শিক্ষামন্ত্রী বলেছিলেন, ছাত্র আন্দোলনের নামে কলেজের কাজে ও ভর্তি প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটানো যাবে না। অথচ খোদ শাসকদল তৃণমূলের ছাত্র সংগঠনের বিক্ষোভেই বন্ধ হয়ে গেল কলেজে ভর্তি। ঘটনাচক্রে সেই কলেজেরই প্রাতঃ বিভাগের প্রাক্তন ছাত্রী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও দিবা বিভাগের প্রাক্তন ছাত্র শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় নিজেই।
সোমবার ছাত্রভর্তি ঘিরে ওই গোলমাল বাধে শ্যামাপ্রসাদ কলেজে। অভিযোগ, দুপুরে ভর্তি শুরুর সময়েই ছাত্র সংসদের একদল সদস্য অফিসে ঢুকে পড়ে। তাঁরা টিএমসিপি-র কর্মী বলেই জানান এক শিক্ষক। ওই ছাত্রেরা দাবি করেন, অনলাইনে প্রকাশিত মেধা তালিকায় নিয়ম ভেঙেছেন কর্তৃপক্ষ। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দেখা না করলে কাজ হতে দেওয়া যাবে না। বন্ধ হয়ে যায় ভর্তি। অভিযোগ, ১৫ জন শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মীকে একটি ঘরে বসিয়ে ওই ছাত্রেরা জানিয়ে দেন, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ না এলে ছাড়া হবে না। তবে এ দিন প্রথমে যাঁরা ভর্তি হতে এসেছিলেন, তাঁদের আটকানো হয়নি বলেও দাবি সংসদের।
টিএমসিপি ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক সৌভিক দাস জানান, মেধা তালিকায় যাঁদের নাম আছে, তার তুলনায় বেশি নম্বর পেয়েও অনেকে ঠাঁই পাননি। অনলাইন প্রক্রিয়া স্বচ্ছ হলে তা সম্ভব নয় বলে তাঁদের অভিযোগ। তা অস্বীকার করে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তন্ময় বিশ্বাস জানান, ভর্তির নিয়মে ব্যাঙ্কে টাকা জমা দিয়ে রসিদের অংশ কলেজের সামনে ড্রপবক্সে ফেলার কথা। তা না করলে মেধা তালিকায় নাম থাকবে না। ছাত্র সংসদের অভিযোগ, ড্রপবক্সে রসিদের অংশ ফেলা হলেও কলেজের তরফে রিসিভ করা হয়নি। এতেই দুর্নীতির সুযোগ তৈরি হয়েছে। এ নিয়ে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা হলে তন্ময়বাবু বা অন্য কাউকে পাওয়া যায়নি।
ছাত্র সংসদের এই আচরণ সম্পর্কে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘‘যে-ই এমন করুক, তা সমর্থনযোগ্য নয়। পতাকার রং দেখা হবে না। এটাই আমাদের নীতি। তবে অভিযোগ না এলে সরকার হস্তক্ষেপ করবে না, কারণ এটি ওই কলেজের স্বাধিকারের প্রশ্ন।’’ তবে তৃণমূলের মহাসচিব হিসেবে তাঁর বক্তব্য, ‘‘দলের ছাত্র ইউনিয়ন এতে জড়িত থাকলে তাদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টা জানতে চাইব। যা করণীয়, সেই মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ রাতেই স্থানীয় তৃণমূল নেতা সচ্চিদানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়কে কলেজে পাঠান তিনি। সচ্চিদানন্দবাবু যে রিপোর্ট দিয়েছেন, তাতে অনলাইন-দুর্নীতিতে পাঁচ অশিক্ষক কর্মীর জড়িত থাকার অভিযোগ মিলেছে। তবে উঠে গিয়েছে ঘেরাও। পার্থবাবু ছাত্রদের জানিয়েছেন, অভিযোগ থাকলে আলোচনা করে তা মেটানো হোক। ঘেরাও করা আন্দোলনের পদ্ধতি নয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy