়াকিং’ বা ‘ওয়াটার স্কিয়িং’ উপভোগ করতে পারবেন। আগে শুধুমাত্র ‘প্যারাসেলিং’ মন্দারমণি বা দিঘাতে উপভোগ করার সুযোগ ছিল।
এত দিন প্রতি সপ্তাহে শনি এবং রবিবার কলকাতা রিভার ট্র্যাফিকের পরিচালনায় বাবুঘাটের কাছে ওই জলক্রীড়ায় অংশ নিতে পারতেন উৎসাহী জনতা। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ এই পরিষেবার বাণিজ্যিকীকরণ করেনি। ফলে এতে টাকা লাগে না। শুধুমাত্র কলকাতা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে আগে থেকেই নাম নথিভুক্ত করতে হত। আগে এলে আগে সুযোগ মিলবে, এই ভিত্তিতে আবেদনকারীদের সুযোগ করে দেওয়া হত। পুলিশকর্তাদের কথায়, ‘‘প্রতি দিন গড়ে ৬০ থেকে ৭০ জন অংশ নিতে পারলেও এর দ্বিগুণ সংখ্যক মানুষ অপেক্ষমাণের তালিকায় থেকে যাচ্ছেন। তাঁদের সুযোগ করে দিতেই আরও তিনটি ‘রাইড’ চালু করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, প্যারাসেলিং পুরোটাই হবে জলে। সঙ্গে র্যাফটিংয়ের ধাঁচে গঙ্গায় ‘কায়াকিং’ করারও সুযোগ মিলবে। নতুন তিনটি রাইডে বিপদের আশঙ্কা বেশি থাকায় সব সময় সঙ্গে থাকবেন বেসরকারি সংস্থার প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মীরা। প্রত্যেককে বাধ্যতামূলক ভাবে লাইফ জ্যাকেট পরতে হবে। এক বর্গ কিলোমিটারের মতো এলাকা জুড়ে ওই রাইড করা যাবে।
লালবাজারের একাংশ সূত্রে র খবর, বিপদের কথা মাথায় রেখেই পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার এবং ডেপুটি কমিশনার (বন্দর) সৈয়দ ওয়াকার রেজা নিজেরা বেশ কয়েকটি জলক্রীড়া পরিচালনা করে দেখেছেন। লাইফ জ্যাকেট ব্যবহারের পরে কেউ দুর্ঘটনার কবলে পড়লে কোনও বিপদ ঘটবে না, তা হাতে কলমে দেখার পরেই তাঁরা ওই জলক্রীড়ার ছাড়পত্র দিয়েছেন। পুলিশকর্তাদের দাবি, সব ঠিকঠাক চললে নিয়ম মেনেই ভবিষ্যতে ওই জলক্রীড়ার বাণিজ্যিকীকরণ করা যেতে পারে। তাতে যেমন গঙ্গাবক্ষে জলক্রীড়াও হবে তেমনই সরকারেরও লক্ষীর ভাঁড়ারও পূর্ণ হবে।