Advertisement
১১ মে ২০২৪

যান-শাসনে এখনও ব্রাত্য কেষ্টপুর

কেষ্টপুরের ভিতরে যাতায়াতের প্রধান রাস্তা কেষ্টপুর মেন রোড। রাস্তাটি ভিআইপি রোডের মুখ থেকে শুরু হয়ে নিউ টাউনের পাশ দিয়ে সোজা অ্যাকোয়াটিকা চলে গিয়েছে। ১২সি/২ রুটের বাস এবং অসংখ্য গাড়ি প্রতি দিন এই রাস্তা দিয়েই যাতায়াত করে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই রাস্তায় ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণের কোনও ব্যবস্থাই নেই।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

রত্নাঙ্ক ভট্টাচার্য
শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০১৭ ১৫:০০
Share: Save:

এক দিকে মোড়ে মোড়ে ট্র্যাফিক সিগন্যাল, ট্র্যাফিক পুলিশ, সিভিক ভলান্টিয়ারের ভিড়। অন্য দিকে, ট্র্যাফিক সিগন্যাল দূর অস্ত্‌, সিভিক ভলান্টিয়ারেরও দেখা মেলে না। এ ছবি বিধাননগর পুরসভার দু’দিকের। সল্টলেকের দিকের ট্র্যাফিক ব্যবস্থা নিয়ে এই পুরসভার যতটা তৎপরতা নজরে পড়ে, কেষ্টপুরে কিন্তু তার কানাকড়িরও দেখা মেলে না বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।

কেষ্টপুরের ভিতরে যাতায়াতের প্রধান রাস্তা কেষ্টপুর মেন রোড। রাস্তাটি ভিআইপি রোডের মুখ থেকে শুরু হয়ে নিউ টাউনের পাশ দিয়ে সোজা অ্যাকোয়াটিকা চলে গিয়েছে। ১২সি/২ রুটের বাস এবং অসংখ্য গাড়ি প্রতি দিন এই রাস্তা দিয়েই যাতায়াত করে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই রাস্তায় ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণের কোনও ব্যবস্থাই নেই।

বাসিন্দা সমীরণ দত্ত বলেন, ‘‘ভিআইপি রোডের মুখে কয়েক জন পুলিশকর্মী ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণ করেন। আর দিনের ব্যস্ত সময়ে নিউ টাউনের মুখটায় কয়েক জন সিভিক ভলান্টিয়ারের দেখা মেলে। এ ছাড়া এই রাস্তায় আর কোনও পুলিশ চোখে পড়বে না।’’ রাস্তাটি দিয়ে দু’মুখী যান চলাচল করে। কয়েকটি জায়গায় রাস্তাটি বেশ সঙ্কীর্ণ। এই রাস্তায় বেশ কয়েকটি এমন বাঁক রয়েছে যে উল্টো দিক থেকে আসা গাড়ি দেখা যায় না। এই রাস্তায় নিয়মিত গাড়ি চালান বিভাস মণ্ডল। তাঁর কথায়, ‘‘বাঁক চেনা না থাকলে মুশকিল। সব সময় সতর্ক থাকতে হয়। হঠাৎ করে উল্টো দিক থেকে গাড়ি চলে এলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে। এই বাঁকগুলির আগে পুলিশের সতর্কীকরণ চিহ্ন দেওয়া উচিত।’’ কেষ্টপুর মেন রোডের উপরে বেশ কয়েকটি স্কুল রয়েছে। কিন্তু স্কুলগুলির সামনে দিয়ে গাড়ি ধীরে চালানোর কোনও সতর্কীকরণ বোর্ডও নজরে পড়ে না।

পাড়ার ভিতর থেকে বেশ কয়েকটি গলি এসে মিশেছে কেষ্টপুর মেন রোডে। কোনও ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণ না থাকায় ভিতর থেকে হঠাৎ করেই বেরিয়ে আসে গাড়ি। সতর্ক না থাকার জন্য অনেক সময়েই দুর্ঘটনা ঘটে। স্থানীয় বাসিন্দা প্রতাপ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সব মোড়ে না হলেও, বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে অন্তত ট্র্যাফিক পুলিশ বা সিভিক ভলান্টিয়ার রাখা উচিত। যেমন ঘোষপাড়ার মোড়, রবীন্দ্রপল্লির মোড় বা কেষ্টপুর মিশন বাজারের কাছে ট্র্যাফিক পুলিশ থাকা খুবই দরকার।’’

রাস্তাটি কেষ্টপুর মিশন বাজারের পাশ দিয়ে গিয়েছে। বাসিন্দাদের দাবি, এটিই কেষ্টপুর অঞ্চলের সবচেয়ে বড় বাজার। অভিযোগ, বাজারের ভিড় ও অনিয়ন্ত্রিত গাড়ি মিলে দিনের ব্যস্ত সময়ে ব্যাপক যানজট তৈরি হয়। বাজারের কাছেই বাড়ি স্বরূপ দাসের। তাঁর কথায়, ‘‘প্রতি দিন সকালে এখানে যানজট হয়। একের পর এক গাড়ি লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে যায়। স্কুলের গাড়িও সেই জটেই আটকে পড়ে। তা স্বাভাবিক হতেও যথেষ্ট সময় লেগে যায়।’’ যত্র তত্র পার্কিংয়ের অভিযোগও রয়েছে।

ব্যস্ত সময়ে একই ভাবে জটে আটকে যায় কেষ্টপুর মেন রোড থেকে নিউ টাউন যাওয়ার রাস্তাটিও। একেই সরু এই রাস্তা দিয়ে কোনওমতে দু’দিকের যান চলাচল করে। ব্যস্ত সময়ে গাড়ির সংখ্যা এত বেড়ে যায় যে যানজট তৈরি হয়। যার প্রভাব পড়ে কেষ্টপুর মেন রোডেও। তবে এখানে দিনের ব্যস্ত সময়ে সিভিক ভলান্টিয়ারের দেখা মেলে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়েরাই।

অভিযোগ প্রসঙ্গে বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (ট্র্যাফিক) সি সুধাকর রেড্ডির আশ্বাস, ‘‘এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দেখছি। প্রয়োজনে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE